অভিশপ্ত ১৫ ই আগস্ট নিয়ে ড. মোঃ ফজলুর রহমানের ধারাবাহিক মতামত। এটি লেখকের নিজস্ব মতামত। এর সাথে ইউরোবাংলা টাইমসের সম্পাদকীয় নীতিমালার সম্পর্ক নেই
পর্ব-৬
ড. মোঃ ফজলুর রহমানঃ (৫১) বাঙালি জাতিকে একটি যুগান্তকারী সংবিধান উপহার দেয়া ছাড়াও জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক আরও বিভিন্ন ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধু তাঁর জীবদ্দশায়ই ঈর্ষণীয় সাফল্য অর্জন করেছেন। তাঁর শাসনামলেই পৃথিবীর ১২৬ -টি দেশ বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদান করে। এছাড়া ইসলামী সম্মেলন সংস্থা (ও আই সি) ছাড়াও কমনওয়েলথ এবং জোট নিরপেক্ষ আন্দোলন সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থায় বাংলাদেশ সদস্যপদ লাভ করে। এরই ধারাবাহিকতায় বিগত ১৯৭৪ সনের ১৭ই সেপ্টেম্বর ১৩৬ তম দেশ হিসেবে জাতিসংঘের সদস্যপদ লাভ করে বাংলাদেশ। বাঙালির কালজয়ী মহানায়ক বঙ্গবন্ধুর বিভিন্ন প্রকার গণমুখী এবং সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা ও কর্মসূচী সমূহ অত্যন্ত সাফল্যজনকভাবে বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশ ক্রমশ ধাপে ধাপে এগিয়ে যেতে থাকে। উপরন্তু বঙ্গবন্ধুর শাসনামলেই ড. কুদরত-ই-খুদা শিক্ষা কমিশন গঠন করা হয়। পরবর্তীকালে এই কমিশনের রিপোর্ট তথা সুপারিশের ভিত্তিতেই জাতীয় শিক্ষানীতি প্রণয়ন করা হয়। তাঁর আমলেই সমুদ্র আইন প্রবর্তন করা হয়। এরই পাশাপাশি দেশের সামগ্রিক কল্যাণ সাধন এবং সরকার পরিচালনার জন্য বিভিন্ন ব্যাপারে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বাধীন সরকার বিভিন্ন ধরনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন এবং তৎপ্রেক্ষিতে যথোপযুক্ত আইন ও প্রবর্তন করেন।
(৫২) সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জনের পর গণ প্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের পক্ষে এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বিগত ১৯৭৪ সনের ২৫শে সেপ্টেম্বর বঙ্গবন্ধু জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে্র ২৯ তম অধিবেশনে ভাষণ দেন। ঐ ভাষণের পূর্বে তাঁকে অনুরোধ করা হয়েছিল, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনি ইংরেজীতে বক্তৃতা করবেন।’ কিন্তু প্রিয় মাতৃভাষা বাংলার প্রতি সুগভীর দরদ ও মমত্ববোধ থেকে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘আমি মাতৃভাষা বাংলায় বক্তৃতা করতে চাই।’ “পিনপতন নিস্তব্ধতার মধ্যে বঙ্গবন্ধুর ৪৫ মিনিটের বক্তৃতার শেষে সভাপতি নিজেই যখন দাঁড়িয়ে করতালি দিচ্ছেন, তখন স্বতঃস্ফূর্তভাবে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রনায়ক ও প্রতিনিধি দলের সদস্যবৃন্দ বিপুলভাবে করতালি দিয়ে এবং আলিঙ্গন করে বঙ্গবন্ধুকে অভিনন্দিত করেছেন [দ্রঃ স্মৃতির পাতায় জাতির জনক- তোফায়েল আহমেদ; জনকণ্ঠ, ১৭ই মার্চ, ২০১৯]।”
(৫৩) বাঙালি জাতির ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় বঙ্গবন্ধু ছিলেন আন্দোলন ও সংগ্রামে অকুতোভয়, নির্যাতনে নির্ভীক এবং নিপীড়িত মানবতার কল্যাণে অত্যন্ত সোচ্চার ও প্রতিবাদমুখর। কিন্তু তা সত্ত্বেও তাঁর হৃদয় ছিল আকাশের মতো উদার এবং মন ছিল অত্যন্ত সংবেদনশীল ও সহমর্মিতায় পরিপূর্ণ। অত্যন্ত আকর্ষণীয় এবং জ্যোতির্ময় ব্যক্তিত্বের অধিকারী ছিলেন বঙ্গবন্ধু। তাঁর সারা জীবনের সমুদয় কার্যক্রম ছিল প্রচণ্ড রকমের সাহস, অসীম বীরত্ব এবং তেজস্বিতার স্বকীয় বৈশিষ্ট্যতায় ভরপুর। তাঁর সময়কালে স্বদেশের নেতা কর্মী এবং সতীর্থদের পাশাপাশি বিদেশের সমসাময়িক নেতা এবং প্রথিতযশা রাষ্ট্রনায়কদেরকে তাঁর তেজোময় এবং আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্বের আলোকচ্ছটায় বিমোহিত এবং সম্মোহিত করার মাধ্যমে উদ্দীপ্ত এবং প্রাণবন্ত করে তোলার মতো এক আশ্চর্য রকমের ক্ষমতা ছিল বঙ্গবন্ধুর। তাঁর এহেন Extraordinary charishmatic and uncommon glamorous গুণাবলী এবং ব্যক্তিত্বের কারণে কিউবার সংগ্রামী এবং বিপ্লবী প্রেসিডেন্ট ড. ফিডেল ক্যাস্ট্রো বঙ্গবন্ধুকে বুকে জড়িয়ে ধরে বলেছিলেন- “I haven’t seen the Himalayas but I have seen Sheikh Mujib. In personality and in courage, this man is the Himalayas. I have thus had the experience of witnessing the Himalayas.”
বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে ড. ফিডেল ক্যাস্ট্রোর উপরোক্ত highly remarkable মন্তব্যটি শুধুমাত্র বঙ্গবন্ধুকেই মহিমান্বিত করেনি, একই সঙ্গে অনিবার্যভাবেই মর্যাদার আসনে বসিয়েছে বাংলাদেশকে এবং বাঙালি জাতিকে।
(৫৪) সামান্য সুযোগ পেলেই যারা বঙ্গবন্ধুর সমালোচনা করতে পঞ্চমুখ হয়ে উঠেন তারাও স্বীকার করেন যে, প্রিয় মাতৃভূমিকে বিজাতীয় পাকিস্তানী শাসন-শোষণ-বঞ্চনার নাগপাশ থেকে মুক্ত করার জন্য এবং বাঙালির সার্বিক মুক্তি ও কল্যাণের জন্য বঙ্গবন্ধু ছিলেন নিবেদিত প্রাণ। অফুরন্ত প্রাণশক্তির অধিকারী মুজিব ছিলেন একজন বিশাল হৃদয়ের এবং মহৎ মনের মানুষ। সময়ানুবর্তিতা এবং নিয়মানুবর্তিতা তিনি কঠোরভাবে মেনে চলতেন। দলের সকল নেতাকর্মীদের প্রতি ছিল তাঁর অফুরন্ত দরদ এবং অকৃত্রিম মমত্ববোধ। দলের প্রত্যেক নেতাকর্মীকে তিনি তাঁর নিজের পরিবারের সদস্যদের মতো দেখতেন। প্রতিটি নেতা কর্মীর বিপদে আপদে তিনি পরম হিতৈষীর মতো পাশে এসে দাঁড়াতেন। আর ঠিক একারণেই দলীয় নেতাকর্মীদের পাশাপাশি দেশের আপামর জনসাধারণ ও তাদের অন্তরের অন্তস্তল থেকে বঙ্গবন্ধুকে ভালবাসতেন এবং তাঁকে মনেপ্রাণে বিশ্বাস করতেন । তিনি ছিলেন প্রকৃত প্রস্তাবেই জনগণমন অধিনায়ক এবং অত্যন্ত নন্দিত ও বন্দিত নেতা। তাই তাঁর অকাল প্রয়াণে দেশবাসী শুধুমাত্র একজন রাষ্ট্রপতি কিংবা জাতির পিতাকেই হারাননি, হারিয়েছেন তাদের একান্ত আপনজন এবং অকৃত্রিম এক বন্ধু ও সুহৃদকে।
(৫৫) বঙ্গবন্ধু শুধু যে দেশের মানুষকে ভালবাসতেন তাই নয়। অসীম সাহস, অতুলনীয় ব্যক্তিত্ব এবং তুখোড় প্রত্যুৎপন্নমতিত্ব সম্পন্ন নৈতিক গুণাবলীর কারণে তাঁর সময়কালে বিশ্ব বরেণ্য বিভিন্ন রাষ্ট্রনায়কগণ ও বঙ্গবন্ধুকে অপরিসীম শ্রদ্ধার চোখে দেখতেন। তিনি যেখানেই গিয়েছেন সেখানেই মানুষজন তাঁকে আপন করে নিয়েছে। তাঁর সমসাময়িক বিশ্ব নেতৃবৃন্দের মধ্যে তৎকালীন “সোভিয়েত ইউনিয়নের রাষ্ট্রপ্রধান নিকোলাই পোদগর্নি, প্রধানমন্ত্রী আলেক্সেই কোসিগিন, কম্যুনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক লিওনিদ ইলিচ ব্রেজনেভ, যুগোশ্লাভিয়ার রাষ্ট্রনায়ক মার্শাল জোসেফ ব্রোজ টিটো, ভারতের রাষ্ট্র প্রধান শ্রী ভিভি গিরি এবং প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী, জার্মান চ্যান্সেলর হেলমুট স্মিথ, কানাডার প্রধানমন্ত্রী পিয়েরে ট্রুডো, আলজেরিয়ার রাষ্ট্রপ্রধান হুয়ারে বুমেদিন, তাঞ্জানিয়ার রাষ্ট্রপ্রধান জুলিয়াস নায়ারে, গ্রেট ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী এডওয়ার্ড হীথ, কিউবার রাষ্ট্রপ্রধান ড. ফিডেল ক্যাস্ট্রো, মালয়েশিয়ার তুন আবদুর রাজ্জাক এবং জাম্বিয়ার রাষ্ট্রপ্রধান কেনেথ কাউন্ডা – প্রমুখদের সবাই বঙ্গবন্ধুকে অশেষ শ্রদ্ধা এবং সম্মান প্রদর্শন করেছেন [দ্রঃ স্মৃতির পাতায় জাতির জনক- তোফায়েল আহমেদ; জনকণ্ঠ, ১৭ই মার্চ, ২০১৯]।”
(৫৬) সবাই জানেন বঙ্গবন্ধু সারা জীবন ধরে প্রচণ্ড রকমের উদার নৈতিক, অসাম্প্রদায়িক এবং গণতান্ত্রিক চিন্তা চেতনা ও ধ্যান-ধারণায় অভ্যস্ত এবং বিশ্বাসী ছিলেন। এহেন উদার ও পরমতসহিষ্ণু মন-মানসিকতা নিয়ে দেশ পরিচালনা তথা যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনে কায়মনোবাক্যে নিমগ্ন থাকাবস্থায় বঙ্গবন্ধু হৃদয়ঙ্গম করতে পারেন যে, বাংলাদেশের অন্যান্য বহুবিধ সমস্যার মধ্যে লাগামহীন দুর্নীতি আমাদের উন্নয়ন এবং অগ্রযাত্রার পথে প্রধান অন্তরায়। এমতাবস্থায় সুদীর্ঘদিন ধরে ঔপনিবেশিক শাসন-শোষণ এবং তৎপরবর্তীকালে পাকিস্তান আমলের জঞ্জাল দুর্নীতি, অনিয়ম এবং অনাচার নির্মুল করে দেশের স্বনির্ভরতা অর্জনের লক্ষ্যে তিনি দ্বিতীয় বিপ্লবের ডাক দেন এবং তৎপ্রেক্ষিতে যুগোপযগী কর্মসূচী ঘোষণা করেন। এই লক্ষ্য অর্জনের নিমিত্তে তিনি তাঁর নিজের দল আওয়ামী লীগ বিলুপ্ত করে মোজাফফর ন্যাপ এবং কম্যুনিস্ট পার্টি সহ আরও কয়েকটি ছোট ছোট দলের সমন্বয়ে বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ তথা বাকশাল গঠন করেন। এই দলে দেশের অন্যান্য সকল দলের এবং বিভিন্ন শ্রেণী ও পেশার মানুষের যোগদান করার সুযোগ উন্মুক্ত রাখা হয়।
(৫৭) প্রসঙ্গক্রমে উল্লেখ্য যে, এহেন যুগান্তকারী কর্মসূচী ঘোষণাকালে বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের ৩০০ টি আসনের মধ্যে বঙ্গবন্ধুর দল তথা আওয়ামী লীগের দখলে ২৯৩ টি আসন ছিল বটে। তদুপরি জাতির পিতা হিসেবে এবং দেশের সর্বজন শ্রদ্ধেয় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনি নিজে এবং তাঁর দল তখন দেশে একচ্ছত্র ক্ষমতার অধিকারী ছিলেন। তাই সরকার পরিচালনার ব্যাপারে তাঁর ক্ষমতার কোন কমতি কিংবা ঘাটতি ছিলনা। আর ক্ষমতালিপ্সার বশবর্তী হয়ে কিংবা ক্ষমতা কুক্ষিগত করার অভিপ্রায় নিয়ে তা করাও হয়নি। এহেন অবস্থায় দ্বিতীয় বিপ্লবের কর্মসূচী বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বাকশাল গঠনের পর দেশবাসীর মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা এবং সাড়া পড়ে যায়।
(৫৮) অবিশ্বাস্য হলেও সত্য যে, বাকশাল কর্মসূচী ঘোষণার পর বিভিন্ন শ্রেণী ও পেশার মানুষ স্বেচ্ছা প্রণোদিত হয়ে এবং স্বতঃস্ফূর্তভাবে দলে দলে বাকশালে যোগদান করেন। দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক, সাংবাদিক এবং অন্যান্য পেশাজীবীগণ সদলবলে এবং পত্র-পত্রিকায় বিবৃতি দিয়ে নবগঠিত বাকশালের সদস্য হন। কার আগে কে এই নবগঠিত দলের সদস্য হবেন- এই নিয়ে রীতিমতো প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে যায়। এমনকি সদস্য হওয়ার জন্য বিভিন্ন ব্যক্তি ও নেতৃবৃন্দ বিভিন্নভাবে দেনদরবার এবং তদবির ও করেন। ঐ সময়ে সেনাবাহিনীর উপপ্রধান এবং পরবর্তীকালে সেনাবাহিনী প্রধান হওয়ার পর উক্ত পদে সমাসীন থাকাবস্থায় বিএনপি -এর প্রতিষ্ঠাতা মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান ও কোন প্রকার চাপে কিংবা প্রভাবান্বিত হয়ে নয়, বরং সম্পূর্ণভাবে স্বেচ্ছাপ্রণোদিত হয়ে বাকশালে যোগদান করেন।
(৫৯) অত্যন্ত আশ্চর্যজনক হলেও সত্য যে, বঙ্গবন্ধু জীবিত থাকাবস্থায় কোন দল কিংবা ব্যক্তি কোনভাবেই বাকশালের কোন বিরোধিতা করেননি কিংবা কোন সমালোচনা ও করেননি। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় হলেও সত্য যে, যারা স্বেচ্ছা প্রণোদিত হয়ে বাকশালে যোগদান করেছিলেন এবং যোগদানের পর গর্বের সহিত তা প্রচার করেছেন, বঙ্গবন্ধু নির্মম এবং নৃশংসভাবে নিহত হওয়ার পর তারাই আবার বাকশালের সমালোচনায় পঞ্চমুখ হয়ে উঠেন। নিদারুণভাবে বিস্ময়কর হলেও সত্য যে, যিনি বা যারা বাকশালে যোগদান করেননি তারা যতটা বাকশালের সমালোচনা করেছেন তার চেয়ে যারা স্বতঃস্ফূর্তভাবে এবং প্রচণ্ড আগ্রহ সহকারে যোগদান করেছেন- সময়ের বিবর্তনে তারাই তাদের ভোল পাল্টিয়ে, চোখ উল্টিয়ে এবং বোল পরিবর্তন করে বাকশালের সমালোচনা বেশি বেশি করেছেন। এমনকি সুযোগ পেলে এখনো তা করেন। তাদের এহেন স্ববিরোধী এবং নৈতিকতা বিরোধী অবস্থান পর্যালোচনা করে বার বার মনে হয়, মহাবীর Alexander the Great যথার্থই বলেছেন- “সত্যিই সেলুকাস! কি বিচিত্র এই দেশ।”
(৬০) বাঙালির বিস্মৃতি প্রবণতা নিয়ে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন গুণীজন বিভিন্ন ধরনের অনেক তির্যক মন্তব্য করে গেছেন। ঐ সমস্ত বিরূপ মন্তব্য সমূহের সবকিছুই নিছক অপ্রাসঙ্গিক কিংবা অতিরঞ্জিত নয়। বিস্মৃতি প্রবণ বাঙালিকে তাই সময় এবং সুযোগ বুঝে মাঝে মধ্যে সঠিক ইতিহাস স্মরণ করিয়ে দেয়ার প্রয়োজন হয়ে পড়ে। তাই আমাদের অস্তিত্বের স্বার্থেই দেশের গৌরবময় ইতিহাসের পাশাপাশি ঐ সমস্ত কুলাঙ্গার এবং বিশ্বাসঘাতক খলনায়কদের নীতি, আদর্শ এবং নৈতিকতা বিবর্জিত চরম স্বার্থপর ও সুযোগ সন্ধানী মনোবৃত্তি জনসমক্ষে তুলে ধরা আবশ্যক। এরই পাশাপাশি তাদের কুকীর্তি ফাঁস করে দেয়া এবং তাদের দ্বারা রচিত নির্জলা মিথ্যা ও বিকৃত ইতিহাসের কলঙ্কিত অধ্যায় দেশবাসীকে স্মরণ করিয়ে দেয়া তাই অনেক সময় একান্তই অত্যাবশ্যক এবং অপরিহার্য হয়ে পড়ে।
ড. মোঃ ফজলুর রহমান,সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ (অবঃ),লেখক ও কলামিস্ট
(চলবে)