ভোলার চরফ্যাসন পৌর নির্বাচন কঠোর নিরাপত্তা বলয়ে পৌরশহর, ঝুঁকিপূর্ণ ১১টি কেন্দ্র

প্রথম বারের মতো ভোটিং মেশিনে ভোট গ্রহন শংকায় সাধারন ভোটারা

      

চরফ্যাসন(ভোলা): আগামী দিন চরফ্যাসন  পৌরসভা নির্বাচনের ভোট গ্রহণ করা হচ্ছে।কঠোর নিরাপত্তা বলয়ের চাদরে ঢেকে আছে পৌরসদর। উৎকন্ঠার অন্তিম প্রহরে তিন মেয়র ৩২ জন কাউন্সেলর প্রার্থী। ভোটের দিনকে সামনে রেখে গতকাল শনিবার বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থী পৌরসভার সব ক’টি কেন্দ্রকে ঝুঁকিপূর্ণ বলে দাবী করেছে।

পাশাপাশি ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থায় সন্তষ্ট আওয়ামী লীগ ও স্বতন্ত্র সমর্থিত প্রার্থী বলেছেন,ঝুঁকিপূর্ণ মনে করার কোন কারণ নেই। তবে পুলিশের গোপন রিপোর্টে ১৭ টি কেন্দ্রের মধ্যে অধিক ঝুকিপুর্ন ৫টি এবং ঝুকিপূর্ণ ৬ সহ মোট ১১ টি কেন্দ্রকেই ঝুঁকিপূর্ণ বলে চিহ্নিত করা হয়েছে।

জানাগেছে, ২৭ হাজার ৫শ’৮৩ জন ভোটার অধ্যুষিত চরফ্যাসন পৌরসভায় ১৭টি কেন্দ্রের মাধ্যমে ভোট গ্রহণ করা হচ্ছে। এখানে মেয়র পদে ৩ জন,সাধারন কাউন্সিলর পদে ২৫ জন এবং সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা  করছেন। ভোটের দিন সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসনের তরফ থেকে নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলার কথা বলা হয়েছে।

গতকাল শনিবার থেকে থেকে নৌ-বাহিনী, বিজিবি, র‌্যাব এবং পুলিশের টহল শুরু হয়েছে। সীমিত হয়ে পড়েছে যানবাহনের চলাচল। সুষ্ঠ নির্বাচন সম্পন্ন করতে সবকিছু মাথায় রেখে প্রশাসনের তরফ থেকে শান্তিপূর্ণ ভোট উৎসব নিশ্চিত করতে সব প্রস্ততি নেয়া হয়েছে বলে সহকারী রিটানিং অফিসার ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো, রুহুল আমিন জানিয়েছেন।

শুক্রবার মধ্যরাত থেকে নির্বাচনের প্রচার-প্রচারনা শান্তিপূর্ণ ভাবেই শেষ হয়েছে। পৌরসভা নির্বাচনের মেয়র পদে ৩ জন প্রার্থী, সাধারন কাউন্সিলর পদে ২৫ জন এবং সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্ধিতা  করছেন। আওয়ামীলীগ ও বিএনপি দলগত ভাবে প্রার্থী সমর্থন দেয়ায় এখানকার ভোট যুদ্ধ মূলতঃ আওয়ামী লীগ ও বিএনপির ভোটযুদ্ধ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। এজন্য দুই দলই দল সমর্থিত প্রার্থীর জয় নিশ্চিত করতে কোমর বেধে ভোটের মাঠে  নেমেছে। ভোটাররাও ভোটের উৎসব উপভোগ করছে।

মেয়র পদে (নৌকা প্রতীক) নিয়ে লড়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ মোরশেদ, (ধানের শীষ প্রতীক) নিয়ে মোহাম্মদ হুমায়ুন করিব,( নারিকেল গাছ প্রতীক) নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ শরিফ হোসেন প্রতিদ্বন্ধিতায় রয়েছেন।

অপর দিকে সাধারন সদস্য কাউন্সিলর পদে পৌর ১নং ওয়ার্ডে (উটপাখি) প্রতীক নিয়ে আবুল খায়ের , (পাঞ্জাবী) প্রতীক নিয়ে মোঃ ফখরুল আলম,২নং ওয়ার্ডে (পাঞ্জাবী) প্রতীক নিয়ে মো. নজরুল ইসলাম কিষান, (পানির বোতল) প্রতীক নিয়ে মো.মফিজ, (উটপাখি) প্রতীক নিয়ে রফিকুল ইসলাম, ৩নং ওয়ার্ডে (পাঞ্জাবী) প্রতীক নিয়ে মো. আবদুল মতিন, (ব্রিজ) প্রতীক নিয়ে মো. নয়ন, (উটপাখি) প্রতীক নিয়ে মো.মঞ্জু, (টেবিল ল্যাম্প) প্রতীক নিয়ে মো. রেজাউল হাসান ও (পানির বোতল) প্রতীক নিয়ে মো. শরিফ, ৪নং ওয়ার্ডে (পানির বোতল) প্রতীত নিয়ে তাপস চন্দ্র দাস, (পাঞ্জাবি) প্রতীক নিয়ে মো. আকতরুল আলম (সামু), (উটপাখি) প্রতীক নিয়ে মো. মেহেদী হাসান ও (ডালিম) প্রতীক নিয়ে শাহ মোহাম্মদ মনজুর হোসেন, ৫নং ওয়ার্ডে (উটপাখি) প্রতীক নিয়ে এ.কে.এম. জাহিদ হোসেন ( সেলিম), (পানির বোতল) প্রতীক নিয়ে মো.আকবর হোসেন, (ডালিম) প্রতীক নিয়ে মো.গিয়াস উদ্দিন ও (পাঞ্জাবি) প্রতীক নিয়ে মো.জয়নুল আবেদীন, ৮নং ওয়ার্ডে (পাঞ্জাবী) প্রতীক নিয়ে মোহাম্মদ তোহা, (উটপাখি) প্রতীক নিয়ে মো.জাহিদুল ইসলাম রাসেল, (ব্লাক বোর্ড) প্রতীক নিয়ে  মো.মোস্তাফা, (পানির বোতল) প্রতীক নিয়ে মো. মোশারেফ হোসেন ও (ডালিম) প্রতীক নিয়ে মো.সিদ্দিকুর রহমান, ৯নং ওয়ার্ডে (উটপাখি) প্রতীক নিয়ে মো. মিজানুর রহমান মঞ্জু ও (পাঞ্জাবী) প্রতীক নিয়ে মো. করিম মুন্সী প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন।

এছাড়াও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ১,২,৩ ওয়ার্ডে (আনারস) প্রতীক নিয়ে ফরিদা পারভীন, (হারমোনিয়াম) প্রতীক নিয়ে ফাতেমা খাতুন , (চশমা ) প্রতীক নিয়ে সুফিয়া খাতুন,৭.৮.৯ ওয়ার্ডে (বলপেন) প্রতীক নিয়ে কমরুন নাহার মঞ্জু, (চশমা) প্রতীক নিয়ে খাদিজা বেগম, (জবা ফুল) প্রতীক নিয়ে জাহানারা বেগম, (আনারস) প্রতীক নিয়ে হোসনে আরা বেগম প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন।

পৌরসভা ৬ নং ওয়ার্ডে সাধারন সদস্য কাউন্সিলর হিসেবে মনির হোসেন ও ৭ নং ওয়ার্ডে মোস্তাহিদুল হক তানভীর বিনা প্রতিদ্বন্তিতায় নির্বাচিত হয়েছেন এবং সংরক্ষিত ৪.৫.৬ ওয়ার্ডে সদস্য পদে রেজওয়ানা পারভীন বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় নির্বাচিত হন।

প্রায় এক মাসের ভোট ভিক্ষা চাওয়ার দৌড়-ঝাঁপ শেষ করে প্রার্থীরা এখন ভোট করুনা চেয়ে ভোটারদের মুখের দিকে তাকিয়ে উদ্বেগ-উৎকন্ঠার অন্তিম সময়ের প্রহর গুনছেন।

উপজেলা নির্বাচন অফিসার মো. রফিকুল ইসলাম জানান, ৫ম ধাপে অনুষ্ঠিত চরফ্যাসন পৌরসভা নির্বাচন প্রথম বারের মতো ভোটিং মেশিনের মাধ্যেমে অনুষ্ঠিত হবে। সুষ্ঠ নির্বাচন করতে ইতিমধ্যেই সকল ভোট কেন্দ্রে কঠোর নিরাপত্তার বেষ্টুনীর আওতায় আনা হয়েছে। পুলিশ ও র‌্যাব, কোষ্টকার্ডের পাশাপাশি প্রতিকেন্দ্র একজন করে ম্যাজিট্রেড দেয়া হয়েছে। ভোট গ্রহনকারী কর্মকর্তাদের ভোটিং মেশিনে ভোট গ্রহনে প্রশিক্ষন দেয়া হয়েছে। বিকালের মধ্যেই ভোটিং মেশিনসহ অন্যান সরঞ্জামাদী নিয়ে প্রত্যেক কেন্দ্রে পৌঁছে যাবে।

চরফ্যাসন থানার ওসি মো. মনির হোসেন মিয়া জানান, কঠোর নিরাপত্তায় পৌর সভার ১৭টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহন হবে। ১৭ টি কেন্দ্রের মধ্যে অধিক ঝুকিপূর্ন ৫টি এবং ঝুকিপূর্ন ৬সহ মোট ১১ টি কেন্দ্রকেই ঝুঁকিপূর্ণ বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। পুলিশ ও র‌্যাব, কোষ্টকার্ডের নিরাপত্তায় ভোট গ্রহন নিশ্চিত করা হবে।

শহিদুল ইসলাম জামাল /ইবি টাইমস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit exceeded. Please complete the captcha once again.

Translate »