ইউরোপ ডেস্কঃ অস্ট্রিয়ান সরকারের বিশ্বস্ত সূত্রের খবরের ভিত্তিতে জাতীয় সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছেন যে,সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন খুব শীঘ্রই অস্ট্রিয়ায় বাহিরে খোলা যাওগায়ও মাস্ক পড়তে হবে। অর্থাৎ সহজ ভাষায় ঘর থেকে বের হলেই FFP2 মাস্ক পরতে হবে।
এখানে উল্লেখ্য যে, অস্ট্রিয়ান সরকার গত ২৫ শে জানুয়ারী থেকে,সমগ্র অস্ট্রিয়া জুড়ে সর্বজনীন পরিবহণের পাশাপাশি সমস্ত খুচরা দোকান এবং সুপারমার্কেটগুলিতে FFP2 মাস্ক পড়া বাধ্যতামূলক করেছে। অস্ট্রিয়ার স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছেন যে,অস্ট্রিয়ায় কোন অবস্থাতেই করোনার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হচ্ছে না। অস্ট্রিয়ার জনপ্রিয় অনলাইন পোর্টাল Oe24plus আজ জানিয়েছেন যে,আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় অস্ট্রিয়ান করোনা কমিশনের সাপ্তাহিক নিয়মিত বৈঠকে রাজধানী ভিয়েনাকে করোনার ট্র্যাফিক লাইট স্যুইচিংয়ে কমলা থেকে পুনরায় সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ “লাল জোনে” স্থানান্তরিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
তবে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় নি। বিভিন্ন পরিসংখ্যান যাচাই বাছাইয়ের পর কমিশনের সদস্যদের ভোটে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হবে। অস্ট্রিয়ান সংবাদ সংস্থা এপিএ সরকারের বিশ্বস্ত সূত্রের খবরের ভিত্তিতে জানিয়েছেন যে,অস্ট্রিয়ার স্বাস্থ্য – মন্ত্রনালয় আজ এক জরুরী চিঠির মাধ্যমে দেশের ৯ টি রাজ্য গভর্নরদের খুব শীঘ্রই বাহিরেও মাস্ক পড়া বাধ্যতামূলক করার নির্দেশনা জানিয়েছেন এবং এর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলেছেন।
চিঠিতে,সরকার “পরিবর্তিত আইনী পরিস্থিতি” সম্পর্কে লিখেছেন,৮ ই ফেব্রুয়ারি থেকে কার্যকর হওয়া লকডাউন শিথিল করার বিষয়টি উল্লেখ করেছেন। তাছাড়াও নতুন আইনে দু’ মিটার দূরত্বে “সাধারণভাবে এবং ধারাবাহিকভাবে বজায় রাখা যায় না” এমন জায়গাগুলিতে মাস্ক লাগানোর জন্য সরকার রাজ্য কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।”বিশেষত, অত্যন্ত ঘন ঘন শপিং স্ট্রিট এবং শহর কেন্দ্রগুলিতে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলগুলিতে” মাস্ক পড়ার প্রয়োজনীয়তা থাকা উচিত।
অস্ট্রিয়ায় মাস্ক পড়া শুধুমাত্র খুচরা দোকান, সুপারমার্কেট এবং গণপরিবহনে বাধ্যতামূলক কিন্ত প্রতিবেশী দেশ সমূহে যেমন, জার্মানি, ইতালি এবং সুইজারল্যান্ডে ঘর থেকে বের হলেই মাস্ক পড়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে । অস্ট্রিয়ায় করোনার সংক্রমণের বিস্তার হ্রাস না পাওয়ায়,সরকার এখন বাধ্য হয়েই প্রতিবেশীদেরই অনুসরণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
অস্ট্রিয়ার জনপ্রিয় দৈনিক পত্রিকা “কুরিয়ার” সরকারের চিঠির ব্যপারে লিখেছেন,সরকারের পক্ষ থেকে“চলমান মহামারী এবং পরিবর্তিত আইনী পটভূমির বিপরীতে, ফেডারেল রাজ্যগুলিকে তাৎক্ষণিকভাবে রাজ্য বা জেলা পর্যায়ে নিয়মকানুন তৈরী করার জন্য আবার অনুরোধ করা হয়েছে, যার অনুসারে বাহিরের সার্বজনীন স্থানে প্রবেশের সময়, সুরক্ষা শ্রেণির এফএফপি 2 (FFP2) মাস্ক বা তার সমতুল্য উচ্চতর মানের মাস্ক পড়া বাধ্যতামূলক। FFP2 মাস্ক ছাড়াও FFP3 অথবা N95 ও ব্যবহার করা যেতে পারে। এই সমস্ত মাস্কগুলি ভাইরাস ছাড়াও বাতাসের বিভিন্ন দূষিত বিপজ্জনক পদার্থ থেকেও শ্বাসযন্ত্র ও ফুসফুসকে নিরাপদ লিখতে সাহায্য করে।
এই সমস্ত মাস্ক ফ্যাব্রিক এবং কাগজের বেশ কয়েকটি স্তর দিয়ে তৈরী এবং ফিল্টারগুলি বিল্ট-ইন রয়েছে বলে বাহির থেকে শরীরে রোগজীবাণূ প্রবেশে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করে। এই মাস্কগুলিকে ফ্যাব্রিক মাস্ক বা সার্জিক্যাল মাস্কের চেয়ে বেশী সুরক্ষিত বলা হয়। মাস্ক পরিধানকারীকে ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে সুরক্ষা দেয় বটে কিন্ত ১০০% নিশ্চিয়তার কথা কেহ দিতে পারবে না। তাই এই সমস্ত মাস্ক পরিধানকারীদের অবশ্যই দূরত্ব এবং স্বাস্থ্যবিধির নিয়মাবলী যথাযথভাবে মেনে চলতে হবে। এই সমস্ত মাস্ক একাধিকবার ব্যবহার করা যায়, তবে বেশ কয়েকবার ব্যবহার করা যেতে পারে। মাঝেমধ্যেই এই মাস্ক অবশ্যই ধুয়ে নেওয়া উচিৎ তবে খেয়াল রাখতে হবে যাতে ফিল্টার ফাংশনটি ধ্বংস না হয়।
কবির আহমেদ /ইবি টাইমস