ইইউর অনুমোদন পেলে অস্ট্রিয়া রাশিয়ার করোনার ভ্যাকসিন Sputnik V ও চীনের ভ্যাকসিনও তৈরী করতে প্রস্তুত

ইউরোপ ডেস্কঃ অস্ট্রিয়ার সরকার প্রধান চ্যান্সেলর (প্রধানমন্ত্রী) সেবাস্তিয়ান কুর্জ রবিবার জার্মানির বিখ্যাত দৈনিক পত্রিকা Bild এর রবিবারের বিশেষ প্রকাশনা Bild am Sonntag এ তথ্য জানান। পত্রিকাটি সেবাস্তিয়ান কুর্জকে প্রশ্ন করেন,অস্ট্রিয়া কি রাশিয়ার।ভ্যাকসিন নিবে কিনা। জবাবে সেবাস্তিয়ান কুর্জ বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের অনুমোদন পেলে আমরা অবশ্যই রাশিয়ান ভ্যাকসিন গ্রহণ করব। অধিকন্ত আমরা ইইউর অনুমোদন পেলে অস্ট্রিয়ায় রাশিয়ান ভ্যাকসিন স্পুটনিক ভি এবং চীনের ভ্যাকসিন তৈরী করতেও প্রস্তুত আছি।

সেবাস্তিয়ান কুর্জ আরও বলেন,রাশিয়া ভ্যাকসিন স্পুটনিক ভি এর কার্যকারিতা যেহেতু প্রমাণিত হয়েছে, তাই এই ভ্যাকসিন গ্রহণে কোন আঞ্চলিক রাজনীতির লড়াই এখানে টেনে আনা উচিৎ হবে না। অস্ট্রিয়ার সরকার প্রধান জোর দিয়ে বলেন,অস্ট্রিয়া রাশিয়ান এবং চীনা ভ্যাকসিনগুলি ইউরোপীয় ইউনিয়ন কর্তৃক অনুমোদিত হলে আমরা  অস্ট্রিয়ার অভ্যন্তরে “অবশ্যই” তৈরীর ব্যবস্থা করার চেষ্টা করব। এই ভ্যাকসিন যেহেতু নিরাপদ ও কার্যকরী তাই রাশিয়া ও চীনের বাহিরে যদি উৎপাদন করা যায়, তাহলে ভ্যাকসিনের স্বল্পতার সমস্যার সমাধান হবে।

তিনি আরও বলেন,অস্ট্রিয়ার প্রতিবেশী দেশ হাঙ্গেরি গত মাসে জরুরী ব্যবহারের জন্য সিনফর্ম দ্বারা তৈরি স্পুটনিক ভি এবং একটি চীনা ভ্যাকসিনকে অনুমোদন দিয়েছে। ব্রাসেলস অবশ্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য দেশগুলিকে ইউরোপীয় মেডিসিন এজেন্সি দ্বারা পরীক্ষিত নয় এমন ভ্যাকসিনের অনুমতি দিতে নিরুৎসাহিত করে।

রাশিয়ান সংবাদ সংস্থা তাস(RT) জানিয়েছেন যে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের শীর্ষ কূটনীতিক, জোসেপ বোরেল শুক্রবার আশা প্রকাশ করে বলেন, ইইউ রাশিয়ান ভ্যাকসিন “স্পুটনিক ভি” অদূর ভবিষ্যতে অনুমোদনের চিন্তাভাবনা করছে। তিনি আরও জানান,”এটি একটি  সুসংবাদ,কারণ আমরা ভ্যাকসিনের ঘাটতির মুখোমুখি হয়েছি। তিনি ইইউর প্রতিনিধি হিসাবে রাশিয়ান কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনার জন্য বর্তমানে মস্কো সফরে রয়েছেন।

অস্ট্রিয়া গত ডিসেম্বর মাস থেকে তার টিকাদান বা ভ্যাকসিন প্রদানের কার্যক্রম শুরু করেছে। বর্তমানে অস্ট্রিয়া ফাইজার / বায়োএনটেক, মোডর্না এবং অ্যাস্ট্রাজেনেকা / অক্সফোর্ড ভ্যাকসিন ব্যবহারের অনুমোদন  দিয়েছে। জানুয়ারীতে ইইউর বেশ কয়েকটি দেশ ফাইজারের চালানের লক্ষ্য পূরণ না  করার বিষয়ে অভিযোগ করেছিল। মার্কিন-ভিত্তিক সংস্থা বলেছে, উৎপাদন প্রক্রিয়া নিয়ে সমস্যার কারনে জানুয়ারীর শেষের দিকে ফেব্রুয়ারীর শুরুতে উৎপাদনে কিছুটা ঘাটতি পড়েছে। তবে ফেব্রুয়ারীর শেষের দিকে এবং মার্চ মাসে পুনরায় উৎপাদন স্বাভাবিক গতিতে ফিরে আসবে।

ফ্রান্স ও জার্মানি গত মাসে ব্রিটিশ-সুইডিশ সংস্থা অ্যাস্ট্রাজেনেকাকে ভ্যাকসিন বিতরণে ব্রিটেনকে অগ্রাধিকার দেওয়ার ফলে ইউরোপের এই শীর্ষ দুই দেশ অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন বয়কটের হুমকি দিয়েছিল। সংস্থাটি বলেছে যে, উৎপাদনের ঘাটতির কারনে ইইউর জন্য তার নির্ধারিত পরিকল্পনা অনুযায়ী সরবরাহ করা সম্ভব হয় নি। ইউরোপীয় কমিশন কর্তৃক ভ্যাকসিন জাতীয়তাবাদ হিসাবে এই ভ্যাকসিন সংগ্রহের সমালোচনা বাতিল করা কি ন্যায়সঙ্গত,  জানতে চাইলে কুর্জ বলেন, “আপনার উচিত সমস্ত কিছু নিয়ে প্রশ্ন করা।” তিনি যুক্তি দিয়েছিলেন সরবরাহের ক্ষেত্রে সমস্যাগুলি মূলত “অনুমোদনের গতি [ভ্যাকসিনগুলির] এবং নির্মাতারা প্রেরণে সমস্যাগুলি” দ্বারা ঘটেছিল। কুর্জ নিশ্চিত করেছেন যে, অস্ট্রিয়া ৮ ই ফেব্রুয়ারী থেকে তার কোভিড -১৯ এর নিষেধাজ্ঞাগুলি কিছুটা শিথিল করবে।”আমরা এই সিদ্ধান্তটি হালকাভাবে করিনি এবং আমরা অত্যন্ত সতর্কতার সাথে এগিয়ে যাচ্ছি,” তিনি বলেন, “আমাদের সতর্কতার এই নীতিও সংক্রমণের সংখ্যা বৃদ্ধির কারণ হতে পারে।”

EuroBanglaTimes

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Translate »