সাব্বির আলম বাবু, ভোলা:“আমি আর কত বয়স হইলে বয়ষ্ক ভাতা পাইমু। এমনে আর চলতে পারি না।” কাতর কণ্ঠে ইউরোবাংলা টাইমসের প্রতিনিধিকে দেখে কথাগুলো বলছিলেন ১০৫ বছরের বৃদ্ধ মো. সৈয়দ আহমেদ।
ভোলা জেলার লালমোহন উপজেলার কালমা ইউনিয়নের চরলক্ষ্মী এলাকার বছুরুদ্দীন বাড়ি তার। এতো বছর বয়সেও সৈয়দ আহমেদের ভাগ্যে জোটেনি সরকারি কোনো সহযোগিতা। হতদরিদ্র সৈয়দ আহমেদ থাকেন হোগলা পাতার ছাউনি দেয়া একটি ঘরে। যার ভেতর নেই চৌকি, মাটিতেই ঘুমাতে হয় তাকে। কোনো শীতবস্ত্র না থাকায় তীব্র শীতে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন তিনি। অসহায় হওয়ার পরেও স্থানীয় চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যদের নজরে পড়েননি সৈয়দ আহমেদ। সে কারণেই হয়তো ১০৫ বছরেও সৈয়দ আহমদের ভাগ্যে জোটেনি বয়স্ক ভাতা বা সরকারি সহযোগিতা।
তিন ছেলে ও তিন কন্যা সন্তানের জনক তিনি। দিনমজুরের কাজ আর প্রতিবেশীদের সহযোগিতা নিয়ে মেয়েদের বিয়ে দিয়েছেন। ছেলে থাকলেও বিয়ে করে ভিন্ন সংসার পেতেছেন। যে যার মতো ব্যস্ত নিজেদের সংসার নিয়ে। সবকিছুর পরেও ছেলে ইউনূছ ও আব্দুল আলী ইটভাটায় কাজ করে নিজেদের সংসারের খরচ মিটানোর পরে বাবাকে কোনো মতে তিন বেলা খাওয়াচ্ছেন। তবে সরকারিভাবে তাদের বাবা কোনো সহযোগিতা না পাওয়ায় হতাশ তারাও।
তাদের প্রশ্ন আর কতো বয়স হলে তার বাবার ভাগ্যে সরকারি সহযোগিতা জুটবে। সৈয়দ আহমদের ছোট ছেলে মো. ইউনূছ বলেন, বাবা কানে শুনতে পান না। আবার এখন বয়স হয়েছে, তাই বয়সের ভারে চলতেও পারেন না ঠিকমত। আমরা যা রোজগার করি তা দিয়ে নিজেদের পরিবার নিয়ে চলতেই কষ্ট হয়। তবুও চেষ্টা করি বাবাকে অন্তত তিন বেলা খাওয়াতে। তবে অনেক সময় পারি না। বাবা যে ঘরে থাকে তা মানুষ কেন- গোয়াল ঘর হিসাবেও ব্যবহার করার উপযুক্ত নয়। যেখানে বৃষ্টি হলেই পানি পড়ে ঘরের ভেতরে। তবুও বাঁচার জন্য সেখানেই থাকছেন তিনি। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে সন্তানদের দাবি বাবাকে একটি ঘর ও বয়স্ক ভাতার কার্ড প্রদানের।
সাব্বির বাবু/ইউবি টাইমস/আরএন/০৭.০১.২১