৮ই মার্চ থেকে দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার ঘোষণা
ইউরোপ ডেস্কঃ বৃটিশ সংবাদ সংস্থা বিবিসি জানিয়েছেন, বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন খুব দ্রুত দেশের লকডাউন ও নানাবিধ বিধিনিষেধ তুলে দিতে একটি রোডম্যাপ ঘোষণা করেছেন। প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন গতকাল সোমবার লন্ডনের হাউস অফ কমন্সে লকডাউন শিডিউল উপস্থাপন করতে গিয়ে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী এ কথা জানিয়েছেন এবং রোড ম্যাপ উপস্থাপন করেছেন।
তিনি জানান,চলমান লকডাউনটি ৫ সপ্তাহের মধ্যে ক্রমান্বয়ে উঠিয়ে নেয়া হবে। তবে পূর্বশর্ত হ’ল সংক্রমণের সংখ্যা হ্রাস করার ক্ষেত্রে ইতিবাচক প্রবণতা এবং টিকা দেওয়ার প্রচারণা অব্যাহত থাকতে হবে এবং বিশেষজ্ঞ ও চিকিৎসকদের বর্তমান মিউটেশন ভাইরাস বা পুনরায় কোন মিউটেশন ভাইরাসের আবির্ভাব হ’ল কিনা সেদিকে তীক্ষ্ণ নজর রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন আরও বলেন যে,অত্যন্ত সতর্কতার সাথে আমাদের এই লকডাউন থেকে বের হয়ে আসতে হবে। সেজন্য আমি আজ আপনাদের সামনে একটি রোডম্যাপ বা পরিকল্পনা উপস্থাপন করছি। আমরা লকডাউনের শিথিলতার প্রথমেই আমাদের বাচ্চাদের স্কুলে ফিরিয়ে আনার পদক্ষেপ নিয়েছি। আমরা জানি তাদের পড়াশোনা এবং কল্যাণের জন্য স্কুল খোলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাছাড়াও আমরা প্রিয়জনদের সাথে নিরাপদে পুনরায় মিলিত হওয়ার উপায়গুলিও আমাদের পরিকল্পনায় অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে। আমাদের সিদ্ধান্তগুলি প্রতিটি পদক্ষেপে সর্বশেষতম তথ্যে নেওয়া হবে এবং আমরা এই পদ্ধতির বিষয়ে সতর্ক থাকব যাতে আমরা এ পর্যন্ত যে অগ্রগতি অর্জন করেছি,তা যেন ব্যর্থ না হয়ে যায়। তাই সকলের প্রতি আমার অনুরোধ লকডাউন শিথিলতা বা তুলে নেয়া হলেও আপনারা যার যার জায়গা থেকে যথাযথ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়ে চলাফেরা করবেন যাতে আমাদের পুনরায় পিছনে ফিরতে না হয়।
প্রথম ধাপঃ ৮ ই মার্চ, আগামী ৮ই মার্চ থেকে সমগ্র বৃটেনে সকল স্কুল খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। স্কুলের শ্রেনী কার্যক্রমের পর থাকছে খেলাধূলা করার অনুমতি। এছাড়াও পাবলিক প্লেসে একজন আরেকজনের সাথে দেখা করতে পারবে এবং কেয়ার হোমগুলোতে একজন ভিজিটর প্রবেশের অনুমতি থাকবে। ২৯শে মার্চ থেকে ঘরের বাহিরে দুই পরিবারের সদস্যরা পারস্পরিক দেখা সাক্ষাত করতে পারবে এবং একসাথে দুই পরিবার বা গ্রুপে সর্বোচ্চ ৬ জন একসাথে মিলিত হতে পারবেন। বাহিরের আইটডোর ইভেন্টেও খেলাধূলার অনুমতি থাকবে, যেমন টেনিস কোর্ট, প্রাপ্ত বয়স্ক এবং শিশুরা তাদের বিভিন্ন ইভেন্টে অংশগ্রহণ করতে পারবে।
দ্বিতীয় ধাপঃ ১২ই এপিল, এই ধাপে অপরিহার্য নয় এমন দোকান পাঠ যেমন হেয়ারড্রেসার,বিউটি সেলুন খোলার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। লাইব্রেরী,যাদুঘর,চিড়িয়াখানা এবং জিম খুলতে পারবে তবে বিভিন্ন হাউজহোল্ডের ইনডোরে না মেলামেলার শর্তে। তৃতীয় ধাপঃ ১৭ই মে, এই ধাপে সর্বোচ্চ ৩০ জনের একসাথে মিলিত হওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগের উপর আরোপিত অধিকাংশ বিধি নিষেধ তুলে নেওয়া হবে। পাব রেন্টেুরেন্ট, সিনেমা , থিয়েটার ,কনসাট হল ইত্যাদি খুলে দেওয়া হবে।।এছাড়াও নামাজে জানাজা বা শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে ৩০ জনের বেশী মানুষ অংশগ্রহণ করতে পারবে।
সর্বশেষ ধাপঃ ২১ই জুন, এই ধাপে বিধিনিষেধ শিথিলের সর্বশেষ পর্যায়ে সামাজিক যোগাযোগের উপর সকল ধরনের আইনি প্রতিবন্ধকতা তুলে নেওয়া হবে। নাইট ক্লাব এবং বড় ধরনের উৎসব আয়োজনের অনুমতি থাকবে। এছাড়াও সরকার আশা করছেন বিবাহ ও জন্মদিন ইত্যাদি অনুষ্ঠান আয়োজনের সকল প্রকার বিধি নিষেধ প্রত্যাহার করা হবে। তবে সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর লকডাউন শিথিলের রুপরেখা নির্ভর করছে চারটি শর্তের উপর। ভ্যাকসিন কার্যক্রম পরিকল্পনা মতো অব্যাহত থাকা, ভ্যাকসিনেশনের পর মৃত্যু এবং হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা নিম্নমুখী হওয়া সংক্রমনের হার যাতে হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা বৃদ্বি না পায় এবং নতুন ভ্যারিয়েন্ট যাতে বিধি নিষেধ শিথিলের ক্ষেএে বাধা না হয়। এই চারটি শর্তপূরন হলেই লকডাউন শিথিলের এই রুপরেখা বাস্তবায়ন সম্ভব হবে বলে জোর দিয়ে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন।
কবির আহমেদ /ইবি টাইমস