দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে আগত সকল যাত্রীবাহী বিমানের অবতরণ নিষিদ্ধ করলো অষ্ট্রিয়া

আন্তর্জাতিক ডেস্ক থেকে,কবির আহমেদঃ  অস্ট্রিয়ান সংবাদ সংস্থা এপিএ জানিয়েছেন,দক্ষিণ আফ্রিকায় বৃটেনের করোনার নতুন ভাইরাস ব্যাপক ছড়িয়ে পড়ায় সরকার আগামীকাল ৩০ ডিসেম্বর থেকে ১০ জানুয়ারী পর্যন্ত দক্ষিণ আফ্রিকার থেকে আগত সকল যাত্রীবাহী বিমানের অস্ট্রিয়ায় অবতরণের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন।

সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে,জার্মানি ২২শে ডিসেম্বর থেকে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে আগত বিমানের অবতরণ নিষিদ্ধ করলে জার্মানির লুফথানসার বেশিরভাগ যাত্রী কেপটাউন থেকে বিকল্প পথ হিসাবে অস্ট্রিয়ান এয়ারলাইন্সে কেপটাউন-ভিয়েনা রুটে বুকিংয়ের হিরিক পড়ে যায়। পরবর্তীতে অস্ট্রিয়ান সরকারের নজরে আসলে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

অস্ট্রিয়ান সরকারের উদ্ধৃতি দিয়ে সংবাদ মাধ্যমে বলা হয়েছে যে,রূপান্তরিত করোনার ভাইরাসের উপস্থিতির কারণে, দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে আসা বিমানগুলিকে বুধবার ৩০ ডিসেম্বর থেকে ১০ জানুয়ারী পর্যন্ত অস্ট্রিয়ায় অবতরণ করার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। উল্লেখ্য যে,ইংল্যান্ডে করোনা রূপান্তরিত ভাইরাসের সনাক্তের পর অস্ট্রিয়া২২ ডিসেম্বর থেকে ১ জানুয়ারী পর্যন্ত বৃটেন থেকে আগত সকল বিমানের অবতরণ নিষিদ্ধ করেছে। তবে ইতিমধ্যেই গত এক সপ্তাহে বিকল্প পথে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে অনেক মানুষ অস্ট্রিয়া হয়ে জার্মানিতে প্রবেশ করেছে।

জার্মানির বিখ্যাত রাজনৈতিক ম্যাগাজিন “Der Spiegel” এর সোমবার সন্ধ্যায় অনলাইন প্রকাশনায় এই বিকল্প রুট সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ হলে জার্মানি ও অস্ট্রিয়ান সরকার নড়েচড়ে বসেন। গত এক সপ্তাহ যাবৎ এই বিকল্পে রুটে যারা অস্ট্রিয়া হয়ে জার্মানি প্রবেশ করেছেন তাদের ব্যাপারে খোঁজ খবর নেয়া হচ্ছে বলে জার্মানির সংবাদ মাধ্যমে বলা হয়েছে।

অস্ট্রিয়ান এয়ারলাইন্সের ওয়েবসাইট অনুসারে, নিষেধাজ্ঞা ঘোষণার পূর্বে অস্ট্রিয়ান এয়ারলাইন্সের একটি নির্ধারিত সিডিউল বিমান মঙ্গলবার ভিয়েনা থেকে কেপটাউনের উদ্দেশ্যে ছেড়ে গেছে। আগামীকাল সকালে দক্ষিণ আফ্রিকার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর থেকে একটি বিমানের প্রত্যাবর্তনের পরিকল্পনা করা হয়েছে। তবে পূর্বের মতোই নিষেধাজ্ঞার বাহিরে থাকছে কার্গো বিমান,জরুরী বিমান,অ্যাম্বুলেন্স ও উদ্ধারকারী বিমান, প্রত্যাবাসন ফ্লাইট বা রেন্ডিশন ফ্লাইটের পাশাপাশি সুরক্ষার বিধিগুলির সাথে সম্মতিতে মৌসুমী কর্মীদের পরিবহণের জন্য (কৃষি ও বনায়নের পাশাপাশি যত্ন ও স্বাস্থ্যকর্মীদের) জন্য বিমানের অবতরণনিষেধাজ্ঞার বাহিরে ।

উল্লেখ্য যে,নতুন রূপান্তরিত ভাইরাসটি যা প্রায় দশদিন পূর্বে ব্রিটেনে প্রথম সনাক্ত হয়েছিল,তা খুবই দ্রুত যে কয়েকটি দেশে ছড়িয়ে পড়েছিল তার মধ্যে অন্যতম দক্ষিণ আফ্রিকা। যতটুকু জানা গেছে,এই রূপান্তরিত ভাইরাসটির সংক্রমণের বিস্তারের গতি পূর্বের করোনা ভাইরাসের চেয়ে ৭০% শতাংশ বেশী। এদিকে গতকাল দক্ষিণ আফ্রিকায় করোনার সংক্রমণ এক মিলিয়ন ছাড়িঁয়ে গেলে সরকার পুনরায় কিছু কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছেন।

দক্ষিণ আফ্রিকায় এই পর্যন্ত করোনায় মোট আক্রান্ত সনাক্ত হয়েছেন ১০ লক্ষ ১১ হাজার ৮৭১ জন এবং এই পর্যন্ত মোট মৃত্যুবরণ করেছেন ২৭,০৭১ জন। দক্ষিণ অস্ট্রিয়ায় প্রচুর বাংলাদেশী বসবাস করেন। সংবাদ মাধ্যমের খবর অনুযায়ী কয়েক শতাধিক বাংলাদেশী করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন এবং প্রায় ১০ জনের মতো মৃত্যুবরণ করেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit exceeded. Please complete the captcha once again.

Translate »