হবিগঞ্জ প্রতিনিধি : হবিগঞ্জের শায়েস্থাগঞ্জ উপজেলার সুতাং বাজারের সুতাং ব্রীজের নির্মাণ কাজ পুরোদমে শুরু হয়েছে। সম্প্রতি পুরাতন ব্রীজ পুরোটাই ভেংগে ফেলা হয়েছে। এরই মধ্যে এক্সেভেটর দিয়ে মাটি কাটা চলছে। সুতাং ব্রীজ সংলগ্ন ঋষি সম্প্রদায়ের বেশ কয়েকটি পরিবার এখানে দীর্ঘবছর যাবত বসবাস করে আসছে। অপরিকল্পিত ভাবে মাটি কাটার ফলে হুমকিতে রয়েছে রবিদাস পরিবারের বসতবাড়িগুলো।
এ অবস্থায় পরিবারের প্রতিটি সদস্যদেরকে নিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঘরে বসবাস করতে হচ্ছে রবিদাশ পাড়ার সংখ্যালঘু পরিবারগুলো ।
সরেজমিন গেলে জানা যায়, শতাধিক বছর ধরে সুতাং ব্রিজের উভয় পাশে বসবাস করে আসছে তিনটি রবিদাস পরিবার।
এরমধ্যে ব্রিজের পশ্চিম দিকে অবস্থিত একটি বসতঘরে একই পরিবারের ৭ জন সদস্য বসবাস করে আসছে। সোমবার ব্রিজের নির্মাণ কাজের প্রয়োজনে এক্সভেটর দিয়ে অপরিকল্পিতভাবে মাটি কাটা শুরু করে। এ অবস্থায় পরিবারটি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছে। ধারণা করা হচ্ছে, যেকোন সময় তাদের বসতঘরটি ভেঙ্গে যেতে পারে।
ঋসি পরিবারের রবিদাস জানান, অপরিকল্পিতভাবে মাটি কেটে তাদের লেট্রিন ও রান্না করার স্থান বিলীন করে দেওয়া হয়েছে। বসতঘরটিও ভেঙ্গে যাওয়ার উপক্রম। তারা ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছেন। এর আগে ও একটি প্রভাবশালী মহল ঋসি পরিবারকে তাড়িয়ে দেয়ার জন্য দীর্ঘদিন পায়তারা করে নানানভাবে তাদের ক্ষতি করেছে। স্থানীয় কয়েকজন মাতালরা এই পরিবারের উপর জুলুম নির্যাতন ও করেছে। সর্বশেষ এই পরিবারের একজনকে ধর্ষণ করে হত্যা ও করেছিল স্থানীয় একজন মাতাল, তিনি এখন হত্যা মামলায় কারাগারে আছেন।
এ ব্যাপারে কথা হয়, নূরপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ মুখলিছ মিয়ার সাথে, তিনি জানান, ব্রিজের পাশে শত বছরের বসবাস তিনটি রবিদাস পরিবারের। অপরিকল্পিতভাবে মাটি কাটায় ব্রিজের পশ্চিম দিকের রবিদাস পরিবারটি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছে। এ তথ্য জানার পর আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে এর প্রতিবাদ করেছি। তিনি বলেন, ব্রিজ নির্মাণ হোক আমরা সবাই চাই। তবে পরিকল্পনা মাফিক কাজ করলে এ অবস্থা সৃষ্টি হওয়ার কথা নয়। মানবাধিকার লংগন করে তাদেরকে উচ্ছেদ করার পায়তারা চলছে, এইটি হতে দেয়া যাবেনা।
এ বিষয়ে ব্রিজের ঠিকাদার গোলাম ফারুক জানান, ব্রিজের নির্মাণ কাজের জন্য নিয়ম মেনে মাটি কাটা হচ্ছে। এখানে কোন প্রকারের অনিয়ম করা হয়নি। আমি কারো ক্ষতি করতে চাই না।
ইতিমধ্যেই এই ঠিকাদারের বিরুদ্ধে সুতাং ব্রীজের পুরাতন রড নিলামে না তুলে নিজেই বিক্রি করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে এই ঠিকাদারের বিরুদ্ধে।
এই বিষয়টি নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যকরতার সৃষ্টি হয়েছে। এ ব্যাপারে শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিনহাজুল ইসলামের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।
মোতাব্বির হোসেন কাজল /ইবি টাইমস