ইতালি,প্রতিনিধিঃ ইতালির প্রধানমন্ত্রী জিউসেপ্প কন্তের সরকার সোমবার সংসদের নিম্নকক্ষে প্রথম আস্থাভাজন হ্যাঁ ভোটে ৩২১ টি ভোট পেয়ে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছিলেন। কিন্ত মঙ্গলবার সংসদের উচ্চ কক্ষের সিনেটের আস্থাভাজন হ্যাঁ ভোট ১৫৬ ভোট পেয়ে জয়লাভ করলেও একক নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে ব্যর্থ হয়েছেন। ৩২১ আসনের উচ্চ কক্ষের সিনেটের ভোটে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজন ছিল ১৬১ টি ভোটের।
উল্লেখ্য যে,গত ১৩ জানুয়ারী ইতালির বহুদলীয় কোয়ালিশন সরকার থেকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী মাত্তেও রেঞ্জির ছোট দল “ইটালিয়া ভিভা” সমর্থন প্রত্যাহার করে মন্ত্রী পরিষদ থেকে ২ জন পূর্ণ মন্ত্রী এবং স্টেট সেক্রেটারি পদত্যাগ করলে সরকার সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়ে ফেলে। এর ফলে ইতালির সংবিধান অনুযায়ী জিউসেপ্প কন্তের সরকার সংসদের নিম্নকক্ষ ও উচ্চ কক্ষের সিনেটের আস্থাভাজন ভোটের মুখোমুখি হন।
মঙ্গলবার ইতালির প্রধানমন্ত্রী জিউসেপ্পে কন্তে সিনেটে দ্বিতীয় আস্থাভাজন ভোটে জয়লাভ করে একটি বড় ধরনের রাজনৈতিক সঙ্কট থেকে উদ্ধার পেলেও সরকারের ভবিষ্যত এখনও অনিশ্চিত রয়েছে। কন্তের সরকার সংসদে আস্থা অর্জনের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ ভোটে বেঁচে গিয়েছে, তবে তাঁর জোট সরকার সম্পূর্ণ বা নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনে ব্যর্থ হওয়ার পরে দুর্বল হয়ে পড়েছে।
মঙ্গলবার তারা সংসদের উচ্চ কক্ষের সিনেটে ১৫৬ ভোটে জিতেছে। তবে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য দরকার ছিল ১৬১ ভোটের। প্রধানমন্ত্রী জিউসেপ্প কন্তের সরকারের বিপক্ষে না ভোট পড়েছে ১৪০ টি এবং ভোটে অনুপস্থিত ছিলেন ২৫ জন সিনেট সদস্য। এখানে উল্লেখ্য যে,ইতালির সংসদের উচ্চ কক্ষের সিনেটের মোট সদস্য সংখ্যা ৩২১ জন এবং নিম্নকক্ষের ডেপুটিদের সংখ্যা ৬৩০ জন। ইতালির প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মাত্তেও রেঞ্জি গত সপ্তাহে নিজের ইটালিয়া ভিভা দলকে সরকার থেকে প্রত্যাহার করার পর বর্তমানে ইতালির জনপ্রিয় প্রধানমন্ত্রী জিউসেপ্প কন্তে তাঁর জোট সরকারকে ক্ষমতায় থাকার সুযোগ দেওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে বিরোধী সংসদ সদস্যদের সমর্থন চাইছিলেন। অবশেষে অনেক বিরোধী সিনেট সদস্যের হ্যাঁ ভোটের কারনে তারঁ সরকার আপাতত টিকে গেল।
সিনেটের ভোটে জয়লাভ করার পর পরই এক টুইট বার্তায় কন্তে বলেন,”সরকার সিনেটের আস্থা পেয়েছে। এখন এই আস্থা অর্জনকে আরও দৃঢ় করার লক্ষ্য নিয়ে এক মিনিটও সময় নষ্ট না করে আমাদের কাজে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।” সিনেটের উচ্চ কক্ষে জয়লাভের পর ইতালির পররাষ্ট্রমন্ত্রী লুইগি ডি মাইও এক ফেসবুক স্ট্যাটাসের মাধ্যমে বলেন,জীবনের সবচেয়ে সঙ্কটময় মুহুর্তে যখন সবাই ঘাবরিয়ে যায়,তখন সবচেয়ে বেশী ও প্রথমে জরুরী সকলের ঐক্যবদ্ধতা। সরকার উচ্চ কক্ষের সিনেটে যে আস্থা অর্জন করেছে – এমন একটি ভোট যা আমাদের দেশের জন্য খুব কঠিন সময়ে আসে – যারা দায়িত্ব গ্রহণ করে তাদের ঐক্যবদ্ধ করে। যারা এমন সময়ে ইতালিকে সমর্থন করার গুরুত্ব বুঝতে পেরেছেন এবং যাদের এক এবং একমাত্র লক্ষ্য: পুনর্গঠনের জন্য কাজ করা। যখন আমাদের কেবল সহযোগিতা প্রয়োজন তখনই আমরা আরেকটি বড় বাধা অতিক্রম করেছি। আজকের ভোটের পরে আমরা আরও দৃঢ়তা অর্জন করতে পেরেছি। এই জয়ের ও সমর্থনের অনুপ্রেরণা অনুপ্রাণিত হয়ে আরও বেশি শক্তি নিয়ে সামনে এগিয়ে যাবো দেশের জন্য সর্বোচ্চ সেবা প্রদানের জন্য। করোনার জন্য জরুরী অবস্থা ও লকডাউনের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের নতুন রিফ্রেশমেন্টের সাহায্যে ৩২ বিলিয়ন বাজেটে এখন আমরা তাদের কাছে দ্রুত পৌঁছে দেবার ব্যবস্থা করবো।
ইয়াসমিন পুতুল/ ইবি টাইমস