বৃটেনে করোনা মহামারীর নায়ক স্যার ক্যাপ্টেন টম মুর রাস্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় রয়েল বৃটিশ আর্মির অভিজ্ঞ ক্যাপ্টেন ও করোনা মহামারীতে বৃটিশ ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস (NHS) কে এককভাবে বিপুল অর্থ সংগ্রহকারী এই মহান পুরুষ করোনায় আক্রান্ত হয়ে ১০০ বৎসর বয়সে পূর্ব লন্ডনে মৃত্যুবরণ করেছেন সপ্তাহ খানেক পূর্ব। মৃত্যুর কিছুদিন পূর্বে বৃটেনের রাণী এলিজাবেথ (৯৪) তাকেঁ দেশের সর্বোচ্চ সম্মান “নাইট” উপাধিতে ভূষিত করেন।

যারা নাইট উপাধিতে ভূষিত হন,তাদের নামের পূর্বে স্যার লিখে সন্মান জানানো হয়ে থাকে। তারঁ শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে সার্বজনীন অংশ নিতে পারছেন না তবে হাজার হাজার বৃটেনবাসী শোক প্রকাশের জন্য অনলাইন বইতে স্বাক্ষর করেছেন। করোনার মহামারীর বিধিনিষেধের কারনে শুধুমাত্র তারঁ পরিবারের আট জন সদস্য পূর্ব ইংল্যান্ডের বেডফোর্ডে শেষকৃত্য ও দাফনের সময় উপস্থিত ছিলেন।

তাকে বৃটিশ রয়েল আর্মির সৈনিকরা গার্ড অফ অনার প্রদান করেন। বিবিসি টেলিভিশন তারঁ এই শেষকৃত্য অনুষ্ঠানটি সরাসরি সম্প্রচার করে। ক্যাপ্টেন স্যার টম মুরের পরিবারের ৮ সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন – তাঁর দুই মেয়ে হান্না ইঙ্গ্রাম-মুর এবং লুসি টেক্স্সিরা, চার নাতি-নাতনি এবং দুই মেয়ের স্বামীগণ।

তার মেয়ে টেক্সিরা বিবিসিকে বলেন, আমার বাবা সবসময়ই সঠিক পথে এগিয়ে যেতে বলতেন,তিনি অত্যন্ত সৎ ও সোজা মনের মানুষ ছিলেন। আমার বাবা কথায় ও কাজে মিল রেখে ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের জন্য তারঁ অর্থ সংগ্রহ করে মানুষের মনে স্থান করে নিয়েছেন। মেয়ে ইঙ্গ্রাম-মুর বলেন, যে তার বাবার প্রত্যাশার আত্মা দ্বারা বিশ্ব “মুগ্ধ” হয়েছিল।”এর আগে আমরা পারিবারিকভাবে এতটা কাছাকাছি ছিলাম কিন্তু বাবার আশার মনোভাব, ইতিবাচকতা এবং স্থিতিস্থাপকতার দ্বারা বিশ্ব মোহনীয় হয়ে ওঠার সাথে সাথে আমরা আরও ঘনিষ্ঠ হয়েছি।” “তারাও বাবার দয়া ও মানবিক চেতনার মৌলিক কল্যাণের প্রতি বিশ্বাস দেখেছিল।”

ইয়র্কশায়ার রেজিমেন্টের ছয় সৈন্য তার কফিনের জন্য পলপ্রেয়ার্স হিসাবে কাজ করেছিলেন, যেটিকে যুক্তরাজ্যের পতাকা দিয়ে টানা হয়েছিল এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তার সার্ভিস ক্যাপের প্রতিরূপে সজ্জিত করা হয়েছিল, ইয়র্কশায়ার রেজিমেন্টের পুষ্পস্তবক অর্পিত ছিল। তাঁর কফিনে একটি বিশেষভাবে কমিশন করা তলোয়ার রাখা  হয়েছিল, একদিকে ইয়র্কশায়ার রেজিমেন্টের নীতিতে খোদাই করা ছিল: “ভাগ্য সাহসীদের পক্ষে” এবং অন্যদিকে তাঁর ব্যক্তিগত উদ্দেশ্য: “আগামীকাল শুভদিন হবে”।

হ্যারোগেটের আর্মি ফাউন্ডেশন কলেজের ছয় প্রতিনিধি, যেখানে মুরকে সম্মানিত কর্নেল করা হয়েছিল, বেডফোর্ডশায়ার শ্মশানে একটি আনুষ্ঠানিক প্রহরী গঠন করেছিলেন এবং অনুষ্ঠানের শুরু হওয়ার আগে ১৪ জনের একটি ফায়ারিং স্কোয়ার্ড একযোগে তিন রাউন্ড গুলি চালিয়ে সন্মান জানানো হয়েছে।শনিবার সন্ধ্যায়, স্বাস্থ্য সচিব, ম্যাট হ্যানকক টুইট করে বলেন,”স্যার ক্যাপ্টেন টম মুর আমাদের জন্য একটি অনুপ্রেরণা ছিল এবং আমরা মহামারী জুড়ে তার প্রচেষ্টা কখনই ভুলব না। “তিনি ব্রিটেনের জন্য সেরা কাজটি করে দেখিয়েছেন। “Rest in peace ক্যাপ্টেন টম”।

উল্লেখ্য যে,দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রবীণ টম মুর এনএইচএস স্বাস্থ্যসেবার জন্য অনুদান হিসাবে ৩২ মিলিয়ন পাউন্ড (প্রায় ৩৬.৮ মিলিয়ন ইউরো) সংগ্রহ করেছিলেন,যা মহামারীতে মারাত্মক চাপের মধ্যে থাকা NHS কে অনেক সহায়তা করেছিল।

কবির আহমেদ /ইবি টাইমস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit exceeded. Please complete the captcha once again.

Translate »