মধ্যরাতে শেষ হচ্ছে নিষেধাজ্ঞাঃ মাছ শিকারের অপেক্ষায় জেলেরা

লালমোহন প্রতিনিধিঃ ইলিশ ধরার দুই মাসের নিষেধাজ্ঞার শেষে মাছ শিকারে নদীতে নামতে মুখিয়ে রয়েছে ভোলার লালমোহনের জেলেরা।

শুক্রবার দুপুরে সরেজমিনে উপজেলার ধলীগৌরনগর ইউনিয়নের মেঘনা নদী এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, নদীতে মাছ শিকারের জন্য সার্বিক প্রস্তুতি সেড়ে নিচ্ছেন জেলেরা। কেউ জাল বুনছেন, কেউ জাল বোনা শেষে তা ট্রলারে তুলছেন। কেউ ব্যস্ত ট্রলার মেরামত ও ইঞ্জিনের তেল সংগ্রহের কাজে। জাল বোনা আর ট্রলারে নিত্য প্রয়োজনীয় মালামাল তুলে দিতে সহযোগিতা করছেন পরিবারের নারী ও শিশুরা। দীর্ঘ দুই মাস নিষেধাজ্ঞার সময়ে একদিকে কর্মহীন, অপরদিকে এনজিওর কিস্তির চাপে পিষ্ট হয়ে কষ্টের দিনযাপন শেষে নদীতে নামার প্রস্তুতি। তাই সকলের মনে যেন আনন্দ উঁকি দিচ্ছে।

মেঘনার জেলে মুসলিম মাঝি বলেন, দুই মাস অর্ধাহারে-অনাহারে খুবই কষ্টে দিন কেটেছে। মানুষের কাছ থেকে ধারদেনা করে চলতে হয়েছে। তার উপর কিস্তির জন্য এনজিওর লোকের চাপও ছিল। এখন নিষেধাজ্ঞা শেষ, নদীতে মাছ ধরা পড়লে আশা করি ধারদেনা পুষিয়ে নিত পারবো।

জেলে মাকছুদ, নুরনবী, নাছির মিয়া বলেন, আগেই জাল বোনা ও নৌকা মেরামতের কাজ শেষ করে রেখেছি। এখন নদীতে নামবো, যদি আল্লাহ তায়ালা ভাগ্যে ভাল রাখেন তো মাছ শিকার করে ধারদেনা মেটাবো।

ধলীগৌরনগর ইউনিয়নের মেঘনা নদী বেষ্টিত ৮নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য নুরুল ইসলাম মৌলভী বলেন, এ এলাকার ৯০ভাগ মানুষের জীবিকা নির্বাহ করে মাছ শিকারের মাধ্যমে। আবার এদের বেশিরভাগই বিভিন্ন এনজিও থেকে কিস্তি নেয়া। নিষেধাজ্ঞার সময়ে কিস্তি না দেয়া সংক্রান্ত অনেক ফয়সালা করতে হয়েছে। তাই ভবিষয়তে নিসেধাজ্ঞার সময়ে জেলেদের এনজিওর কিস্তি বন্ধ রাখার জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানান তিনি।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা (ভোলা) এস এম আজহারুল ইসলাম জানান, ইলিশ রক্ষায় অভয়াশ্রমের নিষেধাজ্ঞা সফল হয়েছে। ফলে মাছের উৎপাদন বাড়বে এবং এতে জেলেরাই বেশি লাভবান হবে। জাটকা সংরক্ষণ অভিযান চলাকালে প্রথম ২ কিস্তিতে (ফেব্রুয়ারি- মার্চ) জেলার ৭৮ হাজার  জেলেকে ৪০ কেজি করে খাদ্য সহায়তা দেয়া হয়েছে। আর এপ্রিল- মে দুই মাসের জন্য  ৮৬ হাজার জেলের জন্য  ৪০ কেজি করে খাদ্য সহায়তা বরাদ্দ হলেও তা বিতরণ শুরু হয়নি।

আলাম সেন্টু/ ইবি টাইমস

EuroBanglaTimes

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Translate »