ভোলায় ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে তরমুজ, প্রশাসনের অভিযানেও কমছে না দাম

ভোলা প্রতিনিধিঃ ভোলায় তরমুজের বাম্পার ফলন হলেও চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে মৈসুমী রসালো এ ফলটি। বর্তমানে বাজারে প্রতিটি তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ৪০০ টাকা দরে। উপকূলীয় এ দ্বীপ জেলা ভোলার অধিকাংশ মানুষ এত চওড়া দামে মৌসুমি এ রসালো ফল কিনতে চাচ্ছে না। অধিক মুনাফা লাভের আশায় বিক্রেতারা বাজারে চওড়া দামে তরমুজ বিক্রি করায় রীতিমতো ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাধারণত ক্রেতারা। তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও তাদের এ ক্ষুব্দ প্রতিক্রিয়া তুলে ধরেন। ফলে মাঠে নেমেছেন প্রশাসনও। অধিক মুনাফা লাভের আশায় বিক্রেতারা বাজারে চওড়া দামে তরমুজ বিক্রি করায় ভোলা সদর উপজেলার বাজারে অভিযান চালায় ভ্রাম্যমান আদালত।

এ সময় তরমুজ ব্যবসায়ীরা তাদের মূল্য তালিকা দেখাতে না পারায় আদালতের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট আকিব ওসমান ৩ তরমুজ বিক্রেতার কাছ থেকে ৬ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন। ভ্রাম্যমান আদালতের ওই অভিযানের পরেও প্রভাব পড়েনি তরমুজের ওপরে। দাম কমেনি তরমুজের। বিক্রেতারা বেশী দামেই বিক্রি করছেন মৌসুমী এ ফলটি। সদর উপজেলার কাঁচা বাজারে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, মৌসুমী এ ফলটি কিনতে অনেক ক্রেতারাই ভিড় করছেন তরমুজ বিক্রেতাদের দোকানে। তবে, তরমুজের দাম বেশী হাঁকায় অধিকাংশ ক্রেতাকেই তরমুজ না কিনে খালি হাতে বাড়ি চলে যেতে দেখা গেছে।

মাঝারি সাইজের প্রতিটি তরমুজ বিক্রি হচ্ছে ৪০০ টাকা দরে। এ সময় অনেক ক্রেতাকে ৪০০ টাকার তরমুজ ২৫০ টাকা থেকে ২৭০ টাকা পর্যন্ত দাম দিতে রাজি হয়েছেন। কিন্তু, বিক্রেতা ৪০০ টাকার কম দামে তরমুজ বিক্রি করতে নারাজ। তাই বাধ্য হয়ে বেশ কয়েক জন ক্রেতা তরমুজ না কিনেই খালি হাতে বাড়ি চলে গেছেন।

জাহাঙ্গীর সিকদার নামে এক ক্রেতা ৪০০ টাকার তরমুজ ৩৫০ টাকায় কিনেছেন। এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে ক্রেতা জাহাঙ্গীর সিকদার বলেন, তরমুজের সিজন শেষ হয়ে যাচ্ছে। তাই, বেশী দাম হলেও বছরের মৌসুমী রসালো ফল কিনে নিয়েছি। এ ব্যাপারে বিক্রেতা মোঃ সুমন বলেন, আমরা গড়ে একটা তরমুজ ২৫০ টাকা দরে খুলনা থেকে কিনে আনছি। পথে ট্রলার ভাড়াসহ যাতায়াত খরচ অনেক বেশী পড়ে যায়।

তরমুজের আড়তদার ইব্রাহিম বলেন, খুলনা থেকে তরমুজ আনতে শুধুমাত্র ট্রলার ভাড়াই দিতে হয়েছে ৪৫ হাজার টাকা। তাই, ৪০০ টাকা দরে তরমুজ বিক্রি না করলে আমাদের পোষায় না। মোঃ বিপ্লব নামের আরেক ক্রেতা বলেন, ৩৫০ টাকার একটি ছোট সাইজের তরমুজের দাম হাঁকিেয়ছেন ৩৫০ টাকা। আমি ২৭০ টাকা দিয়ে এটি কিনেছি। তিনি আরও বলেন, শুনেছি এ বছর তরমুজের বাম্পার ফলন হয়েছে। কিন্তু দাম তো কমেনি। নুরে আলম নামের আরেক তরমুজ বিক্রেতা বলেন, এ বছর তরমুজের দামের ইতিহাস সৃষ্টি হয়েছে। এতো বেশী দামে তরমুজ বেচাকেনা এর আগে কোন বছর হয়নি।

তিনি আরও বলেন, ১০০ তরমুজ আমরা ৫৬ ০০০ টাকায় কিনে আনছি। তাই, বাজারে ৪০০ টাকা দরে বিক্রি করতে হচ্ছে। মূল্য তালিকা না দেখাতে পারায় তার কাছ থেকে ২০০০ টাকা জরিমানা আদায় করেন ভ্রাম্যমান আদালত। এ ব্যাপারে কনজ্যুমার এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)ভোলা শাখার সেক্রেটারি মুহাম্মাদ সুলাইমান জানান, ভোলায় অধিক মুনাফা লাভের আশায় ব্যবসায়ীরা বেশী দামে তরমুজ বিক্রি করছেন। এ বিষয়ে প্রশাসনের নজরদারি বাড়াতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

সাব্বির আলম বাবু /ইবি টাইমস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit exceeded. Please complete the captcha once again.

Translate »