করোনার বিধিনিষেধ নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করতে বড় বড় শহরে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে
আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ পাকিস্তান থেকে আরব নিউজ জানিয়েছেন,মহামারী শুরু হওয়ার পর থেকে পাকিস্তানে বুধবার ২৮ এপ্রিল সবচেয়ে বেশি মানুষ কোভিড -১৯ আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। পাকিস্তান সরকারের মহামারী প্রতিক্রিয়া সংস্থার সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে আরব নিউজ জানান, বুধবার দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে একদিনেই ২০১ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। এই ২০১ জনের মধ্যে ৮৪ জন আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
পাকিস্তানের জাতীয় কমান্ড অ্যান্ড অপারেশন সেন্টার (এনসিওসি) – ফেডারেল সরকারের কেন্দ্রীয় সংস্থা বুধবার তাদের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে জানান,গত ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে মহামারীটি শুরুর পর থেকে পাকিস্তানে গত ২৪ ঘন্টার মধ্যে সবচেয়ে বেশি লোক মারা গেছেন। গত ২৪ ঘন্টার মধ্যে পাকিস্তানে নতুন করে একদিনের সর্বোচ্চ সংখ্যক করোনায় সংক্রমিত শনাক্ত হয়েছেন ৫,২৯২ জন। পাকিস্তানে এই পর্যন্ত করোনায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৮ লাখ ১০ হাজার ২৩১ জন এবং এই পর্যন্ত মৃত্যুবরণ করেছেন মোট ১৭,৫৩০ জন। পাকিস্তানে করোনা থেকে এই পর্যন্ত আরোগ্য লাভ করেছেন ৭,০৪,৪৯৪ জন। বর্তমানে করোনায় আক্রান্ত সক্রিয় রোগীর সংখ্যা ৮৮,২০৭ জন। এর মধ্যে ক্রিটিক্যাল অবস্থার মধ্যে আছেন ৫,২১৫ জন।
পাকিস্তানের পরিকল্পনামন্ত্রী আসাদ ওমর স্থানীয় এক সম্প্রচার কেন্দ্রে এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন যে,পাকিস্তানে এখন প্রতিদিন ভ্যাকসিন প্রদানের পরিমাণ এক লাখ ডোজে পৌঁছিয়াছে।
এদিকে পাকিস্তানের লাহোর থেকে ভয়েস অফ আমেরিকা জানিয়েছেন যে,দেশে নতুন করে করোনার সংক্রমণ ও মৃত্যু বেড়ে যাওয়ার ফলে সরকার লাহোর সহ দেশের বড় বড় শহরে সেনাবাহিনী নামানো হয়েছে। ভোয়া (VOA) আরও জানায়, বুধবার লাহোরে কোভিড -১৯ এর বিস্তার রোধে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসাবে আরোপিত নতুন বিধিনিষেধ প্রয়োগ করতে সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যদের রাস্তায় টহল দিতে দেখা গেছে।
সেনাবাহিনী জনগণের রাস্তায় চলাচলের সময় মাস্ক পড়া,সামাজিক দূরত্ব এবং সন্ধ্যা ৬ টার পরে অযৌক্তিক ব্যবসায়ের অবসানসহ করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়া নিয়ন্ত্রণে বেসামরিক কর্তৃপক্ষকে সহায়তা করছেন।মহামারী শুরুর পর সাম্প্রতিক দিনগুলিতে দেশটি সর্বোচ্চ দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা রেকর্ড করার পরে
পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকার দেশে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপের সিদ্ধান্ত নেয়। পাকিস্তানের স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলেন দেশের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা তার ব্রেকিং পয়েন্টের কাছাকাছি পৌঁছেছে। কাজেই এখনই যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে সংক্রমণের বিস্তার নিয়ন্ত্রণের বাহিরে চলে যেতে পারে।
পাকিস্তানের ফেডারাল সরকার অন্যান্য দেশের মত সম্পূর্ণ দেশ লকডাউন করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। সরকার বলেছে,এই ধরনের সম্পূর্ণ লকডাউন করলে দৈনিক কর্মজীবি মানুষের আয়ের উপর ভীষণ প্রভাব পড়বে। যার ফলে অধিকাংশ সাধারণ জনগণের জীবন আরও বিপন্ন হতে পারে।
সরকারের নীতিনির্ধারকরা জানিয়েছেন যে,সম্পূর্ণ লকডাউন ঘোষণা না করে উপদ্রুত এলাকা বা শহরে মানুষের চলাচলে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
কবির আহমেদ /ইবি টাইমস