টিকা নেয়ায় আগ্রহ, স্বাস্থ্যবিধি মানতে অনীহা

ভোলা প্রতিনিধিঃ ভোলায় শুরুতে করোনার টিকা নিতে অনেকের মধ্যে দ্বিধা থাকলেও কোনো নেতিবাচক পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া চোখে না পড়ায় টিকা গ্রহণে আগ্রহী হয়ে উঠেছে মানুষ। তবে টিকার প্রথম ডোজ নেওয়ার পরই অনেকের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মানায় অনীহা লক্ষ্য করা গেছে। ছেড়ে দিয়েছেন মাস্ক ব্যবহার। হাত ধোয়া বা শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার বিধিও মানছেন না টিকা গ্রহণকারীরা।

চিকিৎসকরা বলছেন, এতে টিকা না পাওয়া মানুষের করোনা সংক্রামিত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে। এমনকি ঝুঁকিতে থাকছেন টিকা গ্রহণকারী নিজেও। কারণ, করোনার বিরুদ্ধে সর্বাধিক অ্যান্টিবডি তৈরি হয় টিকার দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার ১৪ দিন পর। স্বাস্থ্যবিধি উঠে গেলে ফের বিপর্যয় নেমে আসতে পারে। এখন পর্যন্ত কোনো টিকা শতভাগ নিরাপত্তা দেবে বলে প্রমাণিত হয়নি। তাই যিনি টিকা নিয়েছেন তাকেও স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। এ ছাড়া টিকা গ্রহণকারী নিজেকে সুরক্ষিত মনে করলেও তিনি ভাইরাস বহন করতে পারেন। তার হাতে, পোশাকে ভাইরাস থাকতে পারে। তার দেহে ভাইরাস প্রবেশ করলে করোনার উপসর্গ দেখা না গেলেও তিনি অন্যদের সংক্রামিত করতে পারেন। ফলে যারা টিকা পাননি তাদের ঝুঁকি বাড়বে।

চিকিৎসকরা আরও জানান, করোনার টিকা প্রথম ডোজ নেওয়ার তিন সপ্তাহ পর দেহে কিছুটা অ্যান্টিবডি তৈরি হয়। এই অ্যান্টিবডি দেহে ভাইরাসটির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে সহযোগিতা করবে, শতভাগ সুরক্ষা দেবে না। সংক্রামিত হলে হয়তো হাসপাতালে যেতে হবে না, সাধারণ সর্দি-জ্বর হবে। তবে সেটা তিন সপ্তাহ পর। সর্বোচ্চ অ্যান্টিবডি তৈরি হয় দ্বিতীয় ডোজের ১৪ দিনের মাথায়। তাই টিকা নিয়েই নিজেকে সুরক্ষিত মনে করার সুযোগ নেই। যতদিন ৮০ ভাগ মানুষ টিকার আওতায় না আসে আর করোনা সারা বিশ্বে সাধারণ সর্দি-জ্বরে পরিণত না হয়, ততদিন স্বাস্থ্যবিধি মানতেই হবে।

গত ২৭ জানুয়ারি দেশে গণটিকা কার্যক্রম শুরুর পর জেলায় অগ্রাধিকার তালিকায় থেকে টিকার প্রথম ডোজ পাওয়া অনেকের মধ্যেই স্বাস্থ্যবিধি মানায় অনীহা দেখা গেছে। এমনকি টিকা নিতে গিয়ে মাস্ক খুলে ছবি তুলতে দেখা গেছে অনেককে। প্রতিদিনই এমন অনেকের ছবি যুক্ত হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

শহরের সমবায় মার্কেটের একটি কম্পিউটার দোকানে বসে টিকা নেওয়ার গল্প বলতে শোনা যায় এক বেসরকারি কর্মচারীর মুখে। তিনি বলছিলেন, ‘ভ্যাকসিন নিয়েছি। এখন আর মাস্কের কী দরকার? দম বন্ধ হয়ে আসে। এত হাত ধোয়ারও দরকার নেই।থ তিনি জানান, টিকা নেওয়ার পর গত এক সপ্তাহ তিনি মাস্ক ব্যবহার ছেড়ে দিয়েছেন। শুধু অফিসের নির্দেশ মানতে অফিসকালীন মাস্ক ব্যবহার করেন। আগে পকেটে স্যানিটাইজার রাখলেও এখন রাখেন না। জেলা সিভিল সার্জন সৈয়দ রেজাউল করিম বলেন, টিকা নেওয়ার পরেও অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। নিয়মিত হাত পোশাক পরিচ্ছদ ধুতে হবে। সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে চলাচল করতে হবে। টিকা গ্রহণকারী নিজেকে সুরক্ষিত মনে করা ভুল হবে বলেও জানান তিনি

সাব্বির আলম বাবু /ইবি টাইমস

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit exceeded. Please complete the captcha once again.

Translate »