করোনা পরিস্থিতিজনিত কারণে আড়ম্ভর আয়োজন ছাড়াই বোরো ধান কর্তন শুরু

ঝালকাঠি প্রতিনিধি : করোনা পরিস্থিতিজনিত কারণে আনুষ্ঠানিক আড়ম্ভর আয়োজন ছাড়াই এ বছর ঝালকাঠি জেলায় অনাড়ম্ভরভাবে এ বছরের বোরো মৌসুমের ধান কর্তন শুরু হয়েছে।

এ বছর জেলায় আবাদের পরিমান দেড় হাজার একর বেড়ে সাড়ে ১১ হাজার হেক্টরে আবাদ হয়েছে। জেলার ৪টি উপজেলার মধ্যে ঝালকাঠি সদর ও নলছিটি উপজেলা বোরো প্রধান এলাকা হিসেবে এই দুই উপজেলাই আবাদের পরিমান সিংহভাগ। জেলায় এ বছর প্রাকৃতিক কোন দুর্যোগ বা দুর্বিপাক না থাকায় প্রকৃতির দান হিসেবে দু’হাত ভরে কৃষকরা বাম্পার ফলন ঘরে তুলছে।

এ পর্যন্ত কর্তন থেকে উচ্চ ফলনশীল জাতের আবাদ থেকে হেক্টর প্রতি সর্বাধিক ৭ মেট্রিকটন এবং হাইব্রীড জাত থেকে সর্বাধিক ৮ মেট্রিকটন ধানের ফলন হয়েছে। জানুয়ারি মাসের ১ম সপ্তাহ থেকে বীজ রোপন করে এপ্রিল মাসের শেষে এসে ধান কর্তন করছে কৃষকরা। জেলায় বিনা-১০, ব্রি-২৮,ব্রি-২৯, ব্রি-৪৭,ব্রি-৫৮, ব্রি-৬৭, ব্রি-৬৯, বি-৭৪, ব্রি-৮৪ ও ব্রি-৮৯ এবং হাইব্রীড জাতের মধ্যে ব্রি-৩ ও ৫, দুর্বার, তেজগোল্ড, সাথী, ময়না ও এসিআই এর রাজকুমার জাতের আবাদ হয়েছে।

এ বছর করোনা পরিস্থিতিজনিত কারণে বড় বড় শহর থেকে কাজ হারিয়ে গ্রামের বাড়িতে আসা অনেকেই নতুন করে বোরো আবাদে নেমেছে। বাজারে এ বছর এখন পর্যন্ত ধানের দাম ভাল থাকায় বাম্পার ফলন পেয়ে কৃষকদের মধ্যে সন্তোষ্টি রয়েছে। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে দাবী করা হয়েছে এই চাষাবাদে করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও কৃষকদের সাথে থেকে জেলায় আবাদ সম্প্রসারণ ও বাম্পার ফলন পেয়ে তাদের আত্মতৃপ্ত হয়েছেন।

ঝালকাঠি সদর উপজেলায় কেওরা ইউনিয়নের সংগ্রামনীল গ্রামের কৃষক খলিলুর রহমান তালুকদার ৬ বছর পূর্বে রেলওয়ে বিভাগ থেকে চাকুরি থেকে অবসর নিয়েছেন। তিনি তার এই গ্রামে নিজ বাড়িতে এসে ১ একর জমিতে ১ম বারের মত বিনা-১০ জাতের বোরো ধানের আবাদ করেছেন। ধানের ফলন বাম্পার ফলন পেয়ে তিনি আত্মতৃপ্তি পেয়েছেন বলে জানান।

একই গ্রামের কৃষক মনির হাওলাদার কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে ১ বিঘায় কৃষি প্রদর্শনী সহায়তা সহ সাড়ে ৩ একরে বি-১০ জাতের বাম্পার ফলন পেয়েছেন। তিনি জানান, এ বছর চাষাবাদে কোনো ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ ছিল না।

ধান কর্তনকালে এই এলাকার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা নাজমুন্নাহার সহ উপজেলা কৃষি অফিসার মো: রিফাত সিকদার উপস্থিত ছিলেন। কৃষিবিদ রিফাত সিকদার জানান, এ বছর ধানের ফলন ভাল হয়েছে। উচ্চ ফলনশীল জাত থেকে হেক্টর প্রতি ৬-৭ মেট্রিকটন এবং হাইব্রীড জাত থেকে সাড়ে ৭ থেকে ৮ মেট্রিকটন পর্যন্ত ধানের ফলন হয়েছে। ঝালকাঠি সদর উপজেলাই আবাদ সম্প্রসারিত হয়ে এ বছর ৫ হাজার ২শ ৫৫ হেক্টরে বোরো আবাদ হয়েছে।

বাধন রায়/ ইবি টাইমস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit exceeded. Please complete the captcha once again.

Translate »