ভোলা: “শেষ বয়সে একখান ভোট দিবার চাই বাজান” কথাগুলো বলছিলেন বৃদ্ধা লুৎফা বেগম। আসন্ন ভোলার বোরহানউদ্দিন পৌরসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। হামলা, কর্মিদের মারধরসহ প্রচার-প্রচারনায় বাঁধা দেয়ার অভিযোগ করেছেন বিএনপির প্রার্থী। তবুও ভোট দিতে চান ভোটাররা।
আগামি ৩০ জানুয়ারি বোরহানউদ্দিন পৌরসভার ভোট। পৌর এলাকার চারদিকে এখন শুধু প্রার্থীদের পোস্টার আর পোস্টার। চলছে প্রার্থীদের মাইকে প্রচারনা। তবে ভোট দেয়া নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে ভোটারদের মাঝে। গত বছর ভোট দিতে না দিয়ে পথ থেকেই ফিরিয়ে দেয়া হয় বোরহানউদ্দিন পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ড এর বাসিন্দা বৃদ্ধা লুৎফা বেগমকে। বয়সের ভারে নুয়ে পড়া এই বৃদ্ধা লুৎফা বেগম বলেন, জীবনের শেষ সময় এসে সুষ্ঠ ভাবে একটা ভোট দেয়ার সুযোগ পেলে জীবনটা স্বার্থক হবে মন্তব্য করেন। তিনি সুষ্ঠ ও শান্তিপুর্ন পরিবেশে ভোট দেয়ার জন্য সরকারের কাছে আবেদন করেছেন।
উপজেলা নির্বাচনী কর্মকর্তা ও সহকারি রিটার্নী কর্মকর্মা মো: সহিদুল্লাহ এর অফিসে সাংবাদিকদের সামনে প্রকাশ্যে অভিযোগ করেন ১নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী মুজাহিদুল ইসলাম সুজন হাওলাদার। তিনি বলেন, তার প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী হারুন-অর-রশিদ তার প্রচার-প্রচারনায় বাঁধা দেয়াসহ কর্মীদের হুমকি দিচ্ছে। এ বিষয়ে কাউন্সিলর প্রার্থী হারুন-অর-রশিদ তার বিরুদ্ধের অভিযোগ অস্বীকার করে পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থী সুজনসহ তার নেতা-কর্মীরা মটরসাইকেল নিয়ে রাস্তায় শো-ডাউন দিচ্ছে আর কর্মীদের হাত-পা কেটে ফেলার হুমকি দিয়ে যাচ্ছে।
প্রচার-প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছেন ধানের শীষ নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেয়া বিএনপি প্রার্থী মো. মনিরুজ্জামান। লিফলেট বিতরন আর কোলাকুলী করে ভোটারদের কাছে নিজের জন্য ভোট চাচ্ছেন। তবে হামলা, কর্মীদের মারধর আর প্রচার-প্রচারনায় বাঁধা দেয়ার কথা জানিয়ে বলেন, আতংকে আছেন তিনিসহ তার কর্মীরা। সুষ্ঠ ভোটের জন্য সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি।
অপরদিকে শতাধিক নেতা-কর্মীদের সাথে নিয়ে লিফলেট বিতরন, উঠান বৈঠকসহ নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রচার-প্রচারনায় বেশ এগিয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এবং বর্তমান মেয়র মো: রফিকুল ইসলাম। উন্নয়নের কথা তুলে ধরে এই ধারা অব্যাহত রাখতে ভোট চাচ্ছেন ভোটারদের কাছে। তবে বিএনপি প্রার্থীর করা অভিযোগ সম্পর্কে বলেন, ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব রাজনৈতিক রুপ দিতে চায় বিএনপির নেতা কর্মীরা। নির্বাচনী পরিবেশ রয়েছে জানিয়ে বলেন, বিএনপি এবং জামায়াত সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীও প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছে। সুষ্ঠ নির্বাচনে তিনি বিজয়ী হবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
জেলা নির্বাচন এবং রিটার্নী কর্মকর্তা মো: আলাউদ্দিন আল মামুন বলেন, এখন পর্যন্ত কোন প্রার্থী লিখিত ভাবে অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়া নির্বাচন সুষ্ঠ ও শান্তিপুর্ন পরিবেশে করার জন্য আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সাথে সভা করা হয়েছে। সুষ্ঠ নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, বোরহানউদ্দিন পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে লড়াই করছেন বিএনপি, আওয়ামী লীগ মনোনীতসহ একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছেন। সংরক্ষিত একটি ও সাধারন দুইটি ওয়ার্ডের একজন করে প্রার্থী থাকায় তারা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। ৯টি ওয়ার্ডের ১০ হাজার ৭১৬ ভোটার ভোট দিয়ে তাদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করবেন।
সাব্বির আলম বাবু / টাইমস