সাবেক প্রতিমন্ত্রী খালেদুর রহমান টিটোর ইন্তেকাল

যশোরঃ সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও যশোর-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য খালেদুর রহমান টিটো (৭৬) ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

রোববার(১০ জানুয়ারি) দুপুরে যশোর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তিনি বেশ কিছুদিন ধরে বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন।

খালেদুর রহমান টিটো’র বড় ছেলে মাশুক হাসান জয় জানান, কিছুদিন ধরে তার পিতা অসুস্থ ছিলেন। গত বৃহস্পতিবার (৭জানুয়ারি) তাঁকে যশোর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায়  দুপুরে তিনি মারা যান।

পারিবারিক সূত্র জানায়, বেশ কিছুদিন ধরেই সাবেক প্রতিমন্ত্রী খালেদুর রহমান টিটো অসুস্থ ছিলেন। গত ১৯ নভেম্বর তিনি নিজ বাসভবনে হঠাৎ গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে ভর্তি করা হয়। পরদিন এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে তাঁকে ঢাকার বারডেম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে পরীক্ষা নীরিক্ষার পর ধরা পড়ে  তাঁর ফুসফুসে পানি জমেছে। সেই অনুযায়ী চিকিৎসা দেয়ার পর তাঁর অবস্থার উন্নতি হয়। পরে তিনি যশোর শহরের বাড়ি ফিরে আসেন। এরপর বাড়িতেই তাঁর চিকিৎসা চলছিল।

কয়েকদিন আগে তিনি আবার অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে ভর্তি করা হয়। গত বৃহস্পতিবার সেখান থেকে তাঁকে যশোর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে নেয়া হয়। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি সেখানে আইসিইউতে ছিলেন।

মৃত্যুকালে তিনি তিন ছেলেসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ খালেদুর রহমান টিটো ১৯৪৫ সালের ১ মার্চ কোলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মরহুম এ্যাডভোকেট হবিবুর রহমান। মাতা মরহুম করিমা খাতুন। সাত ভাইবোনের মধ্যে তিনি ছিলেন দ্বিতীয়। খালেদুর রহমান টিটো রাজনৈতিক পরিমন্ডলের মধ্য দিয়ে বেড়ে উঠেছেন।

১৯৬৩ সালে যশোর এম.এম. কলেজ সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ইউনিয়নে সম্পৃক্ততার মধ্য দিয়ে রাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে জড়িত হন। ১৯৬৭ সাল পর্যন্ত তিনি ছাত্র ইউনিয়নের রাজনীতি করেন। ১৯৬৭ সালে কলেজের লেখাপড়া শেষে করে তিনি শ্রমিক রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। পরে শ্রমিক রাজনীতি থেকে বের হয়ে কৃষক আন্দোলনে যোগ দেন। ১৯৮৫ সালে জাতীয় পার্টি গঠিত হওয়ার পর ১৯৮৬ সালে তিনি জাতীয় পার্টি পক্ষ থেকে সংসদ সদস্য  নির্বাচিত হন। ১৯৯০ সালের মে মাসে তিনি শ্রম ও জনশক্তি প্রতিমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। সরকার পতনের ফলে ১৯৯১ সালে তাঁকে জেলে যেতে হয়। ১৯৯৬ সালে নির্বাচনের আগ মুহূর্ত পর্যন্ত তিনি এ দায়িত্ব পালন করেন। পরে তিনি বিএনপিতে যোগদান করেন। কিন্তু ২০০১ সালের নির্বাচনে তিনি মনোননয়ন না পাওয়ায় নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান। পরে তিনি বিএনপি থেকে পদত্যাগ করেন।
২০০৬ সালে খালেদুর রহমান টিটো’আওয়ামী লীগে যোগদান করেন। ২০০৮ সালের ২৯ জানুয়ারি সংসদ নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

যশোর প্রতিনিধি/ইউবি টাইমস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit exceeded. Please complete the captcha once again.

Translate »