জলবায়ু পরিবর্তন সচেতনতা বৃদ্ধি ও উদ্ভুদ্ধকরণে চরফ্যাশন নুরাবাদ ইউনিয়নে অভিযোজন মেলা অনুষ্ঠিত

চরফ্যাশন (ভোলা) : জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে এদেশের কৃষি- কৃষকের অভিযোজন ও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জন এবং জলবায়ু পরিবর্তন সচেতনতা বৃদ্ধি ও উদ্ভুদ্ধকরণে ভোলা জেলার চরফ্যাশন উপজেলায় অভিযোজন মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শনিবার (২৩ জানুয়ারি ) সকাল১০.০০ ঘটিকার সময় চরফ্যাশন উপজেলার নুরাবাদ  ইউনিয়নের দুলারহাট মাধ্যমিক  বিদ্যালয় মাঠে  ইউনিসেফ এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায়, কোস্ট-ট্রাস্ট এর বাস্তবায়নে চরফ্যাশন উপজেলা জলবায়ু ফোরাম এর আয়োজনে ইয়ুথ  পাওয়ার ইন বাংলাদেশ টিমের  পরিচালনায় স্থানীয় জনগনের অভিযোজন সক্ষমতা বৃদ্ধিতে কিশোর কিশোরী ক্লাব গুলোকে  শক্তিশালীকরণ এবং শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের সুরক্ষা ত্বরান্বিতকরণ (এপিসি) প্রকল্পের পৃষ্ঠপোষকতায় এ মেলা অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠিত মেলার দ্বিতীয় পর্যায়ে উপস্থিত কিশোর-কিশোরীদের মাল্টি মিডিয়ার মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তন সচেতনতা বৃদ্ধি ও উদ্বুদ্ধকরণের লক্ষ্যে–জলবায়ু ও পরিবেশ বিষায়ক সচেতনতামূলক ভিডিও দেখানো , টেকসই উন্নয়ন মূলক প্রজেক্ট তৈরি , চিত্র অংকন ইত্যাদির মাধ্যমে উপস্থিত সকলকে সচেতন করা হয়। এবং কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।

মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নুরাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান  জনাব আলহাজ্ব আনোয়ার হোসেন মিয়া, অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইয়ুথ  পাওয়ার ইন বাংলাদেশ টিমের উপদেষ্টা, চরফ্যাশন উপজেলা জলবায়ু ফোরামের সহ-সভাপতি  মনির আসলামি,  বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দুলারহাট থানা অফিসার্স ইনচার্জ জনাব  মোঃ মুরাদ হোসেন, নুরাবাদ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হোসেন মিয়া, চরফ্যাশন উপজেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সুমন মাতাব্বর,  নুরাবাদ ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ন আহবায়ক মোঃ নাসিম।

অনুষ্ঠিত অভিযোজন মেলার  উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ভোলা জেলা কোস্ট-ট্রাস্ট এর টিম লিডার মোসাঃ রাশিদা বেগম,(এপিসি) প্রকল্পের চরফ্যাশন উপজেলার  প্রজেক্ট অফিসার সঞ্জয় কুমারের সঞ্চালনায়- উপস্থিত বক্তারা বলেন,

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়েছে কৃষি ক্ষেত্রে। কৃষি নির্ভর অর্থনীতির দেশগুলোতে পড়ছে বিরূপ প্রভাব। বেঁচে থাকার জন্য মানুষকে নানা রকম প্রতিকূলতার সঙ্গে সংগ্রাম করতে হয়। বর্তমান সময়ের সবচেয়ে বড় প্রতিকূলতা বা হুমকি হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তন।

এই পরিবর্তনে জনসংখ্যার যে অংশটি সবচেয়ে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন, তারা হচ্ছে দরিদ্র জনগোষ্ঠী। সমুদ্র তীরবর্তী ভৌগোলিক অবস্থান, মাত্রাতিরক্ত জনসংখ্যা, অপ্রতুল প্রাকৃতিক সম্পদ এবং এর ওপর অধিক নির্ভরশীলতা ইত্যাদি কারণে বাংলাদেশের বিপন্নতা খুবই ভয়াবহ। ঘূর্ণিঝড় এবং বন্যার সঙ্গে উষ্ণতা বৃদ্ধির একটা সম্পর্ক আছে। উষ্ণায়নের কারণে জলবায়ু ব্যবস্থায় পরিবর্তন ঘটে যায়। এতে নানা ধরনের দুর্যোগ বেড়ে যায়। এবারের কয়েক দফা বন্যার জন্য জলবায়ু পরিবর্তনকে দায়ী করা যায়।

তাছাড়া জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ঘন ঘন, দীর্ঘমেয়াদি, রেকর্ড ভঙ্গকারী আর ভয়াবহ বন্যা-ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস আছে। এবারের বন্যার প্রকৃতি আর গত কয়েক বছরের বন্যা-ঘূর্ণিঝড় ও অন্যান্য দুর্যোগের রেকর্ডও সেটাই প্রমাণ করছে।  জলবায়ু পরিবর্তনের সম্ভাব্য ক্ষতির হাত থেকে বাংলাদেশকে রক্ষার জন্য সর্ব স্তরের জনগোষ্ঠীকে সচেতন করা একান্ত প্রয়োজন।

তরুণদের সম্পৃক্ততা ছাড়া টেকসইভাবে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা করা সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন বক্তারা । তারা বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা নীতি নির্ধারণ ও বাস্তবায়নে তরুণদের সস্পৃক্ততার কোনো বিকল্প নেই।

এজন্য বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি রোধে বাংলাদেশসহ বিশ্বের যুব সমাজকে জলবায়ু পরিবর্তন, অভিযোজন ও গ্রিন হাউস নির্গমন কমিয়ে আনতে ব্যক্তিগত ও সামষ্টিকভাবে এগিয়ে আসতে হবে। একইসঙ্গে সরকারের গৃহীত কার্যক্রমে যুবদের সক্রিয় অংশগ্রহণে সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে।

মোঃ তরিকুল ইসলাম /ইবি টাইমস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit exceeded. Please complete the captcha once again.

Translate »