চরফ্যাশন, ভোলা : চরফ্যাসন সরকারি কলেজের অফিস সহায়ক গৃহবধু খাদিজা নাসরিনের মৃত্যুর ১মাস ৮ দিন পর হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।
ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে শ্বাসরোধ করে হত্যার প্রমান পাওয়ার পর বৃহস্পতিবার রাতে নিহতের ভাই রুবেল বাদী হয়ে স্বামী কামাল দেওয়ানসহ ৬ জনকে আসামী করে চরফ্যাসন থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
গত বুধবার ৩০ ডিসেম্বর ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে শ্বাসরোধ করে হত্যার প্রমান পাওয়ার গেছে বলে চরফ্যাসন থানার ওসি মনির হোসেন এ তথ্য চিশ্চিত করেছেন। গত ২২ নভেম্বর পুলিশ স্বামীর বসত ঘরের দরজা বন্ধ শোয়ার ঘর থেকে নিহতের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেন। তখন থেকেই নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে তাকে স্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে অভিযোগ করে আসছেন। থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠান । ১ মাস ৮ দিন পর ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে শ্বাসরোধে হত্যার প্রমান পাওয়ায় পুলিশ এঘটনায় হত্যা মামলা রুজু করে।
নিহতের পরিবার এবং মামলা সুত্রে জানাযায়, দেড় বছর আগে পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের আবুল হোসেন দেওয়ানের ছেলে কামাল দেওয়ানের সাথে নাছরিন খাদিজার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই স্বামীর পরিবারের সদস্যরা যৌতুক দাবী করে আসছিলেন। এনিয়ে তাদের দাম্পত্য কলহ চলছিলো। স্বামীর পরিবারের দাবীকৃত যৌতুকের ওই টাকা না দেয়ায় নাছরিন খাদিজাকে নির্যাতন করতেন স্বামীসহ তার পরিবারের সদস্যরা।
গত ২২ নভেম্বর (শনিবার) নাসরিন খাদিজার একটি নবজাতক শিশুর জম্ম হয়। পরদিন ২৩ নভেম্বর (রোববার) বিকালে ১ দিন বয়সী নবজাতক শিশুসহ নাছরিনকে হাসপাতাল থেকে স্বামীর বাড়িতে নেয়ার পথে নাসরিন নবজাতক শিশুকে নিয়ে স্বামীর বাড়িতে না গিয়ে বাবার বাড়ি যেতে চাইলে এনিয়ে স্বামীসহ তার পরিবারের সদস্যদের মধ্যে তর্কবিতর্ক হয়। এর জের ধরে ওই দিন বিকালে খাদিজা নাসরিনকে স্বামীসহ তার পরিবারের সদস্যরা স্বামীর বাড়িতে দফায় দফায় মারধর করেন। মারধরে অসুস্থ হয়ে পরলে রাতে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর লাশ বসত ঘরের ফ্যানের সাথে ঝুলিয়ে রেখে স্বামীর পরিবারের সদস্যরা পুলিশকে খবর দেয়।নবজাতক শিশু সন্তানকে নিয়ে বাবার বাড়ি না যেতে পেরে অভিমানে খাদিজা নাছরিন আত্মহত্যা করেছেন বলে স্বামীর পরিবারের সদস্যরা জানান দেন। পরে চরফ্যাসন থানা পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করেন এবং এঘটনায় অপমৃত্যু মামলা নেন। মৃত্যুর ১মাস ৮দিন পর ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে শ্বাসরুদ্ধকরে হত্যার প্রমান পাওয়ায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।
চরফ্যাসন থানার ওসি মনির হোসেন মিয়া জানান,নিহতের লাশ উদ্ধারের পর ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছিলো। ময়না তদন্ত রির্পোট স্বাসরোধে হত্যার প্রমান পাওয়ায় হত্যা মামলা নেয়া হয়েছে।
নোমান সিকদার/ইউটাইমস/আরএন/০১.২১