চরফ্যাসন(ভোলা): ভোলার চরফ্যাসনে হাসপাতালে আয়া ও পরিচ্ছন্নতাকর্মীসহ বাগানের মালি দিয়ে চলছে স্বাস্থ্য সেবা।
৫০ শয্যার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি দীর্ঘদিন জরাজীর্ন অবস্থায় থাকলেও সম্প্রতি সাবেক উপমন্ত্রী আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব এমপির একান্ত প্রচেস্টায় ১০০ শয্যায় উন্নিত হয়েছে। তবে দীর্ঘদিনেও চালু হয়নি ১০০ শয্যার নব নির্মিত এই হাসপাতাল। সেবা চলছে ৫০ শয্যারও কম জনবল দিয়ে। হাসপাতালের আসবাবপত্র ও জনবল সংকটসহ নানান অব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে স্বাস্থ্য সেবা চললেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের চোখে পড়ছে না এসব অনিয়মের।
সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, হাসপাতালের নারী,শিশুসহ আবাল বৃদ্ধদের বিভিন্ন রকমের স্বাস্থ্য সেবা দিচ্ছে চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীরা। এসব কর্মচারীগণের কাজের নির্দিষ্ট পদ থাকলেও পদানুয়ায়ী কর্মের চেয়ে সেবক ও সেবিকাদের কর্ম নিয়েই ব্যস্ত থাকে তারা। এছাড়াও এসব কাজের জন্য তাদের দিতে হয় ফি। সরকারি স্বাস্থ্য সেবা পেতে গিয়ে অনঅভিজ্ঞ চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের দেয়া স্বাস্থ্য সেবায় ভোগান্তী পোহাতে হচ্ছে উপজেলার ২০ টি ইউনিয়নের থেকে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের।
অনুসন্ধানে দেখা যায়,পরিচ্ছন্নতা কর্মী ওয়ার্ডবয়, সেবিকাদের সহকারি (আয়া) পরিচ্ছন্নতা কর্মী এবং মালি ভর্তি হওয়া রোগীদের ইনজেকশন পুশ,স্যালাইন করানোসহ অন্যান্য স্বাস্থ্য সেবা এবং বহির্বিভাগের টিকিট কাউন্টার ও জরুরি বিভাগে কাটা-ছেড়ার কাজ করতেও দেখা যায়। এছাড়াও চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের প্রতিযোগীতায় হাসপাতালে আসা রোগীদের সেবা নিতে হচ্ছে বলে একাধীক রোগী জানিয়েছেন।
হাসপতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা জানান, হাসপাতালে চিকিৎসক ও সেবক সেবিকা সংকটের সুযোগ কাজে লাগিয়ে পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা ভর্তি হওয়া রোগীসহ চিকিৎসা নিতে আসা অন্যান্য রোগীদের কাছ থেকে অবৈধভাবে হাতিয়ে নিচ্ছেন হাজার-হাজার টাকা। এতে বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে রোগী ও তাদের স্বজনদের।
তবে হাসপাতালের সেবিকারা বলেন, অনেক সময় রোগীর চাপ থাকলে তারা রোগীদের সহযোগীতা করার চেষ্টা করেন। একাধীক সেবিকা জানান স্থানীয় চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের কিছু বলা যায়না তাদের খারাপ ব্যবহারে এক রকম আমরা জিম্মি।
হাসপাতালের পরিচ্ছন্নতাকর্মী ওয়ার্ডবয় মোঃ হোসেন জানান,অনেক সময় কিছু জটিল কিছু রোগীর মলমূত্রসহ নানান রকমের সমস্যা থাকে এসব রোগীদের মুত্র ব্যাগ পোড়ানোসহ মলত্যাগের ব্যবস্থা করার জন্য সেবক বা সেবিকাদের সহযোগীতা করে দেই বিনিময়ে তারা খুশি হয়ে বখশিশ দিলে তা নেই।
চরফ্যাসন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার মাহবুব কবির বলেন, হাসপাতালে আমাদের পর্যাপ্ত জনবল না থাকায় দৈনিক ১৫০ খেকে ২৫০ জন রোগীকে সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার শোভন বশাক বলেন, তারা কেনোলা লাগিয়েছে তবে ডায়রিয়ার প্রকোপ থাকায় এবং হাসপাতালে জনবল সংকটে রোগীদেরকে আয়া কিংবা ওয়ার্ডবয়রা স্বাস্থ্য সেবায় রোগীদের সহযোগীতা করেছে। তাদেরকে ডেকে সাবধান করে দেয়া হয়েছে। টাকা নিয়ে এরকম সেবা দেয়ার বিষয়ে কেউ অভিযোগ দিলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জামাল মোল্লা /ইবি টাইমস