করোনায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৩ দিনের মাথায় মৃত্যুবরণ করেন সারাহ বেগম কবরী
অন লাইন ডেস্কঃ শুক্রবার রাত ১২টা ২০মিনিটে রাজধানীর শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন(ইন্নালিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুর সময় তার বয়স হয়েছিল ৭০ বৎসর। কবরীর ছেলে শাকের চিশতী গণমাধ্যমকে তার মায়ের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন।
উল্লেখ্য যে, গত ৫ এপ্রিল করোনাভাইরাস রিপোর্ট ‘পজিটিভ’ আসার পরপরই রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল কবরীকে। পরে শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে ৮ এপ্রিল শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) স্থানান্তর করা হয় তাকে।
১৯৬৩ সালে মাত্র ১৩ বছর বয়সে নৃত্যশিল্পী হিসেবে মঞ্চে আবির্ভাব কবরীর। তারপর পরিচালক সুভাষ দত্তের পরিচালনায় ১৯৬৪ সালে ‘সুতারাং’ সিনেমা দিয়ে চলচ্চিত্রে অভিষেক হন মিস্টি মেয়ে খ্যাত কবরী।
১৯৭৩ সালে ঋত্বিক ঘটক পরিচালিত ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ ছবিতে অভিনয় করেও বেশ জনপ্রিয়তা পান তিনি। মরহুম নায়ক রাজ্জাকের সঙ্গে তার ‘রংবাজ’ টিও সে সময় বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছিল।
১৯৭৫ সালে নায়ক ফারুকের সঙ্গে ‘সুজন সখী‘ ছবিটি মুক্তি পাওয়ার পর কবরীকে আর পেছনে ফিরে দেখতে হয়নি। এই সিনেমা দিয়ে জনপ্রিয়তার তুঙ্গে পৌঁছে যান তিনি। পরবর্তীতে তিনি রাজ্জাক, সোহেল রানা, ফারুক, উজ্জ্বল, জাফর ইকবালের মত অভিনেতাদের সঙ্গে কাজ করেছেন। তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য ছবির
মধ্যে সুতরাং,‘বাহানা’, ‘তিতাস একটি নদীর নাম’, ‘রংবাজ’, ‘সারেং বউ’, ‘সুজন সখী’সহ অসংখ্য কালজয়ী সিনেমা উপহার দিয়েছেন তিনি।
পরবর্তীতে তিনি নিজেই চলচ্চিত্র প্রযোজনা ও পরিচালনায় আসেন। বর্তমানে ‘এই তুমি সেই তুমি’ নামের একটি ছবির পরিচালনার করছেন তিনি। এই ছবির কাহিনি, চিত্রনাট্য ও সংলাপ রচনা করেছেন কবরী। সরকারি অনুদানের এ ছবিতে অভিনয়ও করবেন তিনি। কবরী পরিচালিত প্রথম সিনেমার নাম ‘আয়না’।
কবরীর পূর্বের নাম মীনা পাল। কবরী সারোয়ার ওরফে মীনা পাল চট্টগ্রাম জেলার বোয়ালখালী উপজেলাতে ১৯৫০ সালের ১৯ শে জুলাই জন্মগ্রহণ করেন। জন্মস্থান বোয়ালখালী হলেও শৈশব ও কৈশোর বেড়ে ওঠা চট্টগ্রাম নগরীতে। তার পিতা শ্রীকৃষ্ণ দাস পাল এবং মা শ্রীমতি লাবণ্য প্রভা পাল৷ ১৯৬৩ সালে মাত্র ১৩ বছর বয়সে নৃত্যশিল্পী হিসেবে মঞ্চে আবির্ভাব ঘটার পর কবরীকে পরিচালক সুভাষ দত্ত মঞ্চ থেকে থেকে এনে ১৯৬৪ সালে ‘সুতরাং‘ ছবির নায়িকা হিসেবে প্রথম ব্রেক দেন। প্রথম ছবিতেই কবরী অভিনয়ের মাধ্যমে সকলের মন জয় করে নেন।
তিনি পরবর্তীতে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন এবং পরিবার সহ নারায়ণগণ্জ জেলায় বসবাস শুরু করেন। এই কিংবদন্তি চলচ্চিত্র তারকা অভিনয়ে কিছুটা বিরতি দিয়ে একসময় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গেও যুক্ত হয়ে পড়েন। তিনি ২০০৮ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে জাতীয় সংসদ সদস্যা নির্বাচিত হয়েছিলেন।
কবির আহমেদ/ ইবি টাইমস