পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসছে বিশাল গ্রহাণু

আগামী ২১ শে মার্চ ২০২১ পৃথিবীর পাশ দিয়ে  ঘন্টায় ১,২৪,০০০ হাজার কিলোমিটার দ্রুত গতিতে একটি গ্রহাণু পার হয়ে যাবে

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা NASA তাদের ওয়েবসাইটে জানিয়েছেন যে,আগামী ২১ শে মার্চ রবিবার আমাদের গ্রহ পৃথিবীর পাশ দিয়ে একটি বিশাল আকৃতির গ্রহাণু চলে যাবে।প্রায় ১ কিলোমিটার ব্যাস বিশিষ্ট এই গ্রহাণুটি পৃথিবী থেকে প্রায় ২ মিলিয়ন কিলোমিটার দূর দিয়ে চলে যাবে।

231937 (2001 FO32) ক্যাটালগের নামযুক্ত এই মহাজাগতিক গ্রহাণুটি ২০ বছর আগে প্রথম আবিষ্কৃত হয়েছিল। আর তখন থেকেই নাসার মহাকাশ বিজ্ঞানীরা এর গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করে আসছেন । নাসা আরও জানান, এই গ্রহাণুটির গতি প্রতি ঘন্টায় ১ লক্ষ ২৪ হাজার  কিলোমিটার। এই গ্রহাণুটি সচরাচর গ্রহাণুর চেয়ে অনেক বেশী গতিশীল। গ্রহাণুটির অস্বাভাবিকভাবে দ্রুতগতির কারণ হ’ল সূর্যের চারপাশে এর খাড়া ঝোঁক এবং দীর্ঘায়িত (বা এক্সেন্ট্রিক) কক্ষপথ। নাসার বর্ণনা অনুসারে,এই গ্রহাণুটির কক্ষপথ যা পৃথিবীর কক্ষপথের দিকে ৩৯ ডিগ্রী এন্গেলে ঝুঁকছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোরনিয়ার লসএন্জ্ঞলসের পাসাদেনায় নাসার জেট প্রপালশন ল্যাবরেটরির ল্যান্স বেনারের মতে, ২১ শে মার্চ দক্ষিণ গোলার্ধের শখের জ্যোতির্বিদরা মাঝারি আকারের দূরবীন দিয়েও এই গ্রহাণুটিকে পর্যবেক্ষণ করতে পারবেন। গ্রহাণু বা অ্যাস্টেরয়েড হল প্রধানত পাথর দ্বারা গঠিত বস্তু যা তার তারা বা সূর্যকে কেন্দ্র করে আবর্তন করে।

আমাদের সৌরজগতে গ্রহাণুগুলো ক্ষুদ্র গ্রহ (Minor planet অথবা Planetoid) নামক শ্রেণীর সবচেয়ে পরিচিত বস্তু। এরা ছোট আকারের গ্রহ যেমন বুধের চেয়েও ছোট। বেশিরভাগ গ্রহাণুই মঙ্গল এবং বৃহস্পতি গ্রহের মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত গ্রহাণু বেল্টে থেকে নির্দিষ্ট উপবৃত্তাকার কক্ষপথে সূর্যকে আবর্তন করে। ধারণা করা হয় গ্রহাণুগুলো ভ্রূণগ্রহীয় চাকতির (Protoplanetary disc) অবশিষ্টাংশ। বলা হয় গ্রহাণু বেল্টের অঞ্চলে সৌরজগতের গঠনের প্রাথমিক সময় যেসকল ভ্রূণগ্রহ সৃষ্টি হয়েছিলো তাদের অবশিষ্টাংশ বৃহস্পতির আবেশ দ্বারা সৃষ্ট মহাকর্ষীয় অক্ষ বিচলনের কারণে গ্রহের সাথ মিলিত হবার সুযোগ পায়নি।

আর এই অবশিষ্টাংশই গ্রহাণু বেল্টে ছড়িয়ে থেকেই সূর্যকে গ্রহের মত প্রদক্ষিণ করছে। তবে কি কারনে এই গ্রহাণু বেল্ট থেকে মাঝেমধ্যেই এই সমস্ত ছোট ও বড় গ্রহাণু এলোপাতারি ছিটকে পড়ে সে সম্পর্কে নাসা কিছু জানায় নি। আধুনিক বিজ্ঞানীদের ধারণা এই পৃথিবীতে মানুষের আগমনের পূর্বে মিলিয়ন বৎসর পূর্বে ডায়নোসারস নামে বিশাল আকৃতির এক প্রাণী বাস করতো। একদিন এমনই একটি গ্রহাণু পৃথিবীর বুকে আছঁড়ে পড়লে বিস্ফোরণের আগুনে সমস্ত ডায়নোসারসের মৃত্যু হয়।

এখানে উল্লেখ্য যে,আমাদের পৃথিবীর ভিতরটায় আগুনে পরিপূর্ণ। পৃথিবীর বিজ্ঞানীদের দল অনেক চেষ্টা করেছিলেন যে,পৃথিবীর ভৃমি ভেদ করে অন্যদিক দিয়ে বের হওয়া যায় কিনা। কিন্ত না,পৃথিবীর অভ্যন্তরে প্রায় ৬ কিলোমিটার যাওয়ার পরেই আগুনের জন্য আর অগ্রসর হওয়া যায় না। বিজ্ঞানীরা ডায়নোসারস এর বিভিন্ন আকৃতির কঙ্কাল আবিষ্কৃত করেছেন এবং সেই বিশাল গ্রহাণুটি মেক্সিকো উপসাগরে পতিত হয়েছিল বলেও স্থান সনাক্ত করতে পেরেছেন।

বিজ্ঞানীরা আরও জানান,সেদিনকার গ্রহাণুটির আগাতে প্রজ্জলিত আগুন নিভতে প্রায় ৫০০ শত বৎসর লেগে ছিল। তারপর ধীরে ধীরে ঠান্ডা হলে গাছপালা,জীবন্ত ও মানুষের বসবাসের উপযোগী হয়।

কবির আহমেদ /ইবি টাইমস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit exceeded. Please complete the captcha once again.

Translate »