ঢাকাঃ “মুজিববর্ষের শপথ, নিরাপদ রবে নৌপথ” প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে আজ (বুধবার) থেকে শুরু হয়েছে নৌ নিরাপত্তা সপ্তাহ-২০২১। ৭-১৩ এপ্রিল দেশে নৌ নিরাপত্তা সপ্তাহ-২০২১ পালিত হবে। নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ‘নৌ নিরাপত্তা সপ্তাহ-২০২১’ এর উদ্বোধন করা হয়।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি উপস্থিত থেকে ‘নৌ নিরাপত্তা সপ্তাহ-২০২১’ এর উদ্বোধন করেন।
অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রতিপাদ্য ‘মুজিব বর্ষের শপথ, নিরাপদ রবে নৌপথ’ অত্যন্ত প্রাসঙ্গকি এবং সময় উপযোগী। নদীমাতৃক বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত থেকে উত্তরণে নৌপরিবহনের গুরুত্ব অপরিসীম। নৌ দুর্ঘটনা কমে আসছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, অন্যান্য পরিবহনের তুলনায় নৌপথ সাশ্রয়ী এবং পরিবেশ বান্ধব। দুর্ঘটনা মুক্ত নদীপথ গড়ে তোলা নৌপরিবহন অধিদপ্তরের প্রধান দায়িত্ব। মন্ত্রী নৌখাতের আরো উন্নয়নে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি উদ্যোক্তাদের এগিয়ে আসার আহবাণ জানান।
কালবৈশাখী ঝড়ের সময়ে নদীপথে জাহাজ চলাচলের ক্ষেত্রে আরো সতর্ক হওয়ার আহবান জানান মন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী বলেন, সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও আগের চেয়ে নৌপথ এখন অনেক বেশি নিরাপদ এবং পরিবেশ বান্ধব। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায়, বিশেষ করে নৌযান মালিক ও শ্রমিকদের সর্বাত্মক সহযোগিতা, বিআইডাব্লিউটিএ, নৌপরিবহন অধিদপ্তর, নৌ পুলিশ ও কোস্টগার্ড কর্মকর্তাদের পদক্ষেপ এবং জনসাধারণের সচেতনতা ও সহযোগিতা বৃদ্ধির ফলে যাত্রীবাহী নৌযানের দুর্ঘটনা অনেক কমে এসেছে।
খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বর্তমান সরকার নৌ সেক্টরের উন্নয়নের লক্ষ্যে নৌপথের সংরক্ষণ ও নৌপরিবহন ব্যবস্থা উন্নয়নে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। দেশের সকল নদীকে দখলমুক্ত করা এবং নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে আনার জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। নদীমাতৃক বাংলাদেশকে বাঁচাতে হলে নদীসমূহকে দূষণের হাত থেকে রক্ষা করতে হবে এবং পাশাপাশি নদী দখলদারদের বিরুদ্ধে সামাজিক ভাবেও সোচ্চার ও কঠোর হতে হবে । এক্ষেত্রে বর্তমান সরকার “জিরো টলারেন্স নীতি” গ্রহণ করেছে। এজন্য সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন। দেশের ভাবমূর্তি ও উন্নয়ন সমুজ্জ্বল রাখার জন্য নিরাপদ এবং দুর্ঘটনামুক্ত নৌ চলাচল ব্যবস্থা গড়ে তোলার প্রয়াসে আমরা সকলেই যে যার অবস্থান থেকে কাজ করে যাব।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সেই পঞ্চাশের দশক থেকে নদী ব্যবস্থাপনার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে ভাবতেন। তিনি সদ্য স্বাধীন মাতৃভূমির শাসনভার হাতে নিয়েই নদীমাতৃক বাংলাদেশের নৌচলাচল ব্যবস্থার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। নৌপথের পলি অপসারন ও নদী খননের জন্য স্বাধীন দেশে ৭টি ড্রেজার আমদানির মতো সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নদীর প্রতি তার ভালোবাসারই বহিঃপ্রকাশ। বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরতœ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলছে। তাঁর সুযোগ্য নেতৃত্বে বাংলাদেশ এখন জাতির পিতার স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ বিনির্মাণের দ্বারপ্রান্তে। মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে উন্নীত হতে চলেছে। উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় নৌ শিল্পের বিকাশ তথা নৌপথের উন্নয়নে বর্তমান সরকার বাজেটে প্রচুর অর্থ বরাদ্দ দিয়েছে এবং নিরাপদ নৌযান নির্মাণ ও নৌযানে আধুনিক যন্ত্রপাতি সংযোজন করে নৌপথের যাত্রীদের মধ্যে আমরা আস্থা ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি। মানসম্মত নৌযান নির্মাণ ও মেরামতের জন্য ডকইয়ার্ড নীতিমালা প্রণয়ন ও অভ্যন্তরীণ জাহাজে রিভারসিবল গিয়ার সংযোজন করে দুর্ঘটনা অনেকাংশে হ্রাস করা হয়েছে।
নৌপরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কমডোর এ জেড এম জালাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি বীর মেজর (অবঃ) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ্ উদ্দিন চৌধুরী, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্পোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) চেয়ারম্যান সৈয়দ মো. তাজুল ইসলাম (ভার্চুয়ালি), বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) চেয়ারম্যান কমডোর গোলাম সাদেক (ভার্চুয়ালি), বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌচলাচল (যাত্রী পরিবহন) সংস্থার সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহবুব উদ্দিন আহমদ বীর বিক্রম, বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আশিকুল আলম চৌধুরী (ভার্চুয়ালি) বক্তব্য রাখেন।
ঢাকা/ইবিটাইমস/আরএন