বাংলাদেশে রাশিয়া ও চীনের করোনার প্রতিষেধক টিকা উৎপাদনে মন্ত্রিসভার অনুমোদন

রাশিয়ার স্পুটনিক ও চীনের সিনোফার্মের করোনাভাইরাসের টিকা বাংলাদেশে উৎপাদনের সিদ্ধান্ত

অন লাইন ডেস্কঃ বুধবার ২৮ এপ্রিল দুপুরে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অর্থনৈতিক বিষয়ক সংক্রান্ত ও সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির এক ভার্চুয়াল বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত হয়। পরে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. শাহিদা আক্তার বলেন, ‘এখন শুধু নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। টিকা উৎপাদনে টাকার পরিমাণ ক্রয় কমিটিতে প্রস্তাব আসলে জানা যাবে।’ তিনি বলেন, কারিগরি ও পরামর্শক কমিটির সঙ্গে আলোচনা হয়েছে এবং নীতিনির্ধারকরাও আলোচনা করেছেন। তারপরই এ বিষয়ে সম্মতি দেওয়া হয়েছে। খুব শিগগিরই কার্যক্রম শুরু হবে।

বাংলাদেশের কোন কোম্পানির মাধ্যমে উৎপাদন হবে সে বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সেটা আলোচনায় উঠে আসেনি। তবে বাংলাদেশের কোম্পানিগুলো উৎপাদনে সক্ষম, সেটা বলা হয়েছে। এই টিকা উৎপাদনের জন্য যে টাকা খরচ হবে সেটা পরবর্তী অর্থনৈতিক কমিটিতে অনুমোদন দেয়া হবে। চীনও সিনোভ্যাক্স উৎপাদনের বিষয়ে আলাপ করেছে। বাংলাদেশ ও চীন দুপক্ষই এটি উৎপাদনে একমত হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব বাংলাদেশে উৎপাদন হবে।’

এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ধীরে ধীরে উন্নয়ন হচ্ছে, এটা আমাদের সবাইকে স্বীকার করতে হবে। আজকে দুটি প্রস্তাব ছিল, একটি হলো টিকা কেনা। আমাদের বিকল্প সোর্স থেকেও চেষ্টা করতে হবে। তার মানে এই নয় আমাদের প্রথম যে সোর্স সেটি বাতিল হয়ে গেছে। তবে আমাদের মাথায় সবসময় বিকল্প রাখতে হবে। তাই বিকল্প হিসেবে রাশিয়ার টিকা স্পুটনিক-ভি ও চীনের ‘সিনোভ্যাক’ এর জন্য দুটি দেশের সংশ্লিষ্ট সংস্থা যারা আছে, তাদের সঙ্গে আমাদের আলোচনা চলছে।’

বাংলাদেশে এই টিকা উৎপাদনের কোনো সুযোগ আছে কি না- জানতে চাইলে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মাহবুবুর রহমান সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, “বিষয়টি নিয়ে কথা বার্তা চলছে। বাংলাদেশে পপুলার, ইনসেপ্টা এবং হেলথকেয়ার টিকা তৈরি করতে পারে। ইনসেপ্টা রাশিয়ার সঙ্গে এরইমধ্যে কথাবার্তা শুরু করেছে।

“তারা বলেছে আমাদের দেশে টিকা তৈরি করা যায় কিনা। টেকনোলজি ট্রান্সফারও হতে পারে, আবার বাল্ক এনে ফিলার ফিনিশও হতে পারে। কিনে এনেও হতে পারে। ইনশাআল্লাহ আমাদের দেশেই এই ভ্যাকসিন তৈরি হবে।”

ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে অক্সফোর্ড -অ্যাস্ট্রেজেনেকার টিকার সরবরাহ সঙ্কটে টিকাদান কার্যক্রম নিয়ে জটিলতার মধ্যে আলোচনায় আসে রুশ টিকা ‘স্পুৎনিক-ভি’। একই সঙ্গে টিকা পেতে চীনা একটি উদ্যোগেও যোগ দেওয়ার কথা জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন।

গতকালের এই ভার্চুয়াল বৈঠকে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে সেন্ট্রাল মেডিকেল স্টোরস ডিপোর (সিএমএসডি) মাধ্যমে আরটি-পিসিআর টেস্ট কিট এবং পিসিআর ল্যাব কনজ্যুমেবলস বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে কেনার নীতিগত অনুমোদনও দেওয়া হয়। একই প্রতিষ্ঠানের জন্য বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী ও চিকিৎসা সরঞ্জাম কেনারও নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

বিগত দিনগুলোতে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতি অনুসরণ করতে গিয়ে মাস্ক কেলেঙ্কারিসহ অন্যান্য নিম্নমানের সামগ্রী কেনার বিষয়টি উল্লেখ করে আবারও কেন একই পদ্ধতি অনুসরণ করা হচ্ছে তা জানতে চান একজন সাংবাদিক। উত্তরে অর্থমন্ত্রী বলেন, “আমরা নিয়ম নীতি অনুসরণ করেই অনুমোদন দেই। কেনাকাটার সময় যদি কোনো ব্যত্যয় থাকে মিসম্যাচ থাকে, তারা যদি কোয়ালিটি এনসিওর করতে না পারে সেটা তাদের ব্যাপার।“

কবির আহমেদ /ইবি টাইমস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit exceeded. Please complete the captcha once again.

Translate »