ইউরোপ ডেস্কঃ প্যারিস থেকে বিবিসি ও এএফপি জানিয়েছেন যে, দুর্নীতির অভিযোগে ফ্রান্সের সাবেক প্রেসিডেন্ট নিকোলাস সারকোজি ও তার তিন সাবেক সহযোগীর তিন বৎসরের কারাদণ্ড দিয়েছেন স্থানীয় একটি আদালত।
সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছেন,গিলবার্ট অ্যাজিবার্ত নামের একজন ম্যাজিস্ট্রেটকে ঘুষ দেয়ার চেষ্টা করেছিলেন বলে অভিযুক্ত হয়েছেন ৬৬ বৎসর বয়স্ক সাবেক ক্ষমতাধর এই প্রেসিডেন্ট। অভিযোগে বলা হয়েছে, নিজের রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে ফৌজদারি তদন্তের তথ্য দেয়ার বিনিময়ে ওই ম্যাজিস্ট্রেটকে মোনাকোতে একটি উঁচু পর্যায়ের চাকরির প্রস্তাব দিয়েছিলেন সারকোজি। এ মামলায় একই সাজা পাওয়া অন্য দু’জন হলেন সারকোজির সাবেক আইনজীবী থিয়েরি হারজোগ এবং ম্যাজিস্ট্রেট অ্যাজিবার্ত।
রায়ে বলা হয়েছে, নিকোলাস সারকোজি তার এই সাজা নিজের বাসায় ভোগ করতে পারেন। তবে তাকে পায়ে ইলেকট্রিক ট্যাগ পরতে হবে বলে রায়ে বলা হয়েছে। এর ফলে তার গতিবিধি নির্ধারণ করা যাবে। তাছাড়াও এই রায়ের বিরুদ্ধে সাবেক এই প্রেসিডেন্ট আপিল করতে পারবেন। নিকোলাস সারকোজির বিরুদ্ধে সরকারী প্রসিকিউটররা চার বৎসরের জেল চেয়েছিলেন, যার অর্ধেকটা স্থগিত করা হবে।
অ্যাজিবার্ত এবং হারজগের মধ্যে আলোচনার একটি টেপকে কেন্দ্র করে এই মামলা দায়ের করা হয়েছিল। তারপর সেই টেপ নিয়ে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো তদন্তে নামে। তাতে দেখা যায়, ২০০৭ সালে প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রচারণার জন্য বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান লরিয়েলের উত্তরাধিকার লিলিয়েনি বেটেনকোর্টের কাছ থেকে অবৈধ উপায়ে অর্থ গ্রহণ করেছেন সারকোজি।
এ ছাড়াও তার বিরুদ্ধে আরো একটি আলাদা মামলা আছে বলে জানা গেছে,যার শুনানি হবে ১৭ই মার্চ থেকে ১৫ই এপ্রিলের মধ্যে। তথাকথিত চিতম্যালিয়ন সম্পর্ককে কেন্দ্র করে এই মামলা। ২০১২ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনী প্রচারণায় তিনি প্রতারণার মাধ্যমে অতিরিক্ত অর্থ খরচ করেছিলেন বলে অভিযোগ আছে। ২০০৭ সাল থেকে তিনি ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ছিলেন। তবে ২০১২ সালের নির্বাচনে হেরে যান।
ফ্রান্সে এই রায়কে দেখা হচ্ছে একটি মাইলফলক হিসাবে। ইতিপূর্বে এমন নজির স্থাপিত হয়েছিল সারকোজির ডানপন্থি পূর্বসূরি জ্যাক শিরাকের বিরুদ্ধেও। প্যারিসের মেয়র থাকাকালে রাজনৈতিক মিত্রদের জন্য প্যারিস সিটি হলে ভুয়া চাকরির ব্যবস্থা করে দেয়ার অভিযোগ ছিল তার বিরুদ্ধে। এ জন্য ২০১১ সালে তাকে ২ বৎসরের জেল দেয়া হয়েছিল। পরে আপিলের পর তার সেই শাস্তি স্থগিত করা হয়েছিল। সাবেক প্রেসিডেন্ট জ্যাক শিরাক ২০১৯ সালে মৃত্যুবরণ করেন।
কবির আহমেদ /ইবি টাইমস