স্পেন থেকে,বকুল খানঃ ইউরোপের সোনা ঝরা ,ঝলমলে সূর্যের আলোর দেশ বলা হয় স্পেন|তুষার ,কুয়াশা আর মেঘলা আবহাওয়ায় যখন পুরো ইউরোপ আচ্ছন্ন । কনকনে সেই শীতের মাঝেও স্পেনের সূর্যের আলোর ঝিলিক আলোকময় দিন আকৃষ্ট করে দারুন ভাবে পর্যটক ভ্রমণ পিপাসুদের । সেই জলমলে আলোর এবং রি রি মৃদু হাওয়ার নান্দনিক সৌন্দর্যের দেশ স্পেন ।
নতুন একটি স্বপ্ন নিয়ে ২১ সাল পদার্পণ করছে । দীর্ঘ ১০মাসের বিধ্বস্ত, জনজীবন ,করোনাভাইরাসের সংকটকালীন সময় পেরিয়ে নতুন একটি উদ্যমে আলোয় আলোকিত করার সঞ্চার করে দিলো করোনার ভ্যাকসিন তবে যুক্তরাজ্যের নতুনভাবে করোনাভাইরাস এর ধরন দেখা দেওয়ায় কিছুটা সংশয় নিয়েই নতুন বছর , নতুন ভাবে সাজাতে চায় স্পেন । সবকিছু ছাপিয়ে করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন এর প্রাপ্তি স্বস্তি এবং স্পেনের স্বাভাবিক ছন্দে ও উদ্যমে ফিরে আসার আনন্দের সুবাতাস বইতে শুরু করেছে ।
এখনো স্পেনের করোনাভাইরাস অনেকটা নিয়ন্ত্রিত রয়েছে ।পার্শ্ববর্তী দেশ জার্মান ,ইতালি, ফ্রান্সের তুলনায় স্পেনে করোনা ভাইরাসের তৃতীয় ঢেউ মোকাবেলায় কঠোর প্রুস্তুতি নিয়েছে । ভ্যাকসিন ফাইজার গত ২৬ ডিসেম্বর রাত ৭:২৯ মিনিটে গুয়াদালাখারার একটি সংরক্ষণ কেন্দ্রে এসে পৌঁছেছে । ২৭ ডিসেম্বর রবিবার সকাল ৮ ঘটিকায় স্পেনের গুয়াদালাখারার লস অলমোতে একটি বয়স্ক সেন্টারের ৯৬ বছর বয়সী আরাসেলি রোসারিও নামের এক বৃদ্ধা হয়েছেন স্পেনের প্রথম কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন গ্রহীতা । একই সাথে একই সেন্টারের মনিকা নামের এক স্বাস্থ্যকর্মীও ভ্যাক্সিন গ্রহণ করেন।
তিন সপ্তাহের ব্যবধানে তাদের দেওয়া হবে ভ্যাক্সিনের দ্বিতীয় ডোজ। প্রথমে বয়স্ক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের থেকে শুরু করে পর্যায়ক্রমে সকল বয়সী মানুষদের দেওয়া হবে এই ভ্যাকসিন | একই সময় বার্সেলোনার হসপিটালে নার্সিং হোম ফেইসা ইয়ারগার কর্মকর্তাদের উপর প্রয়োগ করা হয়েছে। পাশাপাশি স্পেনের আরোও ৮টি অঞ্চলেও ভ্যাকসিনর প্রয়োগ করা হবে বলে জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী আলবা ভের্গেস। চীনের উহান থেকে ইউরোপে প্রথম আঘাত হানে ইতালি । মার্চের মাসে দিনের পর দিন আর্মির ট্রাকে লাশের মিছিল । স্পেনে পদধ্বনি শুনতে শুনতে আঘাত হানে করোনা ভাইরাস, লন্ডভন্ড করে দেয় স্পেনের স্বাস্থ্য বিভাগ ।
স্পেনের স্বাস্থ্যব্যবস্থা ইউরোপ ছাড়াও পৃথিবীব্যাপী বিভিন্ন জরিপেব পর্যবেক্ষণে প্রথম সারিতে ছিলো । করোনার তান্ডব মোকাবেলায় স্বাস্থ্য ব্যবস্থা মুখ থুবড়ে পড়ে । ইউরোপের সবচেয়ে দীর্ঘ সময়ের লকডাউন (কোয়ারেন্টাইন )ছিলো গোটা স্পেন জুড়ে । যার স্থায়িত্বকাল ছিল প্রায় ছয় মাস । সেই দুঃস্বপ্ন পথ পাড়ি দিয়ে, উঠে দাঁড়াচ্ছে স্পেন । আগামী মে পর্যন্ত প্রায় ৪৫ লক্ষ ভ্যাকসিন টার্গেট নিয়ে প্রতি সপ্তাহে সাড়ে তিন লক্ষ ভ্যাকসিন স্পেনে আমদানি করা হবে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ ।
বাইশ লক্ষ নাগরিককে দুই ডোজ করে প্রদান করা হবে । এই ভ্যাকসিন টি প্রথমে বয়স্ক কেন্দ্রে নাগরিকদের এরপর চিকিৎসা সেবা কর্মী ,আইন শৃঙ্খলাবাহিনী ,প্রথমসারিতে থাকা সেবা কর্মী ,ষাটোর্ধ্ব জটিল রোগে আক্রান্ত নাগরিক,সাধারণ নাগরিক এবং সর্বশেষ শিশুদেরকে প্রদান করা হবে । প্রত্যেক নাগরিককে সম্পূর্ণ বিনামুল্য ভ্যাকসিন গ্রহণের সুযোগ পাবেন এবং এ কর্মসূচি ধারাবাহিক অব্যাহত থাকবে ।