ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট,পিরোজপুর: পিরোজপুরের ইন্দুরকানীতে গ্রাহকদের অর্ধকোটিরও বেশি টাকা নিয়ে একটি এনজিও উধাও হয়েছে। উধাও হওয়া ওই এনজিও’টির নাম ‘সকস বাংলাদেশ’।
করোনা কালীন সাধারন ছুটির মধ্যে হঠাৎ এনজিওটি উধাও হয়েছে। স্থাণীয় ভুক্তভোগীদের দেয়া তথ্য সূত্রে জানা গেছে, এনজিওটি উপজেলার বাইপাস সড়কের পাশে একটি ভাড়া করা ভবনে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে গত প্রায় ২ মাস ধরে উপজেলার সদর ও পত্তাশী এ দুই ইউনিয়ন ছাড়াও পার্শবর্তী এলাকায় ঘুরে গ্রাহক সংগ্রহ করে। ওই সব গ্রাহকদের ঋন দেয়ার কথা বলে ঋণের বিপরীতে ১হাজার টাকা থেকে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত জামানত সংগ্রহ করে।
এরপর করোনাকালীন লক ডাউন ও সাধারন ছুটির মধ্যে এনজিওটি রাতের আঁধারে পালিয়ে যায়। এনজিওটি গত মার্চ মাসের শুরুতে তাদের ঋনের জন্য জামানতের টাকা গ্রহনের কাজ শুরু করেন।
স্থানীয় ভুক্তভোগী গ্রাহক জাকিয়া বেগম জানান, তার স্বামীর সাথে গত ১৩ এপ্রিল সকালে ঋন নিতে গিয়ে দেখেন এনজিওটি’র অফিসে তালা ঝুলছে। তখন তিনি স্থাণীয় অন্যান্য গ্রাহকদের সাথে কথা বলেন। তখন তারা মনে করেন করোনকালীন কারনে হয়তো বন্ধ রয়েছে। পরে গত এক সপ্তাহে কোন খবর পান নি। সাধারন ছুটির কারনে দেখেন ঋণ গ্রহীতারা। এনজিওটি দ্বারা প্রতারিত গ্রাহকদের অধিকাংশই দরিদ্র শ্রেণির।
প্রতারিত গ্রাহকদের একজন মনিরা বেগম জানান, তিনি ৬০ হাজার টাকা ঋণ পাওয়ার জন্য ওই এনজিওটিকে অন্যের কাছ থেকে ধার করে সঞ্চয় হিসেবে ৬হাজার টাকা জমা দেন। এছাড়া ওই এনজিওটিতে ভর্তির জন্য তারা জনপ্রতি আরও ২০০ টাকা পরিশোধ করেন। ভুক্তভোগী গ্রাহকদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী ধারনা করা হচ্ছে ওই এনজিওটি প্রায় অর্ধ সহস্র গ্রাহকদের এ প্রতারনার ফাঁদে ফেলে অর্ধকোটি টাকা নিয়ে পালিয়ে গেছে।
প্রতারণার শিকার গ্রাহকরা জানান, করোনা ভাইরাসের সংক্রমনের এই সময়ে বর্তমানে অধিকাংশ এনজিও ঋণ দেওয়া বন্ধ রাখছে কিন্তু এ সময় ‘সকস বাংলাদেশ’ তাদের ঋন দেয়ার কথা বলায় তারা এর প্রতি আকৃষ্ট হয়েছিলেন। আর সেই ঋণের টাকা নিয়ে কেউ গাড়ির ব্যাটারি ক্রয়, অন্যের
ঋণ শোধ কিংবা নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে চেয়েছিলেন।
এ বিষয়ে ভাড়া নেওয়া ভবনটির মালিক সবুজ হাওলাদার জানান, ওই এনজিওপি চলতি এপ্রিল মাস প্রথম থেকে ভাড়া হিসাবে চুক্তি করার কথা। তারা তাদের এনজিও’র আসবাব পত্র ঢুকিয়ে কার্যক্রম চালাতে থাকেন। কিন্তু তাদের সাথে লিখিতভাবে চুক্তি করার আগেই তারা ঘরটিতে তালা লাগিয়ে পালিয়ে যায়।
গত প্রায় একসপ্তাহ বন্ধ থাকা সহ কোন যোগাযোগ না থাকায় বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরকে জানানো হয়েছে।
ইন্দুরকানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ হুমায়ুন কবির জানান, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোন লিখিত অভিযোগ পাই নি। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এইচ এম লাহেল মাহমুদ/ইবি টাইমস