ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট,পিরোজপুর: পিরোজপুরের ইন্দুরকানীতে স্থানীয় এক চৌকিদারের উপস্থিতিতে আল আমীন (৩১) নামে এক কাঠ ব্যবসায়ীকে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের পর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের মামলায় দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে।
পূর্ব শত্রুতার জের ধরে উপজেলার পত্তাশী গ্রামে রোববার (২৮ মার্চ) রাত পৌনে ১০টার দিকে বর্বরোচিত এ হামলার ঘটনা ঘটনা হয়েছে বলে দাবি ভূক্তভোগীর।বর্তমানে পুলিশ প্রহরায় হ্যান্ডকাফ পরিহিত অবস্থায় পিরোজপুর জেলা হাসপাতালে নির্যাতিত আল আমীনের চিকিৎসা চলছে। নির্যাতিত আল আমীন ঐ গ্রামের মোঃ আলী আকবার এর ছেলে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আলী আমীন জানায়, রোববার রাতে স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় মাহফিল শুনে স্থানীয় এক যুবকের সাথে বাড়ি ফিরছেলেন। এ সময় একটি বাড়ির উপর থেকে যাওয়ার সময় পত্তাশী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন হাওলাদারের সমর্থিত ১০-১২ জন তার উপর অতর্কিত হামলা করে। এরপর আরও ১৫-২০ জন তাদের সাথে যোগ দেয়। এরপর মাটিতে ফেলে নির্মমভাবে তাকে মারধোর করে। এ সময় ওই ইউনিয়ন পরিষদের স্থানীয় চৌকিদার মোঃ রিয়াজ ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকলেও, সে নিরব ভূমিকা পালন করে।
আল আমীনের অভিযোগ সে পূর্বে,ইউপি চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম এর সমর্থক থাকলেও, বর্তমানে তার সাথে দূরত্ব রয়েছে। এজন্যই তার উপর ক্ষিপ্ত রয়েছে ইউপি চেয়ারম্যান। এজন্যই চেয়ারম্যানের নির্দেশে তার উপর বর্বরোচিত এ নির্যাতন করা হয়েছে। নির্যাতনের এক পর্যায়ে সে অজ্ঞান হয়ে পড়ে।
এরপর ইন্দুরকানী থানা পুলিশ খবর পেয়ে আল আমীনকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। এরপর সেখান থেকে তাকে পুলিশ প্রহরায় পিরোজপুর জেলা হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। সেখানে হাতকড়া পড়া অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছে আল আমীন।
আল আমীনকে মারধোরের খবর শুনে স্থানীয় চৌকিদার রিয়াজকে ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছেন বলে জানান ইউপি চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম। এরপর তিনি বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে ইন্দুরকানী থানায়ও জানান। তবে এ ঘটনায় তার কোন লোক জড়িত কিনা তা তার জানা নেই বলেও দাবি করেন তিনি।আর আল আমীনকে ব্যাপকভাবে মারধোর করা হয়নি বলে দাবি করেছে চৌকিদার রিয়াজ।
এ ব্যাপারে ইন্দুরকানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ হুমায়ুন কবির জানান,একটি মেয়েকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ স্থানীয়রা আল আমীনকে আটকের পর মারাত্মকভাবে মারধোর করেছে এবং এ ঘটনায় ইন্দুরকানী থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের হয়েছে বলে জানান ওসি। বিষয়টি তদন্ত শেষে বিস্তারিত বলা যাবে বলেও জানান তিনি।
উল্লেখ্য এর আগে গত বছরের ৪ নভেম্বর একটি কর্মী সভায় ইউপি চেয়ারম্যান মোয়োজ্জেম হোসেন হাওলাদার এর সমালোচনা করায় রঞ্জন কুমার মজুমদার নামে,ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের এক সাধারণ সম্পাদককে পিটিয়ে পা ভেঙে দেয় তার সমর্থকেরা। আসন্ন ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বীদের দমনের জন্য বিভিন্নভাবে নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে ইউপি চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে।
এইচ এম লাহেল মাহমুদ /ইবি টাইমস