হবিগঞ্জের বাহুবলে আলোচিত জোড়া খুন,ঘাতকের স্বীকারোক্তি

হবিগঞ্জ প্রতিনিধিঃ হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলায় আলোচিত মা ও তার আট বছরের মেয়েকে গলা কেটে হত্যার রহস্য উদঘাটন হয়েছে। দুই লাখ টাকা ও সোনার বালা চুরি করতে গিয়ে তাদের হত্যা করেছেন বলে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন নিহতদের প্রতিবেশী ঘাতক আমীর হোসেন (৩০)।

শনিবার (২০ মার্চ) রাত ৮টায় সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ উল্ল্যা। হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিনা হক শনিবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ১৬৪ ধারায় আমীর হোসেনের জবানবন্দি রেকর্ড করেন।

বাহুবল মডেল থানা পুলিশ শুক্রবার (১৯ মার্চ) আমীর হোসেনকে গ্রেফতার করে। তিনি সিলেটের শাহপরান থানার চৌকিদিঘী এলাকার আলমগীর মিয়ার ছেলে। তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে মনির মিয়া নামে আরও একজনকে গ্রেফতার এবং একটি পুকুর থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছোরা, মোবাইল ফোন ও কিছু টাকা জব্দ করা হয়েছে।

স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে পুলিশ সুপার জানান,বাহুবল উপজেলার দীগাম্বর বাজার এলাকার বাসিন্দা সঞ্জিত দাশ (৪৫) ও আমীর হোসেন পূর্ব পরিচিত। প্রায় তিন মাস আগে সঞ্জিত দাশের মাধ্যমেই আমীর হোসেন পার্শ্ববর্তী বাসা ভাড়া নিয়েছিলেন। কয়েকদিন আগে আমীর হোসেন সঞ্জিতের বাসায় এসে তিন হাজার টাকা ধার নেন এবং জানতে পারেন তাদের বাসায় আরও দুই লাখ টাকা এবং সোনার বালা রয়েছে।

গত ১৮ মার্চ সঞ্জিত তার স্ত্রী অঞ্জলী মালাকার (৩০) ও মেয়ে পূজা রাণী দাসকে (৮) বাসায় রেখে ব্যবসার জন্য সব্জি কিনতে সুনামগঞ্জ গিয়েছিলেন। ওইদিন মা-মেয়ে বাসায় একা থাকার সুযোগে আমীর তার আরও দুইজন সহযোগীকে নিয়ে টাকা চুরি করতে আসেন এবং এক পর্যায়ে মা ও মেয়েকে গলা কেটে হত্যা করেন। হত্যাকারীরা তাদের ব্যহৃত ছুরি একটি পুকুরে রেখে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। পরে আমীর হোসেন নিজেই তার হাত কেটে অজ্ঞান হওয়ার ভান করে পড়ে থাকেন এবং মানুষকে বোঝাতে চান ডাকাতরা দুইজনকে হত্যা করেছেন।

এরপর স্থানীয়রা তাকে হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যা আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। এসপি আরও জানান, পুলিশের সন্দেহ হলে আমীর হোসেনকে হাসপাতাল থেকেই আটক করা হয়। তার কথামতো মনিরকে গ্রেফতার করা হয়ে। আরেক আসামি পলাতক রয়েছে। তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

গত বৃহস্পতিবার (১৮ মার্চ) সকাল ৮টায় তাদের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরদিন নিহত অঞ্জলীর বাবা কার্তিক মালাকার বাদী হয়ে বাহুবল মডেল থানায় অজ্ঞাত আসামি রেখে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছিলেন।

মোতবিবর হোসেন কাজল /ইবি টাইমস

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit exceeded. Please complete the captcha once again.

Translate »