আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ বৃটিশ সংবাদ সংস্থা বিবিসি জানিয়েছেন,মিয়ানমারের জনপ্রিয় নেত্রী অং সান সূচিকে সেনাবাহিনী গ্রেফতার করেছেন। বিবিসিকে এই খবর জানিয়েছেন সূচির দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) জনৈক মুখপাত্র। তিনি আরও জানান,মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট উইন মিন্ট সহ আরও কয়েকজন এনএলডি নেতাকেও গ্রেফতার করেছে সেনাবাহিনী। তাদের এমন সময় গ্রেফতার করা হ’ল যখন বাতাসে সেনাবাহিনীর অভ্যুত্থানের গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিল।
গত বৎসরের নভেম্বর মাসের সাধারণ নির্বাচনে অং সান সূকির এনএলডি দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে বিজয়ী হয় কিন্ত মিয়ানমার সেনাবাহিনী নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তুলেছিলেন। আজ সোমবার ১লা ফেব্রুয়ারী নব – নির্বাচিত সংসদের প্রথম অধিবেশন বসার কথা ছিল। সেনাবাহিনী অবশ্য পূর্বেই এই অধিবেশন স্থগিত করতে সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছিলেন।
বিবিসি আরও জানিয়েছেন যে,তাদের দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সংবাদদাতা জনাথন হেড জানান, মিয়ানমার সেনাবাহিনী দেশের রাজধানী নিপিডো ও প্রধান শহর ইয়াংগুনের রাস্তায় ভারী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে টহল দিচ্ছেন। রবিবার ৩১ শে জানুয়ারী সন্ধ্যা থেকে মিয়ানমারের রাজধানী ও ইয়াংগুনে টেলিফোন ও ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে। মিয়ানমারের স্থানীয় একটি সূত্র আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন যে, সেনাবাহিনী বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদেরও গ্রেফতার করেছেন।
লন্ডন ভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছেন,এনএলডি দলের মুখপাত্র মিও নরেন্ট তাদের মিয়ানমার সংবাদদাতাকে মিয়ানমারের নেত্রী সূচি,প্রেসিডেন্ট মিন্ট ও অন্যান্য নেতাদের গ্রেফতারের খবর নিশ্চিত করেছেন। তিনি তার দলের সদস্য ও দেশের জনগণকে শান্ত থাকার আহবান জানিয়েছেন।
সেনা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ভোটে জালিয়াতির অপরাধে রাজনীতিকদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সেনা-নিয়ন্ত্রিত টিভিতে সামরিক কর্মকর্তারা বলেছেন, এক বছরের জন্য সেনা দেশের শাসনভার নিয়েছে। সেনার কম্যান্ডার-ইন-চিফ জেনারেল মিন অং হ্লেইং নতুন শাসক হয়েছেন। সারা দেশে এক বছরের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে।
অপরদিকে মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুনে সেনা অভ্যুত্থানের সমর্থনে উল্লাস করেছে স্ব-ঘোষিত কিছু জাতীয়তাবাদী গোষ্ঠীর সদস্যরা। তারা সুয়েডাগন প্যাগোডার বাইরে শহীদদের সমাধিস্থলের কাছে গান গেয়ে উল্লাস প্রকাশ করেছে। গত তিন দিন ধরে জাতীয়তাবাদী গোষ্ঠীর সদস্যরা সামরিক বাহিনীর সমর্থনে ইয়াঙ্গুনের বিভিন্ন স্থানে প্রচারণা চালিয়ে আসছে।
এখনো পর্যন্ত পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণই রয়েছে। এর পাল্টা কোন বিক্ষোভ কিংবা অভ্যুত্থান বিরোধী কোন বিক্ষোভ এখনো অনুষ্ঠিত হয়নি।
কবির আহমেদ /ইবি টাইমস