ভোলার চরফ্যাসনে হাসপাতালে মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি

চরফ্যাসন (ভোলা) : মহামারি করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে সরকার সারাদেশে জনসাধারণের চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। এর পরেও চরফ্যাসন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সহ উপজেলার সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, রাস্তাঘাট ও হাট বাজারের দোকানপাট এবং স্থানীয় বাস স্ট্যান্ডে জনসাধারণ তোয়াক্কা করছেনা কোন রকমের স্বাস্থ্যবিধি।

আর এ স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনে উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এছাড়াও বিনামূল্যে মাস্ক বিতরণ করছে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা কোস্ট ফাউন্ডেশন সহ চরফ্যাসন যুব ব্যবসায়ী সমিতি।

এতো কিছুর পরেও খোদ চরফ্যাসন সরকারি হাসপাতালই মানছে না স্বাস্থ্যবিধি। বহিঃবিভাগে রোগীদের উপচে পড়া ভীর থাকলেও তাদের মাঝে নেই সামাজিক দূরত্ব। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, জনবলের অভাবে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বহিঃবিভাগে সামাজিক দূরত্ব কার্যকর করা সম্ভব হচ্ছে না।

সরকারি হাসপাতালে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বহিঃবিভাগের কাউন্টারে রোগীদের নাম, ঠিকানা, বয়স ও রোগ সম্পর্কিত তথ্য নিয়ে রোগীদের টিকেট দেয়া হচ্ছে। অসেচনতা ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের হেয়ালিপনার জন্য রোগীদের ভীর চোখে পড়ার মতো। একজনের গা ঘেঁষে অন্যজন দাঁড়িয়ে আছেন চিকিৎসা সেবা নেয়ার টিকেটের জন্য। এছাড়াও শিশু ও আবাল বৃদ্ধসহ অনেকের মুখে নেই মাস্ক। টিকিট কাউন্টারসহ গাইনী চিকিৎসকের চেম্বার এবং পরিবার পরিকল্পনা কক্ষেও অনেক নারীকে শিশু নিয়ে সিরিয়াল ছাড়াই ভীর জমিয়ে ডাক্তারদের চিকিৎসা সেবা নিতেও দেখা গিয়েছে।

হাসপাতালটির পরিসংখ্যান বিভাগ সূত্রে জানা যায়, দৈনিক গড়ে প্রায় ৪শ থেকে সাড়ে ৫শ রোগী এ হাসপাতালে আসেন চিকিৎসা সেবা নিতে। এ পরিমাণ রোগীর জন্য হাসপাতালের বহিঃবিভাগে নারী,পুরুষ ও শিশুদের জন্য টিকিট কাউন্টার রয়েছে ১টি। ফলে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা রোগীদের অসেচতনতার জন্য দূরত্ব বজায় না রেখে এবং সিরিয়াল না দেয়ার ফলে সরকারের স্বাস্থ্যবিধীর নির্দেশ কার্যকর ভাবে রক্ষা হচ্ছেনা।

এছাড়াও গত বছরের জুলাই মাস থেকে এ উপজেলায় ৬৬০ জনের নমুনা সংগ্রহ করে ভোলার ল্যাবে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হলে ৬২ জন রোগীর শরীরে করোনা ভাইরাস পাওয়া যায়। তবে এ পর্যন্ত ২ জনের মৃত্যু হয়। বাকি করোনার রোগীরা সুস্থ রয়েছে বলে সূত্রে জানা যায়।

অক্টবোর ২০২০ থেকে মার্চ ২০২১ পর্যন্ত চরফ্যাসন উপজেলায় রোগীদের নমুনা সংগ্রহ ও ল্যবে পাঠানো বা পরীক্ষার কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে ।

এছাড়াও এ উপজেলায় ৮ হাজার ৬ শত ১০জন কে করোনা প্রতিরোধে ভেক্সিনের প্রথম ডোজ দেয়া হয়েছে । বর্তমানে দ্বিতীয় ডেজের কার্যক্রম শুরু হয়েছে ।

হাসপাতালে সামাজিক দূরত্ব মানার বিষয়ে চরফ্যাসন হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাক্তার মাহাবুব কবির বলেন, হাসপাতালে ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণির ৫১ জন কর্মচারীর সংকট রয়েছে। যে কারণে রোগীদের সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করা সম্ভব হচ্ছে না। হাসপাতালের সকল কার্যক্রমেই জনবলের প্রয়োজন। এছাড়াও ১১ জন চিকিৎসকের পদ এখনও শূন্য আছে।

স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার শোভোন কুমার বসাক বলেন,বর্তমানে করোনার নমুনা সংগ্রহ করা হলেও ভোলা সদর হাসপাতালের পিসিআর ল্যাবে পাঠানো হচ্ছেনা। তবে কোনো রোগী যদি চায় তাহলে তারা নিজেরাই জেলা সদরে নিয়ে যায়।

জামাল মোল্লা/ইবি টাইমস

EuroBanglaTimes

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Translate »