অস্ট্রিয়া-ইতালি সীমান্তে করোনার নতুন বিধিনিষেধের ফলে সড়ক যোগাযোগে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি

ইউরোপ ডেস্কঃ অস্ট্রিয়া Tirol রাজ্যে দক্ষিণ আফ্রিকার মিউটেশন ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধির ফলে গত শুক্রবার ১২ ফেব্রুয়ারী থেকে এই রাজ্য থেকে বের হতে হলে করোনার নেগেটিভ সার্টিফিকেট প্রদর্শন বাধ্যতামূলক করেছেন। ফলে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর করা নিরাপত্তা বেস্টনি তৈরী করা হয়েছে। প্রতিটি গাড়ির চালক ও সহযাত্রীদের করোনার সার্টিফিকেট চেকের ফলে দীর্ঘ কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।

তাছাড়াও অস্ট্রিয়ায় প্রবেশ করলে পূর্বে অনলাইন রেজিস্ট্রেশন ও করোনার নেগেটিভ সার্টিফিকেট প্রদর্শন বাধ্যতামূলক করার ফলে এই সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের খবর অনুযায়ী অস্ট্রিয়া-ইতালি সীমান্তে প্রবর্তিত নতুন নিয়মের ফলে লরি যান চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। ইউরোপের অন্যতম ব্যস্ততম Tirol রাজ্যের ব্রেনার মোটরওয়ের (Brenner Autobahn) ইতালিয়ান পাশে প্রচন্ড যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।

অস্ট্রিয়ার Tirol রাজ্যে দক্ষিণ আফ্রিকার করোনার মিউটেশন ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের ফলে আরোপিত নতুন বিধিনিষেধের আইন অনুযায়ী রবিবার থেকে,অস্ট্রিয়ায় প্রবেশের পূর্বে অনলাইনে নাম রেজিস্ট্রেশন এবং পূর্ববর্তী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে একটি করোনার নেগেটিভ সার্টিফিকেট প্রদর্শন করে Tirol রাজ্যের ভিতর দিয়ে ট্রানজিট করা পণ্য চালকদের বাধ্যতামূলক করায় এই প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়েছে। এই রাজ্যকে মিউটেশন ভাইরাসের “হটস্পট” ঘোষণা করে জার্মানি এই রাজ্যের সাথে তার সীমানা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরে এই সিদ্ধান্ত এসেছিল।

                                             

পশ্চিম অস্ট্রিয়ার আল্পস পর্বতাঞ্চলের এই Tirol রাজ্য, ইতালি এবং জার্মানির মধ্যে অবস্থিত এবং এই রাজ্যের রাস্তাগুলি ইউরো আন্তঃমহাদেশীয় ট্রানজিট হিসাবে প্রচুর ব্যবহৃত হয়। এই রাজ্যের আঞ্চলিক সরকার এক বিবৃতিতে বলেছে যে, জার্মানি তার সীমান্ত বন্ধ করার ফলে Tirol কে “ইউরোপের গাড়ি পার্ক” রূপান্তরিত করার হুমকি দেওয়া হয়েছিল এবং এটি প্রতিরোধের জন্য ইতালির সাথে ব্রেনার ক্রসিংয়ে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।।নতুন চেকগুলি ইতালির ব্রেনার মোটরওয়েতে উত্তর-পশ্চিম ট্র্যাফিককে অচল করে দিয়েছে। এই সীমান্ত দিয়ে প্রতিদিন অস্ট্রিয়া এবং জার্মানিতে হাজার হাজার লরি আসা যাওয়া করে।

আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা এএফপি ইতালির মিডিয়ার উদ্ধৃতি দিয়ে জানিয়েছে,সোমবার সকাল পর্যন্ত অস্ট্রিয়া ও ইতালির এই সীমান্তের ইতালির অংশে প্রায় ৪০ কিলোমিটার ব্যাপী বিস্তৃত দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। সংবাদ মাধ্যমে আরও বলা হয়েছে, অস্ট্রিয়া থেকে প্রায় ৩০০ থেকে ৪০০ দক্ষিণমুখী যানবাহনের তুলনায় উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে প্রতি ঘণ্টায় ৪০ থেকে ৫০ টি যানবাহন কম আসছে। অস্ট্রিয়া সীমান্তের ২০০ কিলোমিটার দক্ষিণে ইতালির Verona প্রদেশে এই সমস্ত ভারী যানবাহনগুলি থামানো হচ্ছিল যাতে তাদের কাছে সঠিক ভ্রমণ নথি রয়েছে কিনা তা পরীক্ষা করার জন্য এবং বর্তমানে আল্পাইন সীমান্ত পয়েন্টের কাছে তাপমাত্রা এখন -১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি। তাই লরী চালকদের এই বরফ ঠান্ডার মধ্যেই ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে।

ইতালিয়ান কর্তৃপক্ষ পরিস্থিতির দ্রুত সমাধানের জন্য জরুরী ভিত্তিতে উত্তর দিকের চালকদের যাত্রা চালিয়ে যেতে সহায়তার জন্য রাস্তার পাশে করোনভাইরাস পরীক্ষা কেন্দ্র স্থাপন করেছে বলে ইতালির সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে। ইতালির লরি চালকদের সমিতি সহ রোড হাউলিয়ার্স লবী কনফট্রস্পোর্টো- কনফ্যাক্সমারসিও প্রতিষ্ঠান সীমান্তে চরম বিশৃঙ্খলা সম্পর্কে ইতালির নতুন প্রধানমন্ত্রী মারিও দ্রাঘির কাছে এক জরুরী সাহায্যের জন্য আবেদন করেছিলেন।

সমিতির প্রধান পাওলো উগে বলেছেন, অস্ট্রিয়া ও জার্মানি থেকে প্রবেশকারী লরি চালকদের উপরও করোনার টেস্ট চাপিয়ে ইতালির প্রতিশোধ নেওয়া উচিত এবং এই সমস্যার সমাধানে ইউরোপীয় ইউনিয়ন কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করছেন এই নেতা। এদিকে জার্মানি অস্ট্রিয়ার Tirol রাজ্যের সাথে তার সীমান্তে কঠোর বিধিনিষেধ আগামী মার্চ পর্যন্ত বাড়িয়েছেন।

কবির আহমেদ /ইবি টাইমস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit exceeded. Please complete the captcha once again.

Translate »