করোনা প্রতিরোধে ভোলার বিভিন্ন স্থানে নির্মিত হাত ধোয়ার বেসিনগুলো পরিত্যক্ত, দেখার কেউ নেই

ভোলা প্রতিনিধি : কোভিড-১৯ উপলক্ষে ভোলার বিভিন্ন স্থানে হাত ধোয়া কর্মসূচীর আওতায় জরুরী ভিত্তিতে নির্মিত বেসিন গুলি পরিত্যক্ত অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে। ভোলার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর কর্তৃক নির্মিত এসব বেসিনগুলো নোংরা, আবর্জনার স্তুপ, ধুলো বালি মাখা অবস্থায় অস্তিত্ব সংকট নিয়ে পড়ে রয়েছে। করোনার ২য় ঢেউ শুরু হলেও এসব বেসিন গুলো চালুর কোন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। যার ফলে পথচারীরা এগুলো ব্যবহার করতে পারছে না। সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, যোগীরঘোল চত্ত্বর, সদর উপজেলা চত্ত্বর, সাব রেজিস্টার অফিস, ভোলা সরকারি স্কুল মাঠ, ভোলা সদর হাসপাতাল, মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র, ভোলা পৌর ভবনের সামনে, পরাণগঞ্জ বাজার মসজিদ সংলগ্নসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ লোক সমাগম স্থানে ১৬টি বেসিন নির্মাণ করেন ভোলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর।

এছাড়া ভোলা শহরের বাহিরে প্রতি উপজেলায় ২ টি করে মোট জেলায় ২৮টি বেসিন নির্মাণ করা হয়। নির্মানে কিছুদিন এগুলো সচল থাকলেও তদারকির অভাবে এসব বেসিন গুলো অকেজো হয়ে পড়েছে। যার ফলে পথচারীরা এগুলো ব্যবহার করতে পারছে না। সরকারের লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যায় করে নির্মিত এসব বেসিনগুলো দ্রুত সংস্কার করে জন সাধারণের ব্যবহার উপযোগী করার দাবী সচেতন মহলের।

ভোলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর কর্তৃক নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান ইলিয়াছ এন্টার প্রাইজ এ সত্ত্বাধিকারী মোঃ ইলিয়াছ বলেন, জেলায় জরুরী ভিত্তিতে ২৮টি বেসিনের মধ্যে তার প্রতিষ্ঠান ২২টি বেসিন ২৯০০০ টাকা বয়ে নির্মাণ করেন। বর্তমানে বেসিনগুলি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। ইলিয়াছ বলেন, জরুরী ভিত্তিতে বেসিনগুলি নির্মাণ করে আমরা ভোলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের কাছে হস্থান্তর করি। কিন্ত এগুলো রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব ভোলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের।

যোগীরঘোল বাজার ব্যবসায়ী ইজমাউল হক বলেন, গত বছর করোনাকালীন সময় তাড়াহুড়ো করে বেসিন গুলি নির্মাণ করে কেউ এটার দেখবাল করেনি। কিছুদিন চলার পর হঠাৎ করে অচল হয়ে যায়। সাবান, পানি কোন কিছুরই ব্যবস্থা ছিলোনা। ভোলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপ-সহকারি প্রকৌশলী ফিরোজ আলম বলেন, আমরা ইউনিসেফ থেকে যে পরিমান সাবান পেয়েছি তা সব বেসিনেই দিয়েছি। কিন্তু পরের দিন আর সাবান পাওয়া যায়নি। বেসিনগুলোর পরিচর্যার ব্যাপারে তিনি কোন মন্তব্য করেননি।

ভোলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মাহমুদ খান বলেন, গত বছর জরুরী ভিত্তিতে ২৮টি বেসিন নির্মাণ করা হয়। করোনা পরবর্তী সময় এগুলো আর পরিচর্যা করা হয়নি। নির্মাণের সময় যে স্থানে বেসিনগুলো নির্মাণ করা হয়েছে সেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় পানি সরবরাহ করবে বলে তারা প্রস্তাব রেখেছিলো। কিন্তু ভোলা পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রয়োজনীয় পানি সরবরাহ না করায় যোগীর ঘোল চত্তরের বেসিনটি অকেজো হয়ে পড়ে। যেহেতু আবার কভিড-১৯ ২য় ধাপ শুরু হয়েছে তাই বেসিন গুলি পুনরায় ব্যবহার উপযোগী করার প্রয়োজনীয়তা মনে করে সকল উপজেলায় চিঠি দিবো। প্রয়োজনীয় পানির জন্য আমরা পুনরায় সংশ্লিষ্টদের সাথে আলোচনা করবো আর এগুলোর রক্ষণাবেক্ষনের জন্য একজন মনিটরিং অফিসারকে দায়িত্ব দেয়া হবে বলে তিনি জানান।

ভোলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলীর অভিযোগের জবাবে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড ভোলার তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোঃ বাবুল আখতার বলেন, বছরের পর বছর সহযোগীতা করা যায় না। যখন জরুরী ছিলো আমরা তখন পানি সরবরাহ করেছি। কিন্তু হাত ধোয়ার পাশপাশি বাজারের সকল ব্যবসায়ী এ পানি ব্যবহার করতেন বিধায় পানি দ্রুত শেষ হয়ে যেত। তাই আমরা পানি সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছি। তিনি আরো বলেন, জনস্বার্থে পানি সরবরাহ করবে ভোলা পৌরসভা আমরা কেন? ভোলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরকে বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহনের পরামর্শ দেন এই প্রকৌশলী।

সাব্বির আলম বাবু/ইবি টাইমস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit exceeded. Please complete the captcha once again.

Translate »