অভিশপ্ত ১৫ ই আগস্ট

অভিশপ্ত ১৫ ই আগস্ট  নিয়ে ড. মোঃ ফজলুর রহমানের ধারাবাহিক মতামত। এটি লেখকের নিজস্ব মতামত। এর সাথে ইউরোবাংলা টাইমসের সম্পাদকীয় নীতিমালার সম্পর্ক নেই

 পর্ব-৫ 

ড. মোঃ ফজলুর রহমানঃ (৪১) শিক্ষিত এবং বিবেকবোধ সম্পন্ন যে কেউই স্বীকার করবেন বঙ্গবন্ধুর সবচেয়ে বড় অবদান হচ্ছে তিনি আমাদের সংবিধান প্রণয়নের সময়েই ধর্মনিরপেক্ষতাকে রাষ্ট্রের অন্যতম মূলনীতি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন। এরই পাশাপাশি আরও একটি জ্বলজ্যান্ত সত্য হলো যে, পৃথিবীতে কোন একজন রাষ্ট্রনায়কই স্বাধীনতা অর্জনের পর ধর্মের নামে রাজনীতি নিষিদ্ধ করার সাহস ইতিপূর্বে কখনো দেখাননি। সারা বিশ্বে একমাত্র বঙ্গবন্ধুই সেই সাহসিকতা এবং দূরদর্শিতা দেখিয়েছিলেন। প্রসঙ্গক্রমে উল্লেখ্য যে, আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারত স্বাধীন হয়েছে বিগত ১৯৪৭ সনের ১৫ই আগস্ট। তাদের সংবিধান রচিত হয়েছে বিগত ১৯৪৯ সনের ২৬শে নভেম্বর। উক্ত সংবিধান কার্যকর হয়েছে বিগত ১৯৫০ সনের ২৬শে জানুয়ারি থেকে। কিন্তু তা সত্ত্বেও ভারতের সংবিধান প্রণয়নের সময়ে ধর্মনিরপেক্ষতাকে তাদের সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। উপরোক্ত সংবিধান রচিত হওয়ার সুদীর্ঘ ২৭ বছরের ও বেশি সময় পরে বিগত ১৯৭৭ ইং সনে উক্ত সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে ধর্মনিরপেক্ষতাকে তাদের সংবিধানে সন্নিবেশিত করা করা হয়েছে। সুতরাং বিশাল ভারতের বয়োজ্যেষ্ঠ অসংখ্য জ্ঞানতাপস এবং বিদগ্ধ রাষ্ট্রনায়কদের তুলনায় বাঙালির মহান নেতা শেখ মুজিব কতটা সাহসী এবং অন্তর্দৃষ্টি ও দূরদৃষ্টি সম্পন্ন নেতা ছিলেন একটু পরিচ্ছন্ন মন নিয়ে চিন্তা করলে তা সহজেই অনুমান করা যায়।

(৪২) মানব সভ্যতার ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে, ধর্মের কারণে পৃথিবীতে যত মানুষ নৃশংসভাবে হত্যার শিকার হয়েছেন, যুদ্ধের কারণেও তত মানুষ খুন কিংবা নিহত হননি। একথা কোনভাবেই অস্বীকার করা যাবে না যে সভ্যতা, মানবতা এবং সমাজ তখনই এগুতে পারে, যখন একটি রাষ্ট্র প্রকৃত অর্থেই অসাম্প্রদায়িক হয়। শিক্ষিত এবং সচেতন ব্যক্তি মাত্রই জানেন যে, ধর্মীয় বিভাজনকে প্রাধান্য দিয়েই পাকিস্তান নামক রাষ্ট্রের সৃষ্টি হয়েছে। পাকিস্তান সৃষ্টির পর ধর্মের নামে শাসন, শোষণ, নির্যাতন এবং নিপীড়ন বঙ্গবন্ধু তাঁর সারা জীবন ধরে প্রত্যক্ষ করেছেন এবং মর্মে মর্মে উপলব্ধি করেছেন। তাই ধর্মের দোহাই দিয়ে শাসনের নামে দুঃশাসন এবং অপশাসনের তিক্ত অভিজ্ঞতার আলোকে তাঁর আজীবন লালিত স্বপ্ন এবং আরাধ্য রাষ্ট্র বাংলাদেশকে একটি অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার ঐকান্তিক প্রত্যাশায় আমাদের সংবিধান জাতীয় সংসদে উপস্থাপন এবং তা কার্যকর করার তারিখ থেকেই বঙ্গবন্ধু ধর্মনিরপেক্ষতাকে আমাদের সংবিধানের অন্যতম মূলনীতি হিসেবে সন্নিবেশিত করেছিলেন।

(৪৩) অত্যন্ত দুঃখজনক এবং দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে, ১৯৭৫ সনের ১৫ই আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে নির্মমভাবে হত্যা করার পর তাঁরই মন্ত্রিসভার অন্যতম সদস্য সুচতুর খুনী খন্দকার মোশতাক আহমদ সম্পূর্ণ অন্যায় এবং অবৈধভাবে বাংলাদেশের রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হন। পরবর্তীকালে পর্দার অন্তরালের সামরিক স্বৈরাচার জেনারেল জিয়াউর রহমান ও বেঈমান মোশতাকের পদাঙ্ক অনুসরণ করে এবং রক্তপিচ্ছিল পথ পেরিয়ে নিতান্তই অন্যায়, অবৈধ এবং সম্পূর্ণ বেআইনীভাবে বাংলাদেশের সংকীর্ণ রাজনীতির দোলাচল মঞ্চে নিদারুণভাবে অনভিপ্রেত এবং অনাকাঙ্ক্ষিত ভাবে প্রেসিডেন্ট হিসেবে আবির্ভূত হন। তিনি ক্ষমতা দখলের পর প্রথমে সামরিক ফরমান বলে এবং পরবর্তীকালে ৫ম সংশোধনীর মাধ্যমে রাষ্ট্রের উপরোক্ত অন্যতম মূলনীতি ধর্মনিরপেক্ষতাকে আমাদের সংবিধান থেকে বাদ দেন। এরই পাশাপাশি বঙ্গবন্ধুর শাসনামলে সাংবিধানিকভাবে নিষিদ্ধ ধর্মীয় রাজনীতিকে জেনারেল জিয়াউর রহমান উপরোক্ত একই সংশোধনীর মাধ্যমে বৈধতা প্রদান করেন। যার বিষময় কুফল পুরো দেশ এবং জাতি প্রতিনিয়ত হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন।

(৪৪) ধর্মনিরপেক্ষতা মানে ধর্মহীনতা নয় – বলে বঙ্গবন্ধু তাঁর জীবদ্দশায় অসংখ্যবার ব্যক্ত করেছেন। তিনি বারবার দেশবাসীকে আশ্বস্ত করে বলেছেন ধর্মনিরপেক্ষতার অর্থ হলো সকল ধর্মের সমান অধিকার ও মর্যাদা রক্ষা করা এবং নিশ্চিত করা। এছাড়া যার যার ধর্ম সে সে নির্বিঘ্নে এবং নিরুপদ্রবে পালন করবে। এ ব্যাপারে রাষ্ট্র বা সরকার কারও পক্ষে অথবা বিপক্ষে কোন অবস্থান নিবে না কিংবা কোনভাবেই কোন পক্ষপাতিত্ব করবে না। পক্ষান্তরে ধর্মাশ্রয়ী রাজনীতি পুনপ্রবর্তনের পর ধর্মান্ধ সাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক দলগুলো বিরামহীনভাবে অপপ্রচার চালিয়েছে যে, ধর্মনিরপেক্ষতার অর্থই হলো ধর্মহীনতা। এ ব্যাপারে যে যেভাবে এবং যতরকম অপপ্রচার চালানো যায়, প্রতিক্রিয়াশীল সাম্প্রদায়িক ধর্মান্ধ গোষ্ঠী তার সবকিছুই অত্যন্ত চতুরতার সাথে কাজে লাগিয়েছে। তাদের কোন নীতি, আদর্শ এবং নৈতিকতাবোধ কোনভাবেই এহেন সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট এবং বিভ্রান্তিমূলক অপপ্রচারে বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি। বেদনাদায়ক হলেও সত্য যে, ১৯৭৫ -এর পরবর্তী কোন একটি সরকারই এহেন বিরামহীন অপপ্রচারে কখনো কোন বাধা দেননি কিংবা কোন প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেননি। বরং বিভিন্নভাবে সমর্থন যুগিয়েছেন এবং রাষ্ট্রীয়ভাবে পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান করেছেন। যার অন্তর্নিহিত কারণ সমূহ নিদারুণভাবে অসৎ উদ্দেশ্য প্রণোদিত এবং দুরভিসন্ধিমূলক বলে জোরালোভাবেই বিবেচিত হয়।

(৪৫) ধর্মনিরপেক্ষতাকে রাষ্ট্রের অন্যতম মূলনীতি হিসেবে ঘোষণা করে তা সংবিধানে সন্নিবেশিত করার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু ধর্মকে অবমাননা করেছেন বলে এবং ইসলামের প্রভূত ক্ষতি সাধন করেছেন বলে ধর্মাশ্রয়ী রাজনৈতিক দলগুলো সুদীর্ঘদিন ধরে নিরলসভাবে প্রচার চালিয়েছে। তাদের কেউ কেউ এখনো এহেন ভ্রান্ত ধারণা মনে প্রাণে ধারণ করেন এবং লালন করেন। সবচেয়ে দুঃখজনক এবং হতাশাব্যঞ্জক দিক হলো পবিত্র ইসলাম ধর্ম প্রচার করার নামে আবার কখনো বা পবিত্র কুরআনের তাফসির কিংবা ওয়াজের উছিলায় তারা অসংকোচে এবং অকপটে বিভিন্ন ধরনের মিথ্যা, বানোয়াট এবং কল্পকাহিনী প্রচার করেছেন। প্রকৃত সত্য হলো যে, ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শে মনে প্রাণে পরিপূর্ণভাবে বিশ্বাসী হওয়া সত্ত্বেও স্বাধীনতা অর্জনের মাত্র সাড়ে তিন বছর সময়ের মধ্যে বঙ্গবন্ধু ইসলাম ধর্মীয় মূল্যবোধ রক্ষা করার পাশাপাশি ইসলামের প্রচার এবং প্রসারের জন্য তিনি যা যা করেছেন ইসলামের মুখোশধারী সরকারগুলো তা কখনই করেননি।

(৪৬) দেশবাসী নিশ্চয়ই জানেন একটি অসাম্প্রদায়িক আদর্শ বাস্তবায়নের স্বপ্ন নিয়েই রক্ত নদী পেরিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। এই আদর্শকে প্রতিষ্ঠা এবং রক্ষা করতে না পারলে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠা অর্থহীন হয়ে যাবে। এরই পাশাপাশি এ কথাও সত্য যে, ধর্মনিরপেক্ষতা ছাড়া গণতন্ত্র অর্থহীন। কেননা গণতন্ত্র জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে দেশের সকল সম্প্রদায়ের এবং সকল নাগরিকের অধিকার সুরক্ষা করে। তাই ধর্মনিরপেক্ষতা ছাড়া গণতন্ত্রের এই আদর্শ রক্ষা করার অন্য কোন উপায় নেই। বঙ্গবন্ধু খুব ভালো করেই জানতেন গণতান্ত্রিকভাবে পরিচালিত কোন দেশে কোন একটি বিশেষ ধর্মকে প্রাধান্য দেয়ার কিংবা রাষ্ট্রীয়ভাবে পৃষ্ঠপোষকতা দেয়ার কোন সুযোগ কিংবা কোন অবকাশ নেই। তাই এরকম একটি মহৎ চিন্তা প্রাণের গভীরে ধারণ করা সত্ত্বেও ইসলামের বহুল প্রচার এবং প্রসারের জন্য বঙ্গবন্ধু সরকার যে সমস্ত সময়োপযোগী এবং যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন তা তাঁর সমালোচনাকারীগণ কখনো বলেননি এবং আজও বলেননা। এমনকি নিতান্তই বাধ্য না হলে তারা তা স্বীকার ও করতে চাননা।

(৪৭) ধর্মের প্রতি বঙ্গবন্ধু কতটা বিশ্বাসী, অনুরাগী এবং নিবেদিতপ্রাণ ছিলেন তা তাঁর রচিত অসমাপ্ত আত্মজীবনী পাঠ করে যে কেউই সন্দেহমুক্ত হতে পারবেন। কারা অভ্যন্তরে থাকাকালীন সময়েও তিনি নিয়মিত নামাজ আদায় করতেন বলে উপরোক্ত আত্মজীবনী পাঠ করে জানা যায়। কিন্তু তা সত্ত্বেও ইসলামের প্রসার এবং প্রচারের জন্য বঙ্গবন্ধু ক) ইসলামিক ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেছেন, খ) মাদ্রাসা বোর্ড গঠন করেছেন গ) মদ-জুয়া-হাউজি এবং ঘোড় দৌড় নিষিদ্ধ করেছেন, ঘ) বিশ্ব ইজতেমার জন্য টঙ্গীতে বিপুল পরিমাণ সরকারী জমি বরাদ্দ দিয়েছেন, ঙ) ও আই সি সম্মেলনে যোগদান করেছেন এবং বাংলাদেশকে ও আই সি -তে সদস্যভুক্ত করেছেন, চ) প্যালেস্টাইনের আন্দোলন পুরোপুরিভাবে সমর্থন করেছেন এবং প্যালেস্টাইনের পক্ষে জোরালোভাবে অবস্থান নিয়েছেন, ছ) ইহুদী রাষ্ট্র ইসরাইল কর্তৃক বাংলাদেশকে প্রদত্ত স্বীকৃতি প্রত্যাখ্যান করেছেন এবং মুসলিম উম্মাহ্‌র পক্ষে সংহতি প্রকাশের মাধ্যমে সুদৃঢ়ভাবে অবস্থান নিয়েছেন।

(৪৮) প্রসঙ্গক্রমে উল্লেখ্য যে, বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করার সুদীর্ঘ ২১ বছর পর তদীয় কন্যা শেখ হাসিনা জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে বিগত ১৯৯৬ সনের ১২ই জুন অনুষ্ঠিত ৭ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে ২৩শে জুন প্রথমবারের মতো রাষ্ট্র ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হন। পরে তিনি একাদিক্রমে বিগত ২০০৮ সনের ২৯শে ডিসেম্বর, ২০১৪ সনের ৫ই জানুয়ারি এবং ২০১৮ ইং সনের ৩০শে ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে বিপুল ভোটের ব্যবধানে নির্বাচিত হয়ে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গঠন করেন। তাঁর এই সুদীর্ঘ সময়ে তিনিও তাঁর প্রয়াত পিতা তথা জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ন্যায় ইসলামের প্রচার এবং প্রসারের জন্য ব্যাপক ভিত্তিক কার্যক্রম সম্পন্ন করেছেন। শেখ হাসিনা নিয়মিতভাবে নামাজ পড়েন বলে এবং রোজা রাখেন বলে সবাই একবাক্যে স্বীকার করেন। এমনকি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়া ছাড়াও তিনি নিয়মিতভাবে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করেন বলে তাঁর কঠোর সমালোচনাকারীগণ ও স্বীকার করেন।

(৪৯) পবিত্র ধর্ম ইসলামের প্রতি পরিপূর্ণভাবে বিশ্বাসী পিতা বঙ্গবন্ধুর মতো তাঁর সুযোগ্যা কন্যা শেখ হাসিনাও দেশে ইসলামের মহৎ আদর্শ এবং মূল্যবোধ সুপ্রতিষ্ঠার নিমিত্তে তিনি বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রম সম্পন্ন করেছেন। তাঁর দ্বারা সম্পন্নকৃত এই সমস্ত কার্যক্রম সমূহের মধ্যে ― ক) ইসলামী আরবী বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করেছেন, খ) আশি টি মডেল মাদ্রাসায় অনার্স কোর্স চালু করে দিয়েছেন, গ) দেশের কওমী মাদ্রাসাগুলিকে রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃতি প্রদানের মাধ্যমে সেগুলিকে শিক্ষার মূল স্রোতের সাথে অন্তর্ভুক্ত করে দিয়েছেন, ঘ) কওমী মাদ্রাসার দাওরায়ে হাদিস কোর্সকে -মাস্টার্স ডিগ্রির সমান মর্যাদা প্রদান করেছেন, ঙ) মাদ্রাসার শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ বরাদ্দ দিয়েছেন, চ) দেশের প্রতিটি জেলা-উপজেলায় দৃষ্টি নন্দন মসজিদ নির্মাণ করেছেন, ছ) ইমাম-মুয়াজ্জিনদেরকে সহায়তার জন্য কল্যাণ ট্রাস্ট গঠন করেছেন, জ) ইসলামিক ফাউন্ডেশনের আওতায় সারা দেশে মসজিদ ভিত্তিক পাঠাগার স্থাপন করেছেন, ঝ) লক্ষাধিক আলেম ওলামায়ে কেরামের কর্মসংস্থানের সুব্যবস্থা করে দিয়েছেন।

(৫০) অবিশ্বাস্য এবং অপ্রিয় হলেও সত্য যে, বঙ্গবন্ধু এবং শেখ হাসিনা কর্তৃক সম্পন্নকৃত উপরোক্ত কোন একটি কার্যক্রমই বঙ্গবন্ধু হত্যার পরবর্তী এবং শেখ হাসিনার পূর্ববর্তী কোন একটি সরকারই করেননি। কিন্তু তা সত্ত্বেও অত্যন্ত পীড়াদায়ক এবং বেদনাদায়ক হলেও সত্য যে, সাধারণ শিক্ষায় শিক্ষিত অনেকের মতো ধর্মীয় শিক্ষার শিক্ষার্থী ছাত্র-ছাত্রী এবং শিক্ষক-শিক্ষয়িত্রীদের মধ্যে একটি বড় অংশ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু অথবা তদীয় কন্যা শেখ হাসিনার প্রতি ন্যূনতম সৌজন্যবোধ কিংবা সামান্যতম কৃতজ্ঞতাবোধ অথবা কোন প্রকার শ্রদ্ধা পোষণ করেননা। বরং বিভিন্ন ধরনের মিথ্যা, বানোয়াট এবং মনগড়া বক্তব্যসমূহ প্রদানের মাধ্যমে সাধারণ ধর্মপ্রাণ মুসলমানদেরকে নানাভাবে বিভ্রান্ত করে থাকেন। যা অত্যন্ত দুঃখজনক এবং হতাশাব্যঞ্জক বলে অকাট্ট এবং জোরালোভাবেই বিবেচিত হয়। এই সমস্ত বিভ্রান্ত এবং পথভ্রষ্ট মিথ্যাবাদীদেরকে মহান আল্লাহ্‌ রাব্বুল আলামীন কবে নাগাদ সুবুদ্ধি কিংবা সুশিক্ষা প্রদান করবেন অথবা হেদায়েত দান করবেন কিংবা আদৌ করবেন কি না তা পাক পরোয়ারদিগার আল্লাহ্‌ই ভাল জানেন।

 ড. মোঃ ফজলুর রহমান, সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ (অবঃ) ,লেখক ও কলামিস্ট 

( চলবে ) 

EuroBanglaTimes

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Translate »