ভোলায় তরমুজের বাম্পার ফলন,লকডাউনে বিপাকে বিক্রেতারা

ভোলা প্রতিনিধি : ভোলায় তরমুজের ভালো ফলন ও দাম ভালো পাওয়ায় বেজায় খুশি রসালো ফল তরমুজ চাষিরা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছর বাম্পার ফলন হয়েছে তরমুজ। চরে চরে এখন চলছে তরমুজ বেচা কেনার ধুম। বেপারিরা মাঠ থেকেই তরমুজ কিনে নিয়ে যাচ্ছে। ভোলার তরমুজ চলে যাচ্ছে বরিশাল-ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে।

তবে সরকার ঘোষিত  ৭ দিনের লকডাউনে বিপাকে পরেছে ভোলার  তরমুজ চাষি ও ব্যবসায়ীরা। আগাম তরমুজে বেশি মুনাফার আশায় পাইকাররাও আসতে শুরু করেছেন। আবার অনেকে পুরো ক্ষেত আগাম বিক্রি করে দিচ্ছেন। তবে গত বছর করোনায় বাজারঘাট বন্ধ থাকায় চাষিদের লোকসান গুনতে হলেও এ বছর প্রথম কর্তনেই চাষিদের মূলধনসহ অধিক মুনাফা উঠে আসবে বলে আশা প্রকাশ করলেও লকডাউন ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বিগত বছর গুলোতে প্রাকৃতিক দুযোগের কারনে এ বছর লক্ষমাত্রার চেয়ে কম জমিতে তরমুজের আবাদ হয়েছে ৫৫৫৬ হেক্টর জমিতে কিন্তু লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছিলো ৭৭২২ হেক্টর জমি। আবাদ কম হলেও ফলন ও দাম পেয়েছে বেশি।

ভোলার চর গুলোতে চলছে এখন তরমুজ তোলার উৎসব। চাষি আর বেপারীদের পদচারনায় মুখর ভোলার বিভিন্ন চরাঞ্চলগুলে। গত দুবার করোনা সহ নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগে ফসল হারিয়ে চাষিরা একেবারেই সর্বশান্ত হয়ে পরেছিলো। কিন্তু এবার আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় এবং মাঠ জুরে তরমুজের অসম্বব ফলন দেখে চাষিদের চোখে মুখে হাসি ফুটেছে। কৃষকরা জানায় এবার তরমুজে তেমন কোন পোকার আক্রমন হয়নি। ফলন ভালো হয়েছে তাই তারা দামও পাচ্ছে ভালো। ড্রাগন ও পাকিজা জাতের তরমুজ চাষ করেছে তারা।

ভোলা সদর উপজেলার ভেলুমিয়া ইউনিয়নের চর কালেঙ্গার তরমুজ চাষি ইসুফ মাঝি জানান তিনি ১২ গন্ডা জমি থেকে ইতোমধ্যেই ৬৫ হাজার টাকার তরমুজ বিক্রি করেছে। আরো প্রায় ১লক্ষ টাকার তরমুজ বিক্রি কথা চলছে।করিম মাঝি জানান, এক কানি জমিতে ২ লক্ষ ৭০,০০০ হাজার টাকার তরমুজ বিক্রি করেছে। কিন্তু এমন সময় লকডাউনে ক্ষতির মুখে পড়ছেন তরা। এ লকডাউন আরও বাড়ালে গত বছরের মতো অনেক লোকসান গুনতে হবে।

ভোলা নতুন বাজার এর খুচরা তরমুজ বিক্রেতা মোঃ হানিফ বলেন, আমাদের কাছে খেত থেকে তরমুজ কাটার ২/৩ দিন পরে আসে। বাজার ভালো থাকলে এই তরমুজ বিক্রি করতে ৫/৭ দিন লেগে যায়। বেশি দিন হলে তরমুজ এর গায়ের রং পরিবর্তন হয়ে যায় পরে এটা বিক্রি করতে ঝামেলায় পরতে হয়। কিন্তু হঠাৎ এই লকডাউনে বিশাল লোকসান গুনতে হবে। আগাম তরমুজ কিনে অনেকটা বিপাকে আছি।

সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুহাম্মদ রিয়াজ উদ্দিন জানান, বিগত বছরগুলোতে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারনে তরমুজ চাষে কৃষকরা হারিয়ে ফেলেছিলো সে জন্য এবার চাষ কম হয়েছে, তবে ফলন হয়েছে প্রচুর বাজার দামও পাচ্ছে ভালো। আগামি বছর গুলোতে চাষিরা আরো বেশি জমিতে তরমুজ চাষ করবে বলে তিনি আশাবাদী। তবে তরমুজ চাষিরা যেন বিপাকে না পড়েন, এজন্য মাঠ পর্যায়ে আমাদের উপ-সহকারীরা সার্বক্ষণিক মাঠ পরিদর্শন ও চাষিদের পরামর্শ দিচ্ছেন।

সাব্বির আলম বাবু/ইবি টাইমস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit exceeded. Please complete the captcha once again.

Translate »