ভোলায় শীতের অতিথি পাখি; মুখরিত পরিবেশ

শীতের পাখি

 

সাব্বির আলম বাবু, ভোলা: প্রতি বছরে শীতের শুরুতেই দ্বীপ জেলা ভোলায় আগমন ঘটে অতিথি পাখিদের। পাখির কলকাকলীতে মুখরিত হয়ে উঠে দক্ষিণের সাগর উপকূল। হাজার হাজার মাইল দুর থেকে এসব অতিথি পাখি খাদ্যের সন্ধানে এবং অতি শীত থেকে বাঁচার জন্য বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে আসে। পাখি বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ নেচার কনজারভেশন কমিটি (এনসিসি)’র চেয়ারম্যান সাজাহান সরদার ইউরোবাংলা টাইমসকে জানান, বাংলাদেশে আসা অতিথি পাখির প্রায় ৬০ ভাগ পাখি দ্বীপ জেলা ভোলায় আসে। ভোলার দক্ষিণের বিচ্ছিন্ন চরগুলোতে এরা খাদ্যের সন্ধানে ও নিরাপদ আবাস হিসেবে অবস্থান নেয়। এর মধ্যে ২৮ প্রকার জলচর পাখিসহ প্রায় ৫০ প্রজাতির অতিথি পাখির সন্ধান পাওয়া গেছে ভোলার চরাঞ্চলে। একই প্রজাতির কমন শেল ডাক রাজমনি হাঁসের দেড় লাখের একটি সর্বোচ্চ ঝাঁক এই জেলার চারপাশেই দেখা মেলে।

ভোলা

এবছরও শীতের শুরুতে ভোলার দক্ষিণের চরে অতিথি পাখির আগমন ঘটলেও তা এক দশকের তুলনায় তা কমেছে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে অতিথি পাখির আগমন আগের চেয়ে কমেছে বরে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। এক দশক আগেও দক্ষিণের ঢালচর, কুকরী মুকরী, চর শাহজালাল, ভাষানচর, পূবেরচর, চরনিজাম, নিঝুম দ্বীপসহ ভোলার অর্ধশতাধিক চরচরাঞ্চল লাখো অতিথি পাখির নিরাপদ নিবাস হিসেবে পরিচিত ছিল। অতিথি পাখির অবাধ বিচরণ ও খাদ্যের জন্য উপযোগী ভোলার পলী বিধৌত সাগর উপকূল। এনসিসির চেয়ারম্যান সাজাহান সরদারও অতিথি পাখি কমে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, প্রতি বছরই কমে যাচ্ছে ভোলায় অতিথি পাখি আগমনের সংখ্যা। ভোলায় সাড়ে ৩ লাখ পর্যন্ত অতিথি পাখি তাদের শুমারীতে পাওয়া গেছে। গত বছরও ২ লাখের উপর অতিথি পাখি পাওয়া যায়নি। জলবায়ু পরিবর্তনই এর মূল কারণ বলে তিনি জানান। এছাড়া অতিথি পাখির বিচরণ ক্ষেত্রে প্রতিকূল পরিবেশ সৃষ্টি হওয়ায় পাখির বিচরণে বাধা সৃষ্টি হচ্ছে। ক্রমশ জায়গা দখল, জমি চাষ ও মানুষের বিচরণ বেড়ে যাওয়ায় অতিথি পাখি ক্রমশ কমে যাচ্ছে। ঢালচরের বাসিন্ধা আলমগীর জানান, কয়েকবারের ঘূর্ণিঝড়ের পর থেকে চর এলাকাগুলোতে অতিথি পাখির সংখ্যা কমে গেছে। এক শ্রেণীর পাখি শিকারীর কারণেও অতিথি পাখি হুমকির মুখে। এ অবস্থায় অতিথি পাখির অবাধ নিবাস নিশ্চিত করতে স্থানীয় বাসিন্ধাদের সচেতনতা সৃষ্টি প্রয়োজন বলে মনে করেন পাখি প্রেমিকরা।

প্রতিবছর এনসিসি’র আয়োজনে ভোলায় পাখি বরণ উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। উৎসবের লক্ষ্য নির্বিশেষে পাখির পক্ষে জনমত সংগঠিত করা। স্থানীয়দের মধ্যে জলজ ও বনবাসী পাখির জীবন ও আবাস, প্রজনন ও খাদ্যাঞ্চল রক্ষার আবেদন ছড়িয়ে দেওয়া।

সাব্বির/ভোলা/আরএন/২১.১২

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit exceeded. Please complete the captcha once again.

Translate »