বোরহানউদ্দিনে ৯০ টাকার ডায়রিয়ার স্যালাইন ৩শ’ টাকায় বিক্রি

ভোলা প্রতিনিধি : ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার ৫০ শয্যা হাসপাতালে ডায়রিয়া রোগিদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছে ডাক্তার ও নার্সরা। গড়ে প্রতিদিন ৯০ থেকে ১০০ জন করে ডায়রিয়া রোগি ভর্তি হচ্ছে। গত এক সপ্তাহে ডায়রিয়া রোগি ভর্তি হয়েছে ৫শ’ জন। এ হাসপাতালে ডায়রিয়া স্যালাইন না থাকায় বাধ্য হয়ে বাহির হতে ডায়রিয়া স্যালাইন কিনতে হচ্ছে রোগিদের। আর এ সুযোগে ফার্মেসী গুলোতে নানা অজুহাতে ৯০ টাকার সেলাইন ৩ শত টাকা হতে সাড়ে ৩ শত টাকা পর্যন্ত হরহামশে বিক্রি করার অভিযোগ উঠছে। রোগিরা বাধ্যই হয়েই বেশি দামে স্যালাইন ক্রয় করে চিকিৎসা সেবা নিচ্ছে। এছাড়া বেডের চেয়ে রোগির সংখ্যা অধিক হওয়ায় এ সকল ডায়রিয়া রোগিদের ঠাই হচ্ছে হাসপাতালের ফ্লোরে। রোগিদের চাপ বেশি থাকায় চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছে নার্স ও ডাক্তারা।

উপজেলার হাকিমুদ্দিন থেকে আসা ডায়রিয়া রোগি’র স্বজন মো: মোফাজ্জল হোসেন জানান, সরকারি হাসপাতালে ডায়রিয়া স্যালাইন না থাকায় হাসপাতালের সামনের ফার্মেসীতে সেলাইন কিনতে যাই সেখানে আমার কাছ হতে সাড়ে ৩শ টাকা চায়। সে ফার্মেসী আলা বলেন, আমার কাছেও ডায়রিয়া স্যালাইন নাই আপনি টাকা দিলে বাহির হতে কিনে দিবো। যখনই ৩শত টাকা দিলাম তখনই ওই ফার্মেসী’র ভিতর হতে ডায়রিয়া স্যালাইন বের করে দিল। এরকম বাধ্য হয়ে বিভিন্ন ফার্মেসী হতে ৫টি ডায়রিয়া স্যালাইন কিনছি। এদের দেখার কেউ নেই। উপজেলার বড়মানিকা ৫নং ওয়ার্ড হতে আসা ডায়রিয়া রোগির স্বজন আছমা বেগম বলেন, আমার ছেলেকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। ডায়রিয়া’র স্যালাইন সরকারি হাসপাতালে না থাকায় বাহির হতে ৯০ টাকার ডায়রিয়া স্যালাইন সাড়ে ৩শত টাকায় কিনতে হচ্ছে। ছেলেকে নিয়ে ফ্লোরে শুয়ে আছি বেডও পাইনি।

ফার্মেসী’র মালিক নাম না প্রকাশের শর্তে জানান, ডায়রিয়া স্যালাইন আমি ৯০ টাকাই বিক্রি করি। কিন্তু কিছু ফার্মেসী ব্যবসায়ীরা ৩শ’ হতে সাড়ে ৩শ’ টাকা বিক্রি করছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জোড়ালো দাবী করছি।

বোরহানউদ্দিন হাসপাতালের আরএমও ডাক্তার মো. সাজ্জাদ হোসেন জানান, গড়ে প্রতিদিন ৯০ হতে ১০০ জন ডায়রিয়া রোগি ভর্তি হচ্ছে। কোন কোন দিন ১২০ জন ডায়রিয়া রোগি ভর্তি হচ্ছে। গত দুই সপ্তাহে প্রায় ৭শ’র উপরে ডায়রিয়া রোগিকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। ৬ মাসের ডায়রিয়া স্যালাইন ১ মাসেই শেষ হয়ে গেছে। গত শুক্রবার হতে ডায়রিয়া’র স্যালাইন নাই। ডায়রিয়া রোগি’র চাপে নার্স ও ডাক্তাররা হিমশিম খাচ্ছে। এ হাসপাতালে বেডের সংখ্যা ৫০টি কিন্তু রোগি ভর্তি হচ্ছে ১শ’ হতে দেড়শ’ জন। তাই ফ্লোরে কাগজ দিয়েছি তারা রোগি নিয়ে থাকছেন।

বোরহানউদ্দিন হাসপাতালের টিএস ডা. তপতী চৌধুরী জানান, আবহাওয়া জনিত কারনে ডায়রিয়া রোগিদের সংখ্যা ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। গত শুক্রবার হতে ডায়রিয়ার স্যালাইন নেই। উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করেছি। এখনও ডায়রিয়া স্যালাইন পাইনি। এ সুযোগে কিছু অসাধু ব্যবসায়ীরা বেশি দামে স্যালাইন বিক্রি করছে। তিনি আরোও জানান, নার্স ও ডাক্তাররা রোগিদের সঠিক ভাবে চিকিৎসা সেবা দিচ্ছে।

সাব্বির আলম বাবু/ইবি টাইমস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit exceeded. Please complete the captcha once again.

Translate »