ডিস্টিক্ট করেসপন্ডেন্ট; পিরোজপুর: আমি শ্যাষ অইয়া (হয়ে) গেছি, এ্যাহন (এখন) এনজিও’র টাহা (টাকা) দেবো ক্যামনে (কিভাবে)? এমন কথা বলে সোমবার (০৩ মে) সকালে বিলাপ করছিলেন পিরোজপুরের নাজিরপুরের সদর ইউনিয়নের আমতলা গ্রামের মৎস্য খামারী মো. সোহাগ খান। তার মাছের ঘেরে বিষ প্রয়োগ করে মাছ নিধন করায় তিনি এমন বিলাপ করছিলেন।
ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার ( ০২ মে) রাতের কোন এক সময়। ভুক্তভোগী ওই খামারি ওই গ্রামের মাহাবুবুর রহমান খানের ছেলে।
এ ঘটনায় সোমবার (০৩ মে) ওই ভুক্তভোগী বাদী হয়ে স্থাণীয় ৩ জনের নামে নাজিরপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলা সূত্রে জানা গেছে, পূর্ব শক্রতার জের ধরে পার্শ্ববর্তী রিয়াজ হওলাদার ওই খামারীকে বিভিন্নভাবে হুমকী ও গালাগাল করতো।
ঘটনার (০২ মে) রাত ৮টার দিকেও তারা তাকে মাছের ঘেরের কাছে এসে গালাগালি সহ হত্যার হুমমি দেয়।
ভুক্তভোগী ওই খামারী জানান, তিনি পেশায় একজন দিন মজুর ছিলেন। বাড়ির কাছের বিভিন্ন মানুষের জমি বছর চুক্তিতে টাকায় দিয়ে রাখেন। আর তাতে গত ৪ বছর ধরে মাছের খামার করেছেন। প্রথমে নিজের সামান্য কিছু পুঁজি দিয়ে এ খামার শুরু করেন। পরে স্থানীয় বিভিন্ন এনজিও থেকে প্রায় সাড়ে ৬লাখ টাকা ঋন নিয়ে এক একর ২১ শতাংশ জমিতে মাছ চাষ করেন।
সোমবার (০৩ মে) সকালে উঠে দেখেন ঘেরের বিভিন্ন স্থানে মাছ মরে ভেসে উঠছে। প্রথমে মাছ মরার কারন বুঝতে পারেন নি। পরে কয়েক জায়গায় দেখেন বিষাক্ত এক ধরনের ঔষধ দেয়া এবং সেসব জায়গা সাদা হয়ে রয়েছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য শেখ মো. মোস্তাফিজুর রহমান জানান, সকালে খবর পেয়ে সেখানে গিয়েছিলাম। গিয়ে দেখি কিছু মাছ মরে ভেসে উঠেছে। ভাটার কারনে ঘেরের পানি কমে যাওয়া কিছু মাছ বিভিন্ন স্থানে আটকা পড়ে মরে রয়েছে।
সোমবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ওই খামারির এক কর্মী ঘেরের মাছ কুরিয়ে তা অপসারন করতে কাজ করছেন। সেখানে মিনার কাপ, গ্রাস কাপ, রুই কাতল সহ বাইম মাছ পর্যন্ত মরে থাকতে দেখা গেছে।
এ ব্যাপারে জানতে থানা পুলিশের ইন্সপেক্টর (ওসি তদন্ত) মো. জাকারিয়া হোসেনের সাথে মুঠো ফোনে কথা হলে তিনি জানান, এ ব্যাপারে একটি অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্ত করে আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এইচ এম লাহেল মাহমুদ /ইবি টাইমস