চরফ্যাসন(ভোলা) : চর কুকরি-মুকরি বন্যপ্রাণ অভয়ারণ্য বা চর কুকরি-মুকরি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য বাংলাদেশের সবচেয়ে বৃহওম দ্বীপ ভোলা জেলায় অবস্থিত একটি সংরক্ষিত বনাঞ্চল এবং বন্যপ্রাণের অভয়ারণ্য।ভোলা শহর থেকে এর দূরত্ব প্রায় ১২০ কিলোমিটার। বঙ্গোপসাগরের উপকন্ঠে মেঘনাও তেতুলিয়া নদীর মোহনায় কয়েকশ বছর আগে জেগে ওঠা চর কুকরি-মুকরিতে এই বনভূমির অবস্থান। এ বনে রয়েছে ১৫ হাজারেরও বেশি হরিণ। এ ছাড়া রয়েছে অতিথি পাখি, লাল কাঁকড়া, বুনো মহিষ, বানর, বনবিড়াল, উদবিড়াল, শেয়াল, বনমোরগসহ নানা প্রজাতির বন্য প্রাণী।
পর্যটকদের জন্য নতুন রূপে সাজানো হয়েছে বঙ্গোপসাগরের কোল ঘেঁষা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলা ভূমি চর কুকরী- মুকরী। যুক্ত করা হয়েছে রেস্ট হাউজ, বনের মাঝে ঝুলন্ত সেতু, জীপ ট্রাকিং, রেস্টিং বেঞ্চসহ নানা প্রকল্প। এসব প্রকল্পে কর্মসংস্থান হয়েছে হাজারো মানুষের। একপাশে সমুদ্র, আরেক পাশে ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল। মাঝখালে বেলাভূমি। দিগন্ত বিস্তৃত অপরুপ এ দৃশ্য-কুইন আইল্যান্ড অব ব্যাঙ্গল নামে পরিচিত ভোলার চর কুকরী- মুকরী।
চরটি পর্যটকদের কাছে আরও আকর্ষণীয় করতে ইকো-ট্যুরিজম প্রকল্পের মাধ্যমে নেয়া হয়েছে নানা উদ্যোগ। তারুয়ার দ্বীপ ও নারিকেল বাগানে পর্যটকদের জন্য ল্যান্ডিং স্টেশন, রেস্টিং বেঞ্চসহ নানা ধরণের সুবিধার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এতে পাল্টে গেছে চর কুকরী- মুকরীর দৃশ্যপট। এ প্রকল্পের কারণে কর্মসংস্থান হয়েছে আড়াই হাজার মানুষের। পর্যটকের আগমন আরও বাড়বে বলে মনে করেন সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক।
ভোলা চরফ্যাসন পরিবার উন্নয়ন সংস্থার ( এফডিএ) নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন জানান, ‘এখানের লোকজন শুধুমাত্র মাছের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলো। এখন তারা বিভিন্নভাবে ইকোটুরিজমের সাথে যুক্ত হয়ে, তাদের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নয়ন হয়েছে।’ ২০১৯ সালে পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশন ১ কোটি টাকা ব্যয়ে ইকো টুরিজম প্রকল্পের আওতায় সাগর ও বনকে নয়নাভিরাম রুপে উপযোগ্য করে তুলতে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করে।
২০২১ সালে সুফল পেতে শুরু করে পর্যটক ও স্থানীয়রা। পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশন-পিকেএসএফ এর সিনিয়র মহা ব্যবস্থাপক ও সমন্বয়কারী ড.আকন্দ মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বলেন,’আমরা চিন্তা করছি ট্রি হাউজ এবং ট্রি রেষ্টুরেন্ট করার। সার্ভিস প্রোভাইডারদের দক্ষতা বাড়াতে হবে। যেহেতু তাদেরকে ফরেনার ডিল করতে হবে।’ সরকারী ও বেসরকারী উদ্যোক্তারা এগিয়ে আসলে চর কুকরী-মুকরী একটি অন্যতম আকর্ষণীয় পর্যটন স্থান হতে পারে বলে মনে করেন জনপ্রতিনিধি।
ভোলা চরফ্যাসন কুকরী-মুকরী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ আবুল হাসেম মহাজন বলেন, ‘পর্যটকদের আবাসিক সমস্যার সমাধান কল্পে আমি উদ্যোগতাদের আহ্বান জানাচ্ছি।’ পর্যটকদের সুযোগ সুবিধা বাড়লে চর কুকরি মুকরি অর্থনীতিতে বিরাট ভূমিকা রাখবেন বলে মনে করছেন অভিজ্ঞ মহল।
জামাল মোল্লা /ইবি টাইমস